এইচএসসি’র ফল প্রকাশ, সিলেটে পাসের হার ৮৫.৩৯ শতাংশ

প্রকাশিত: ৫:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২৪

এইচএসসি’র ফল প্রকাশ, সিলেটে পাসের হার ৮৫.৩৯ শতাংশ

এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে চমক দেখিয়েছে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। বোর্ডে এ বছর পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, যা সাধারণ ৯টি শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় সিলেট বোর্ডে পাসের হার ছিল ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ। সেই হিসাবে এবার পাসের হার প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। এবছর রেকর্ড ৬ হাজার ৬৯৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলে ১ হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে সব সূচকে এগিয়ে আছে মেয়েরা। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) এইচএসসি ও সমমানের প্রকাশিত ফলাফলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে বেলা ১১টার দিকে ফল প্রকাশ করেন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: জাকির আহমদ। পরে বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন চন্দ্র পাল।

ফলাফলে দেখা যায়, সিলেট বোর্ডের অধীনে এইচএসসির ফলাফলে সব সূচকে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছেন মেয়েরা। এবার ৪৯ হাজার ৩৫৪ ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৪২ হাজার ৬৬১ জন। পাসের হার ৮৬ দশমিক শূন্য ৪৪। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৮২৯ জন। এদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৮৩ দশমিক ৮৫। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৩৩ হাজার ৮১১ জন ছাত্র। এর মধ্যে পাস করেছেন ২৮ হাজার ৩৫১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৮৬৯ জন।

এছাড়াও গত বছরের তুলনায় সিলেটে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিই বেড়েছে। এবার সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৩৯। যা গত বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেশি। গত বছর পাসের হার ছিল ৭১ দশমিক ৬২। গত কয়েকবছর সিলেটে জিপিএ কম থাকলেও এবছর রেকর্ড ৬ হাজার ৬৯৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। গত বছর জিপিএ-৫ পেয়েছিলে ১ হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় ৮৩ হাজার ১৫৬ জন অংশ নিয়ে ৭১ হাজার ১২জন পাশ হয়েছে।

এদিকে একই সময়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে সবকটি বোর্ডের ফলাফলের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার।

প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, পাসের হারে এ বছর শীর্ষে থাকা সিলেট বোর্ডের পরেই রয়েছে বরিশাল বোর্ড। বরিশালে পাসের হার ৮১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তার কাছাকাছি অবস্থানে রাজশাহী বোর্ডও। রাজশাহীতে পাসের হার ৮১ দশমিক ২৪ শতাংশ।

পাসের হারে এরপর পর্যায়ক্রমে রয়েছে ঢাকা বোর্ড ৭৯ দশমিক ২১ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭১ দশমিক ১৫ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৭০ দশমিক ৩২ শতাংশ, যশোরে ৬৪ দশমিক ২৯ শতাংশ।

এদিকে, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদরাসা ও কারিগরি মিলিয়ে ১১টি বোর্ডের হিসাবে পাসের হারে সবচেয়ে এগিয়ে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। এ বছর এ বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষায় পাসের হার ৯৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এরপরই অবস্থান করছে কারিগরি বোর্ড, সেখানে পাসের হার ৮৮ দশমিক ০৯ শতাংশ।

গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। এতে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। প্রথম প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী- ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ১১ আগস্ট থেকে নতুন সময়সূচিতে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্থগিত পরীক্ষাগুলো না নিতে আন্দোলনে নামেন একদল পরীক্ষার্থী।

তাদের দাবি ছিল, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরীক্ষা বন্ধ থাকার বিষয়টি তাদের মানসিক চাপে ফেলেছে। তাই অবশিষ্ট পরীক্ষাগুলো বাতিল করতে হবে। একপর্যায়ে পরীক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করা হয়।

বাতিল পরীক্ষাগুলোতে এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এইচএসসিতেও একই নম্বর দিয়ে ফল তৈরি করেছে শিক্ষা বোর্ড। তাছাড়া বিভাগ ও বিষয়ে মিল না থাকলে সেক্ষেত্রে সাবজেক্ট ম্যাপিং নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট