মরমী কবি হাসন রাজার ১০৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ৯:১৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

মরমী কবি হাসন রাজার ১০৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Manual6 Ad Code

আজ শনিবার (৬ ডিসেম্বর) মরমী সাধক হাসন রাজার ১০৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯২২ সালের ৬ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন হাসন রাজা। হাসন রাজার গবেষণা-সাধনা ও শিল্পকর্ম ছিল গণকল্যাণমুখী, তিনি বিখ্যাত জমিদার ছিলেন, আবার সুরের সাধকও ছিলেন। মরমি এই কবি নিজের সৃষ্টিকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দাঁড় করিয়ে গেছেন। মরমী কবি হাসন রাজার গান ও দর্শনে মিশে আছে বাংলার মাটি ও মানুষের ঘ্রাণ। যার সাথে পরিচিত না হয়ে পারা যায় না।

মরমী সাধক হাসন রাজার গানে সহজ সরল স্বাভাবিক ভাষায় মানবতার চিরন্তন বাণী যেমন উচ্চারিত হয়েছিল তেমনি আধ্যাত্মিক কবিও ছিলেন তিনি।

Manual2 Ad Code

কবিগুরু হাসন রাজাকে মূল্যয়ন করতে গিয়ে উল্লেখ করেন, ‘পূর্ব বঙ্গের একটি গ্রাম্য কবির গানে দর্শনের একটি বড় তত্ত্ব পাই। সেটি এই যে, ব্যক্তি স্বরূপের সহিত সম্মন্ধ সূত্রেই বিশ্বসত্য।’ ১৯২৫ সালে দর্শন কংগ্রেসের সভায় ও পরবর্তীকালে লন্ডন হিবার্ট বক্তৃতায় কবিগুরু হাসন রাজা সম্পর্কে এই বক্তব্য প্রদান করেন ।

হাসন রাজার গানের বিচিত্রতা লক্ষ্যণীয়। তিনি লিখেছেন প্রেমের গান- জাগতিক প্রেম, আধ্যাতিক প্রেম, জগৎ সংসারের প্রেম ইত্যাদি। তারপরে তার গানের প্রধান বিষয়বস্তুটা অনেকটা এরকম যে, এই পৃথিবীতে মানুষের আগমন একটা স্বল্প সময়ের মাত্র। এখানে কেউই চিরস্থায়ী নয়। মানবিক বোধকে তিনি উচ্চ স্তরে স্থান দিয়েছেন যেখানে মমত্ব, ভ্রাতৃত্ব, সংহতি এবং সহনশীলতাবোধের গভীর দিকদর্শন রয়েছে। সকল ধর্মের বিভেদ অতিক্রম করে তিনি গেয়েছেন মাটি ও মানুষের গান। লক্ষণশ্রীতে ১৮৫৪ সালের ২১ ডিসেম্বর (৭ পৌষ ১২৬১) হাসন রাজার জন্ম হয়।

হাছন রাজার পিতার নাম দেওয়ান আলী রাজা চৌধুরী ছিলেন প্রতাপশালী জমিদার। হাসন রাজা তাঁর তৃতীয় পুত্র। মাতার নাম ছিল হুরমত বিবি। পিতা ও মাতা উভয়ের কাছ থেকে পাওয়া সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষণশ্রী আর সিলেটের একাংশ নিয়ে বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন মরমী কবি হাসন রাজা। জাতীয় অধ্যাপক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফের মতে, তিনি প্রায় ৫ লক্ষ ২৭ হাজার বিঘা জুড়ে জমির অধিকারী ছিলেন। সিলেট ও সুনামগঞ্জের উল্লেখযোগ্য পরগণা: (পরগণা= এখনকার তিন থেকে চারটি ইউনিয়নের সমান প্রায়) লক্ষণশ্রী (বর্তমান সুনামগঞ্জ শহর ও আসেপাশের কয়েকটি এলাকা) মহারাম, অচিন্তপুর, লাউড়, পাগলা, পলাশ, বেতাল, চামতলা, কৌড়িয়া, কুরুয়া ইত্যাদি পরগণা। ১৮৬৯ সালে তার পিতা আলি রেজার মৃত্যুর চল্লিশ দিন পর তার বড় ভাই ওবায়দুর রেজা মারা যান। ভাগ্যের এমন বিড়ম্বনার স্বীকার হয়ে মাত্র ১৫ বছর বয়সে হাসন রাজা জমিদারীতে অভিষিক্ত হন।

Manual8 Ad Code

১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর রচিত ২০৬টি নিয়ে গানের একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। এই সংকলনটির নাম ছিল ‘হাসন উদাস’। এর বাইরে আর কিছু গান ‘হাসন রাজার তিনপুরুষ’ এবং ‘আল ইসলাহ্’ সহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। ধারণা করা হয়, তাঁর অনেক গান এখনো সিলেট-সুনামগঞ্জের লোকের মুখে মুখে আছে এবং বহু গান বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

Manual8 Ad Code

শহরের তেঘরিয়ার জন্মভিটায় হাসনরাজা মিউজিয়ামকে একটি পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়াম হিসাবে গড়ে তোলার দাবি পর্যটকসহ হাসনরাজা প্রেমিদের। একইভাবে তার সুরের বিকৃতিরোধেও কার্যকর উদ্যোগের দাবি ভক্তদের।

Manual2 Ad Code


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code