তৌহিদুলের পেছনে শত্রুরা মেয়ে লাগিয়ে দেয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ৬:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২৩

তৌহিদুলের পেছনে শত্রুরা মেয়ে লাগিয়ে দেয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কিছু মানুষের চরিত্রই হচ্ছে অন্যের ভালো না চাওয়া, এই তালিকায় আছে মিডিয়াও। এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে সিলেট সদর উপজেলার চাঁনপুর এলাকায় সুরমা নদীর খনন কাজের উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

মানুষের ও মিডিয়ার চরিত্রের দিকে ইঙ্গিত করে ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ওপরে ওঠানোর চেষ্টা কেউ করেন না, শুধু নামানোর চেষ্টা করেন।’

কূটনীতিক মো. তৌহিদুল ইসলামকে অস্ট্রিয়ায় রাষ্ট্রদূত নিয়োগের প্রস্তাব নাকচ করার পেছনে তার মন্ত্রণালয়ের সহকর্মীরা জড়িত থাকলেও, তিনি তার পক্ষ অবলম্বন করেই যাবেন বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

কূটনীতিক মো. তৌহিদুল ইসলামের ব্যাপক প্রশংসা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ তিনি ভেরি গুড অফিসার’ এবং ‘তুখোড় ছেলে’।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে সে (তৌহিদুল) আমাদের অ্যাম্বাসেডর ইন সিঙ্গাপুর। তাকে আমরা ভিয়েনাতে দিতে চাই। সেখানে যেয়ে মাল্টিন্যাচারাল কাজ আছে আমাদের ধারণা।’

মোমেন বলেন, ‘সে যখন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ পরীক্ষা দেয়, তখন সারা বাংলাদেশের মধ্যে সে প্রথম হয়। তারপরে সে তার ব্যাচের ফার্স্টবয় ছিল। অত্যন্ত ভালো, তুখোড় ছেলে। এখন ওরে টেনে কিভাবে নামানো যায়, তার জন্য তার মন্ত্রণালয়ের লোকজন, তারই বন্ধুবান্ধবরা কন্টিনিউয়াসলি….’

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ চারটা বড় বড়, ইউএনওতে চারটা বড় রিকগনিশন নেয়। একটা হচ্ছে শান্তি ও সংস্কৃতি। আর দুটো বড়, একটা হচ্ছে অটিজমের ওপর একটি এবং আরেকটি হচ্ছে মানুষের ক্ষমতায়ন। এই দুটোতে এই ছেলে (তৌহিদুল) প্রথম কাউন্সিলর ছিল ইউএনওতে এবং সে অসম্ভব তুখোড় ছেলে।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু তার (তৌহিদুল) শত্রু আছে। শত্রু ওখানে গিয়ে, সে যখন মিলানে কনসাল জেনারেল ছিল, কনসাল জেনারেল থাকা অবস্থায় কোনো একটা মেয়েকে তার পেছনে লাগিয়ে দেয়। লাগিয়ে দিয়ে একটা কেলেঙ্কারির চেষ্টা করে। তখন তাকে উহ্য করা হয়, সাসপেন্ড করা হয়, অনেক ইনভেস্টিগেশন করা হয়, সরকারের অনেক টাকা, আপনাদের টাকা খরচ করা হয়। পরে দেখা যায় একেবারে বানোয়াট। তারপর তার প্রমোশন হয়, তারপর অ্যাম্বাসেডর হয়। এখন তার বিরুদ্ধে আবার লাগছে একদল, তারই বন্ধুবান্ধব হবে। আর না হয় পত্রিকায় এগুলো গেল কিভাবে? হি ইজ অ্যা ভেরি গুড অফিসার। আমি যদ্দিন আছি, আই উইল ডিফেন্স হিম।’

সুরমা নদীর খনন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের দুর্গতি নিরসনে সুরমা নদী খনন শুরু হয়েছে। বন্যার প্লাবন ও নদী ভাঙন রোধে এ পরিকল্পনা কাজে আসবে বলে আমি আশা করি।’

এছাড়া সুরমা নদীর খনন কাজ বন্যা মোকাবেলা ও ভাঙন রোধে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ড. আব্দুল মোমেন।

এ সময় জেলা আওয়ামী লীগ নেতা, জনপ্রতিনিধি, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শনিবার বিকেলে সিলেটে নারী উদ্যোক্তা মেলা পরিদর্শনে গিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান ও সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন- শেখ হাসিনা সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করেছিলেন বলেই আমরা ঘরে বসে ই-কমার্সের মাধ্যমে সব রকমের পণ্য কিনতে পারছি। এমনকি কুরবানির ঈদে গরুও অনলাইনে বিক্রি হয়েছে প্রচুর। এবং কম খরচে অনলাইনে কুরবানির পশু ক্রয় করা গেছে। আর ই-কমার্সে পণ্য বিক্রেতাদের একটি বড় অংশ নারী। করোনাকালীন সময়ে ঘরে বসে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেছেন নারীরা। ই-কমার্সে ‘উই-ই’ নামে নারীদের প্লাটফর্ম রয়েছে। সেখানে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার সদস্য রয়েছেন।

মহানগরের জল্লারপারস্থ একটি অভিজাত হোটেলে ৩ দিনব্যাপী ‘নারী উদ্যোক্তা মেলা’ আয়োজন করা হয়। মেলায় সিলেটের উদ্যোক্তা নারীরা নিজেদের তৈরি পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন ও বিক্রি করেন।

মেলার সমাপনী দিনে সিলেটের কৃতিসন্তান ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন- আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সিলেটের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা করে দেওয়া দরকার। যেখানে তারা বছরের বিভিন্ন সময় তাদের তৈরিকৃত পণ্য প্রদর্শন এবং বিক্রি করতে পারেন। এটি একটি উত্তম প্রস্তাব। এর দ্বারা এখানে আরও নারী উদ্যোক্তা তৈরি হবেন এবং নারীরা ব্যবসায় উৎসাহ পাবেন। আমরা সেই জায়গার ব্যবস্থা করবো।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব এনামুল হাবিব এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কাউন্সিলর মো. আজাদুর রহমান আজাদ।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট