কমলগঞ্জে নিখোঁজের ১দিন পর খন্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২৫

কমলগঞ্জে নিখোঁজের ১দিন পর খন্ডিত মৃতদেহ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ইকবাল হোসেন (৩০) নামে এক যুবকের খন্ডিত মৃতদেহ রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার বিকেল থেকে ইকবাল হোসেন নিখোঁজ ছিলেন। তবে পরিবারের দাবী শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রেল লাইনের ওপর মৃতদেহ রেখে গেছে।

নিহত ইকবাল হোসেন উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বরচেগ গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার ছেলে। মরদেহ নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য। এই ঘটনার পর থেকে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ, জিআরপি পুলিশ ও পিবিআই তদন্তের জন্য মাঠে নেমেছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেইটের পাশ থেকে খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেইটের পাশে স্থানীয়রা কয়েক খন্ডে খন্ডিত লাশ দেখতে পান। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইকবালের পরিবার এসে লাশটি শনাক্ত করেন।

ঘটনাস্থল থেকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিহতের হাত-পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নিহত ইকবালের পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ইকবাল কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামে শ্বশুর বাড়ীতে বেড়াতে যায়। শ্বশুর বাড়ীর লোকজন বলছে সেখান থেকে পরদিন শনিবার বিকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। প্রথমে মোবাইলে কল ঢুকলেও পরে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ইকবালের সন্ধান চেয়ে ছবিসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে। এছাড়াও শ্বশুর ও ইকবালের বাবা কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ইকবালের মরদেহ পাওয়ার পর উভয় পরিবারের লোকজন ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিযোগ করছেন। রেললাইন থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের চেহারা এবং জিডি করা নিখোঁজ ইকবালের ছবির সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

নিহত ইকবালের স্ত্রী রিমা (২৫) বলেন, আমার স্বামী স্বাভাবিক ভাবে শনিবার আমাদের বাড়ি থেকে উনার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছেন। ৬ মাস হয়েছে আমাদের বিয়ে হয়। ৩ মাসের বাচ্চা আমার পেটে। স্বামীর সাথে আমার কোনো ধরনের মন-মালিন্য হয়নি। আমরা শুধু স্বামী স্ত্রী ছিলাম না ভালো বন্ধু ছিলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী ট্রেনের নিচে পড়ে আত্নহত্যা করতে পারেন না। এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আমি স্বামী হত্যার সুষ্ট বিচার চাই।

নিহত ইকবালের বাবা মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। সঠিক তদন্তের মধ্যমে যেন তা বের হয়ে আসে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর রোববার সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘গতকাল শনিবার নিহত ইকবালের বাবা ও তার শ্বশুর থানায় এসে জিডি করে গেছেন। যে শনিবার বিকেল থেকে তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।’

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার করেছি। মৃতদেহ থেকে হাত-পা সহ পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর জানা যাবে।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট