২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:২৬ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২৪
বাংলাদেশের প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী গত বছর ভ্রমণ বা কাজের ভিসায় যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন। সেখানে তারা গিয়ে বসবাসের জন্য আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৫ শতাংশের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। বাকি ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। আবেদন খারিজ হওয়া এসব আশ্রয়প্রার্থীকে এখন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ‘দ্রুত প্রত্যাবাসন’ (ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন) চুক্তির আওতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠাবে যুক্তরাজ্য। খবর দ্য টেলিগ্রাফের।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ‘ফেইলড বাংলাদেশি অ্যাসাইলাম সিকার্স টু বি ডিপোর্টেড আন্ডার নিউ ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্নস ডিল’ শীর্ষক প্রতিবেদনে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো সহজ করতে চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশের সঙ্গে এ নতুন চুক্তি করেছে যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সঙ্গে এ ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এর আগে লন্ডনে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক প্রথম যৌথ ইউকে-বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপে দুই পক্ষ রিটার্ন চুক্তির বিষয়ে সম্মত হয়। দুই দেশ পারস্পরিক অংশীদারত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয়ে সহযোগিতার ব্যাপারে জোরালো অঙ্গীকার করেছে।
এই চুক্তির আওতায় আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) আবেদন প্রত্যাখ্যান হওয়া বাংলাদেশিদের ‘ফাস্ট-ট্রাক’ (দ্রুত) পদ্ধতিতে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। এছাড়া যারা অপরাধী ও ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর বাড়তি সময় থাকছেন, তাদেরও ফেরত পাঠানো সহজ করবে এ চুক্তি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত বছর প্রায় ১১ হাজার বাংলাদেশি ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে ঢুকেছেন কেবল স্থায়ীভাবে থাকার উদ্দেশ্যে। সেখানে যাওয়ার পর তারা আশ্রয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন।
টেলিগ্রাফ বলছে, অভিবাসীরা গত বছরের মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী, কর্মী বা ভিজিটর ভিসায় যুক্তরাজ্যে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবি করেছেন। মূলত ব্রিটেনে প্রবেশের ‘পেছনের দরজা’ হিসাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে তারা এসব ভিসা ব্যবহার করেছেন। তবে বাংলাদেশিদের প্রাথমিক আশ্রয়ের আবেদনের মাত্র ৫ শতাংশই সফল হয়েছে। অর্থাৎ ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিকে যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো হবে।
এ অবস্থায় যুক্তরাজ্যের অবৈধ অভিবাসনবিষয়ক মন্ত্রী মাইকেল টমলিনসন বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ফাস্ট-ট্র্যাক রিটার্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
টমলিনসন বলেছেন, ‘অবৈধভাবে এখানে আসা বা থাকা বন্ধ করার জন্য অবৈধ অভিবাসীদের দেশে পাঠানোর কাজ ত্বরান্বিত করা আমাদের পরিকল্পনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বাংলাদেশ (যুক্তরাজ্যের) একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং আমরা তাদের সঙ্গে এই ইস্যুর পাশাপাশি অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্ক জোরদার করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের চুক্তিগুলো অবৈধ অভিবাসনের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে বলে আমরা ইতোমধ্যে স্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি। আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলোর আন্তর্জাতিক সমাধান প্রয়োজন এবং আমি সবার জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা তৈরি করতে বাংলাদেশ ও অন্য অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।’
টেলিগ্রাফ বলছে, ভিসা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (অন্য দেশের বাসিন্দাকে) যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি দেয়-সাধারণত সেটা মাত্র কয়েক মাস হতে পারে। কিন্তু যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর কেউ আশ্রয়ের আবেদন বা অ্যাসাইলাম দাবি করলে তার এখানে অনির্দিষ্টকালের জন্য থাকার সম্ভাবনা বেশি। কারণ কেউ এ ধরনের আবেদন করলে তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের হোম অফিস মানবাধিকার আইনসহ আরও অনেক ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়।
গত মাসে ফাঁস হওয়া এক নথিতে দেখা গেছে, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত রেকর্ড ২১ হাজার ৫২৫ জন ভিসাধারী যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। যা আগের বছরের তুলনায় ১৫৪ শতাংশ বেশি। এর অর্থ হচ্ছে ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে যাওয়া প্রতি ১৪০ জনের মধ্যে একজন আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন। অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেওয়ার পর গত এক দশকে ১০,২০০০ জনের বেশি আবেদনকারী যুক্তরাজ্যে থাকার জন্য আবেদন করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিসা নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের পর আশ্রয়ের আবেদনকারীদের মধ্যে সবার ওপরে রয়েছে পাকিস্তানিরা (প্রায় ১৭ হাজার ৪০০ জন)। এরপরই রয়েছে বাংলাদেশ (১১ হাজার), ভারত (৭ হাজার ৪০০), নাইজেরিয়া (৬ হাজার ৬০০) এবং আফগানিস্তানের (৬ হাজার) অবস্থান।
অবশ্য যুক্তরাজ্য থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ এবারই প্রথম নয়। গত বছর যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার নেই এমন ২৬ হাজার জনকে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ২০২২ সালের চেয়ে এ সংখ্যা ছিল ৭৪ শতাংশ বেশি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D