কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, প্রধান আসামি ফজর আলী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৯, ২০২৫

কুমিল্লায় প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ, প্রধান আসামি ফজর আলী গ্রেপ্তার

কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলায় ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রবিবার (২৯ জুন) ভোরে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এর আগে নারীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিবার গভীর রাতে জেলা পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামের ফজর আলী একজন প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের হাতে আটকের পর মারধরের শিকার হন তিনি। পরে আহত ফজর আলী সেখান থেকে পালিয়ে গেলে উপস্থিত কিছু লোক ভুক্তভোগী নারীর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

সংবাদ পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করে। ভিকটিমের লিখিত এজাহারের ভিত্তিতে মুরাদনগর থানায় নারী ও শিশুনির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়।

মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই নারীর জানায়, প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামে এক ব্যক্তি তার বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় দরজা খুলতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন।

ওই নারী বলেন, টাকা ধার নেওয়া নিয়ে ফজর আলীর সঙ্গে তাদের পরিবারের পরিচয় ঘটে। এ সূত্র ধরেই ফজর আলী বাড়িতে প্রবেশ করে।

ওই নারীর পাশের বাড়ির এক সদস্য বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অনেক শব্দ হচ্ছিল। আমি ভয়ে দৌড়ে গিয়ে লোকজন ডেকে নিয়ে আসি। লোকজন গিয়ে দেখেন দরজা ভাঙা। পরে আমরা ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করি।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) রাশেদুল হক চৌধুরী রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গণমাধ্যমকে জানান,গ্রেফতারের সময় স্থানীয়দের হাতে আটক হয়ে বেদম প্রহারের শিকার হন ফজর আলী। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি পালিয়ে আত্মগোপনের চেষ্টা করছিলেন। সায়েদাবাদ থেকে তাকে আটক করে কুমিল্লায় আনা হয় এবং বর্তমানে তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হওয়ার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

গ্রেপ্তার অপর চারজনকে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে তারা সরাসরি জড়িত বলে পুলিশের প্রাথমিক ধারণা।

ধর্ষণের শিকার নারীকে উদ্ধার করতে আসা লোকজন কেন ভুক্তভোগী নারীকে মারধর, গালিগালাজ করলেন কিংবা নগ্ন করে ভিডিও ধারণ করলেন, এসব বিষয়ে কিছু জানতে পেরেছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে এএসপি রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছি। এখনো তেমন কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে পুরো বিষয়গুলো নিয়েই আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে বিস্তারিত জানাতে পারব।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লার মুরাদনগরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসা এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ফজর আলী নামে (৩৮) এক যুবকের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের বাহেরচর পাঁচকিত্তা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়। শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে এ ঘটনায় ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় ধর্ষণ মামলা করেছেন। তার স্বামী দুবাই প্রবাসী। তিনি দুই সন্তানের মা।

এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ভিডিও ভাইরাল করার দায়ে চারজনকে এবং ঘটনার মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে গ্রেফতার করে কুমিল্লায় নেয় পুলিশ।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট