চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে ভারতের অসহায় আত্মসমর্পণ!

প্রকাশিত: ১০:১০ অপরাহ্ণ, জুন ১৮, ২০১৭

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের কাছে ভারতের অসহায় আত্মসমর্পণ!

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপা জয় করেছে পাকিস্তান। আজ রোববার ফাইনালে তারা ভারতকে ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত করে প্রথমবারের মতো আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জয় করলো। পাকিস্তানের করা ৪ উইকেটে ৩৩৮ রানের জবাবে ভারত মাত্র ১৫৮ রানে অল আউট হয়ে যায়, ৩০.৩ ওভারে।
আজ ব্যাট-বল সব বিভাগে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে শিরোপা জয় করেছে পাকিস্তান। টস জয় ছাড়া একটি বারের জন্যও ম্যাচে নিজেদের প্রাধান্য তুলে ধরতে পারেনি ভারত।
উদীয়মান প্রতিভা ফখর জামানের সেঞ্চুরির পর মোহাম্মদ আমিরদের তাণ্ডবে অসহায় হয়ে পড়ে ভারত।
আমির খান নিয়েছেন ৩ উইকেট। এছাড়া হাসান আলীও নিয়েছেন ৩টি উইকেট। শাদাব খান ২টি এবং জুনায়েদ খান ১টি উইকেট নিয়েছেন। একেবারে শুরুতেই রোহিত শর্মাকে বিদায় করে ভারতকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন আমির। এরপর বিরাট কোহলি এবং শিখর ধাওয়ানকে বিদায় করে ম্যাচে পাকিস্তানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।
এর আগে জামানের সেঞ্চুরিতে ভারতকে জয়ের জন্য ৩৩৯ রানের বড় টার্গেট দিয়েছে পাকিস্তান
ওপেনার ফখর জামানের সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডের ওভালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অষ্টম আসরের ফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের সামনে জয়ের জন্য ৩৩৯ রানের বড় টার্গেট দিয়েছে পাকিস্তান। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৩৩৮ রান করে পাকিস্তান। দলের পক্ষে জামান ১১৪, আজহার আলী ৫৯ ও মোহাম্মদ হাফিজ অপরাজিত ৫৭ রান করেন।
টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্বান্ত নেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বল হাতে শুরুটা ভালোই করেন এবারে আসরে ভারতের সেরা বোলার পেসার ভুবেনশ্বর কুমার। প্রথম ওভারেই মেডেন নেন তিনি। ভুবির বোলিং-এ উজ্জীবিত হয়ে উঠেন অন্য প্রান্তে আক্রমণে আসা পেসার জসপ্রিত বুমরাহ। তাই নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই পাকিস্তানের ওপেনার ফকর জামানকে তুলে নেন বুমরাহ। কিন্তু থার্ড আম্পায়ারের সহায়তা নিয়ে বুমরাহ’র ডেলিভারিটি ‘নো’ ডাকেন অনফিল্ড আম্পায়ার। তাই ব্যক্তিগত ৩ রানেই নিশ্চিতভাবে জীবন পেয়ে যান জামান।
জীবন পেয়ে আরেক ওপেনার আজহার আলীকে নিয়ে ভারতীয় বোলারদের উপর চড়ে বসেন জামান। মারমুখী মেজাজ থেকে নিজেকে বিরত রেখে কিছুটা সর্তক ছিলেন জামান। তবে রানের চাকা দ্রুত গতিতে ছুটিয়েছেন আজহার। তাই ১৮তম ওভার শেষে ১০০ রানে পৌঁছে যায় পাকিস্তান। এসময় আজহার ৪৬ ও জামান ৪১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এরপর দলীয় ১২৮ রানে ভেঙ্গে যায় এই জুটি। রান আউটের ফাঁেদ পড়ে আউট হন আজহার। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৭১ বলে ৫৯ রান করে বিদায় নেন আজহার। আউট হবার আগে জামানকে নিয়ে আইসিসির ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে উদ্বোধণী জুটিতে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েন আজহার। এই জুটি হতো না, ঐ নো-বলের পরও রান আউটের অনেক সুযোগ মিস করেছে ভারতের ফিল্ডাররা। সেই সুযোগটি ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার।
দ্বিতীয় উইকেটে বড় জুটি পেয়েছে পাকিস্তান। জামানের সাথে ৬১ বলে ৭২ রানের জুটি গড়েন বাবর আজম। এরমাঝে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ পান এবারের আসরের গ্রুপ পর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া জামান। ভারতের মিডিয়াম পেসার হার্ডিক পান্ডের বলে আউট হবার আগে ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১০৬ বলে ১১৪ রান করেন জামান।
জামানকে ফিরিয়ে দেয়ার পর পাকিস্তানের রানের লাগাম টেনে আনার পরিকল্পনা করে ভারতের বোলাররা। তাতে সাফল্য পাবার পথ দেখান ভুবেনশ্বর। চার নম্বরে নামা শোয়েব মালিককে ১২ রানের বেশি করতে দেননি ভুবি। ১৬ বলে ১২ রান করেন মালিক। ৪০তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ২৪৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় পাকিস্তান। এঅবস্থায় রানের চূড়ায় উঠার স্বপ্ন দেখছিলো পাকিস্তান।
পাকিস্তানের সেই স্বপ্নে ধাক্কা দেন বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে আক্রমণে এনে ইনিংসের চিত্র পাল্টে দেয়া ভারতের অকেশনাল অফ-স্পিনার কেদার যাদব। ৫২ বলে ৪৬ রান করা বাবরকে শিকার করেন তিনি। এতে ৩শ’র মধ্যে পাকিস্তানকে আটকে রাখার অসম্ভব চিন্তা করে ভারত। কিন্তু সেটি হতে দেননি মোহাম্মদ হাফিজ ও ইমাদ ওয়াসিম।
পঞ্চম উইকেটে ৪৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রান যোগ করেন হাফিজ-ওয়াসিম। ফলে ৪ উইকেটে ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩২তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ৫৭ রানে অপরাজিত থাকেন হাফিজ। তার ৩৭ বলের ইনিংসে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো। অন্যপ্রান্তে ১টি করে চার ও ছক্কায় ২১ বলে অপরাজিত ২৫ রান করেন ওয়াসিম। ভারতের ভুবেনশ্বর, পান্ডে ও কেদার ১টি করে উইকেট নেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট