অস্থির সবজি বাজার, তেল-মুরগির দাম বাড়ছেই

প্রকাশিত: ১১:০৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৯, ২০২৩

অস্থির সবজি বাজার, তেল-মুরগির দাম বাড়ছেই

ভরা মৌসুমে সবজির এমন চড়া দাম আগে কখনো দেখা যায়নি। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমলেও নতুন আলুসহ শীতকালীন সবজি ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনার ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এরমধ্যে কোনোরকম ঘোষণা ছাড়াই বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সিলেট নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র।

বাজারে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৩ টাকায়। যা দুদিন আগেও ছিল ১৬৯ টাকা। একইভাবে দাম বেড়ে প্রতি দুই লিটার তেলের বোতল ৩৩৮ থেকে ৩৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঁচ লিটারের বোতলের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, হুট করেই কোম্পানিগুলো নতুন দামে তেল সরবরাহ শুরু করেছে। ভোক্তা পর্যায়ে যেমন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, একইভাবে বিক্রেতা পর্যায়েও তেলের মুনাফা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগে ৫ লিটার তেল বিক্রিতে ২০ টাকা মুনাফা ছিল, সেটা এখন অর্ধেক হয়েছে। সেদিক থেকে হিসাব করলে কোম্পানিগুলো লিটারে তেলের দাম ৬ টাকা বাড়িয়েছে।

এদিকে ভরা মৌসুমেও শীতকালীন শাক-সবজির দাম আকাশছোঁয়া। শুধু পেঁপে আর শালগম ছাড়া ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো শাক-সবজি নেই বললেই চলে। অন্যান্য সবজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৫০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা এবং গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শশা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, লেবুর হালি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়, জালি কুমড়া ৪০/৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা, নতুন আলু ৭০ টাকা, নতুন উঠা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে, ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা দরে, পেঁয়াজের ডেঙ্গুল ৬০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া পেঁয়াজ ও আলুর দাম বাজারে অস্থিতিশীল রয়েছে। যেখানে বছরের এসময়ে প্রতি কেজি আলু ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়, সে আলুর কেজি এখন ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পেঁয়াজের কেজি কয়েকগুণ বেড়ে হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। অথচ এই মওসুমে পেঁয়াজের কেজি কোন অবস্থাতেই ৬০-৭০ টাকার বেশী হওয়ার কথা ছিল না।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গেল সপ্তাহে ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগি বর্তমানে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি, সোনালি হাইব্রিড ও লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে। সোনালি ৩২০ টাকা, সোনালি হাইব্রিড ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে সব ধরণের মাছ। তেলাপিয়া মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা, পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৩০০-৪০০ টাকা, শোল ছোট সাইজের প্রতি কেজি ৫০০ টাকা, আর মাঝারি সাইজের ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে প্রতি কেজি রুই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, গলদা প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টাকি মাছ প্রতি কেজি ২৫০-৩০০ টাকা, কাতল মাছ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা, আইড় মাছ ছোট সাইজের কেজি ৭০০ টাকা, টেঙরা মাছ ছোট প্রতি কেজি ৪৫০-৫০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।