৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৫:৩২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৩, ২০২৪
সুনামগঞ্জের ছাতকে সিংচাপইড় ইউনিয়নের গহরপুর গ্রামের জিয়াউর রহমান হত্যা মামলার বাদী নিহতের সৎ ভাই তাজিজুর রহমানের অতি উৎসাহী আচরণ এবং সন্দেহভাজনদের সঙ্গে সখ্যতার অভিযোগ ওঠেছে। এ কারণে স্বামী হত্যার বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহতের স্ত্রী রানু বেগম।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে রানু বেগম বলেন, ‘গত ৮ সেপ্টেবর সিলেট শহরে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন স্বামী জিয়াউর রহমান (৫৪)। গত ১০ সেপ্টেম্বর পাশের মহদী গ্রামের খাল থেকে তার বস্তাবন্দী মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর লাশটি জিয়াউর রহমানের বলে সনাক্ত করেন তারা। লাশের মুখ বিকৃত, গলায় কাপড় দিয়ে ফাঁস লাগানো, হাতপা বাধা ও আঘাতের চিহ্ন ছিল। ওই সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন মোহাম্মদ সাহেলসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
রানু জানান তারা যখন শোকে মুহ্যমান ওই দিন রাতে কাউকে না জানিয়ে তার স্বামীর সৎভাই তাজিজুর রহমান অজ্ঞাতনামা আসামি করে ছাতক থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি ও তার ছেলে সালমান ছাড়াও স্বাক্ষি রাখা হয় মহদী গ্রামের প্রনব সূত্রধর, একই গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছ, জিলু মিয়া, গহরপুর গ্রামের লক্ষন দত্তকে। অথচ সাক্ষি কাউকে অবগত করেননি বাদি। লাশ উদ্ধারের সময়ও তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না, এমনকি ১০ বছর ধরে অন্য গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করছেন। বাড়ির সাথে কোনো যোগাযোগও নেই। বাড়িতে তিনি ও তার ছেলে এবং স্বামীর আপন ভাই মুজিবুর রহমান থাকার পরও কাউকে না জানিয়ে অতিউৎসাহী মামলা করেন তাজিজুর। মামলার পর তার আচরণ ও সন্দেহভাজনদের সাথে চলাফেরার বিষয়টি তাদের দৃষ্টিগোচর হয়। এমনকি পুলিশ জড়িতদের সনাক্তের চেয়ে নিহতের পরিবারের সদস্যদের বার বার জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বাদি পুলিশকে পারিবারিক বিরোধের ভুল তথ্য দিচ্ছেন।
এজাহারে নানা তথ্য বিভ্রাট ও অসঙ্গতি রয়েছে রানু জানান এজাহারে নিহতের পরিবারের যে উদৃতি দেওয়া হয়েছে তা মিথ্যে। কারণ বাদি ঘটনাস্থলেই ছিলেন না। লাশ সনাক্ত হয় বেলা ২টা থেকে বিকাল ৩টার দিকে আর এজাহারে উল্লেখ করা হয় সকাল ১০টার কথা। প্রশ্ন হচ্ছে বাদি ঘটনাস্থলে থাকলে এজাহারে সঠিক তথ্য দিতে পারেননি কেন?
খুনের সাথে সন্দেহভাজনদের বিষয়টি উল্লেখ করে রানু জানান, গহরপুর গ্রামের লন্ডন প্রবাসী তাজ উদ্দিনের সাথে তার স্বামী পূর্ব বিরোধ ছিল। ১০-১২ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তাজ উদ্দিন দেশ ছেড়ে যান। সম্প্রতি দেশে ফেরার পর তার স্বামী হত্যাকান্ডের শিকার হন। তিনি খুন হওয়ার আগের দিন তাজ উদ্দিন তাকে (জিয়া) দোকান থেকে ডেকে নিয়েছিলেন। খুনের পর বাদির সাথে তাজ উদ্দিনের যোগাযোগ দেখা গেছে। গোষ্টিগত যাদের সাথে বিরোধ তাদের সাথেও বাদির যোগাযোগ রয়েছে। এ অবস্থায় ঘটনার দুই দিন পর তিনি বাদি হয়ে তাজ উদ্দিন ও মামলার বাদিসহ গ্রামের জয়নাল আবেদিন, রাজু মিয়া, গৌছ উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে সুনামগঞ্জ আমল গ্রহনকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দরখাস্ত করেন। একই ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার কারনে পুলিশকে প্রতিবেদনের নির্দেশ দেন এবং জবানবন্দি রেকর্ড করেন আদালত। মামলার খবর পেয়ে ইতোমধ্যে তাজ উদ্দিন দেশ ছেড়ে গিয়েছেন বলে জানান রানু।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘হত্যার পেছনে যাদের হাত রয়েছে বলে আমরা সন্দেহ করেছি তাদেরকে নিয়েই আমার সৎ দেবর তাজিজুর মামলাটি করেছেন। মামলার পর থেকে তার আচরণও সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে।’
মামলার বাদী পরিবর্তন এবং কোনো গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে তদন্তের দাবি জানান জিয়াউর রহমানের স্ত্রী রানু বেগম। তিনি বলেন, ‘অন্যথায় হত্যার সঙ্গে জড়িতরা পার পেয়ে যাবে। আমরা সঠিক বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবো।’
জিয়াউর রহমানের স্ত্রীর অভিযোগ, ‘হত্যাকান্ডের মূল হোতাদের রক্ষা করতেই তাজিজুর তাড়াহুড়া করে মামলা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গহরপুর গ্রামের লন্ডন প্রবাসী তাজ উদ্দিনের সাথে আমার স্বামীর পূর্ব বিরোধ ছিল। বছরখানেক আগে তাজ উদ্দীনের লোকজন একটি মামলায় আমাদের গোষ্ঠী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আমার স্বামীকে স্বাক্ষী হিসেবে রাখা হয়। কিন্তু পরিবারের বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। সেই মামলার রায় তাজ উদ্দিনের বিপক্ষে যায়। এরপর থেকে তাজ উদ্দিন আমার স্বামীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।’
বাদী তাজিজুর রহমানের সঙ্গে তাজ উদ্দিনের নিয়মিত যোগাযোগের অভিযোগ করে বিচার পাওয়া শঙ্কা প্রকাশ করেন রানু বেগম। তিনি জানান, এ কারণে তিনি নিজে বাদী হয়ে তাজ উদ্দিন ও তাজিজুর রহমান, গ্রামের জয়নাল আবেদিন, রাজু মিয়া, গৌছ উদ্দিনকে অভিযুক্ত করে সুনামগঞ্জ আমল গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দরখাস্ত করেছেন। আদালত একই ঘটনায় থানায় মামলা থাকার কারণে পুলিশকে প্রতিবেদনের নির্দেশ দেন এবং আমার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
স্বামীর প্রকৃত খুনিদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার এবং সুবিচার নিশ্চিত করতে তিনি সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও সুনামগহ্জের পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন পাশাপাশি বাদি পরিবর্তন করে কোনো গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে মামলাটি তদন্তের দাবি জানান।
রানুর পক্ষে লিখিত বক্তব্য দেন ছেলে সালমান আহমদ। এ সময় মামলার দুই সাক্ষি মহদী গ্রামের জিলু মিয়া ও গহরপুর গ্রামের লক্ষন দত্ত উপস্থিত ছিলেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D