১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:১০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২৫
সিলেটে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারের ওরসকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হলো লাকড়ি তোড়া উৎসব। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) এ উৎসবে অংশ নেন হাজারো ভক্ত।
বিপুল সংখ্যক ভক্ত অনুরাগী ভক্তিমূলক গান ও বাদ্যযন্ত্রের সুরে মুখরিত করে তোলেন মাজার প্রাঙ্গন থেকে লাকড়ি সংগ্রহের টিলা পর্যন্ত। ঐতিহ্য অনুযায়ী ওরসের তিন সপ্তাহ আগে লাকড়ি সংগ্রহ করা হয়, যা লাকড়ি তোড়া উৎসব নামে পরিচিত। সংগৃহীত লাকড়িগুলো দরগাহ শরীফের নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করা হয় এবং ওরস উপলক্ষে সেই লাকড়ি দিয়েই রান্না হয় তবারুক, যা হাজার হাজার ভক্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কারও পরনে ছিল লাল জামা, কারও মাথায় লাল পট্টি। হাতে ছিল লাল পতাকা আর লম্বা দা বা তরবারি। জুমার নামাজের পর দরগা প্রাঙ্গণে বেজে ওঠে ‘নাকাড়া’—এক বিশেষ ধ্বনি, যা শতাব্দী পুরনো এক আধ্যাত্মিক ডাকে রূপ নিয়েছে। সেই মুহূর্তেই সমস্বরে উচ্চারিত হয়, “শাহজালাল বাবা কি জয়!” এবং সেই ধ্বনির সঙ্গেই হাজার হাজার ভক্ত পায়ে হেঁটে রওনা হন শহরতলির লাক্কাতুড়া চা-বাগানের নির্দিষ্ট টিলার দিকে।
সেখানে গিয়ে তাঁরা কাঠ সংগ্রহ করেন যা পরবর্তীতে শাহজালাল (রহ.)-এর ওরসে রান্নার শিরনিতে ব্যবহার হবে জ্বালানি হিসেবে। বহু প্রজন্ম ধরে এভাবেই পালিত হয়ে আসছে ‘লাকড়ি তোড়া’, যা অনেকেই ‘সিলেট বিজয় দিবস’ বলেও উদযাপন করেন।
মৌলভীবাজার থেকে আসা আব্দুল খালেক নামের এক ভক্ত বলেন, “আমি গত দশ বছর ধরে এই উৎসবে অংশ নিচ্ছি। আমার বিশ্বাস, এই লাকড়ি তোলা শুধু ঐতিহ্য নয়, এটা আমাদের ভালোবাসা ও সম্মান প্রকাশের একটি উপায় শাহজালাল (রহ.)-এর প্রতি।”
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে আসা খাদিজা বেগম বলেন, “এই দিনটার জন্য আমরা সারাবছর অপেক্ষা করি। এখানে এসে আত্মা শান্তি পায়, এই জমায়েতে যেন আধ্যাত্মিক শক্তি ভর করে। একসঙ্গে সবাই লাকড়ি তুলি, আল্লাহর ওলির জন্য কিছু করতে পারার অনুভূতিটাই আলাদা।”
শুধু সাধারণ ভক্তই নয়, বাউল সংগঠন, খানকা শরিফ ও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে আসা মানুষজনও এই উৎসবে যোগ দেন। কেউ নাচ-গান করে, কেউ গজল পাঠ করে, আবার কেউ নীরবে ভক্তিভরে অংশ নেন এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে।
উৎসবটি কেবল এক আধ্যাত্মিক স্মরণ নয় এটি এক ঐতিহাসিক দিনও। জানা যায়, প্রায় ৭০০ বছর আগে ঠিক ২৬ শাওয়াল দিনেই হজরত শাহজালাল (রহ.) তাঁর ৩৬০ আউলিয়াসহ সিলেটে পদার্পণ করেন এবং হিন্দু শাসক গৌড় গোবিন্দকে পরাজিত করে ইসলামের বিজয় ঘটান। সেই দিনটির স্মরণেই এই লাকড়ি তোড়া উৎসব শুরু হয় এবং আজও তা জীবন্ত ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D