একের পর এক গোপন চুক্তিতে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন

প্রকাশিত: ১:২৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৬

মওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খালেদা জিয়া
আজ বৃহস্পতিবার ১৭ নভেম্বর, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭৬ সালের এ দিনে গোটা জাতিকে শোকসাগরে ভাসিয়ে উপমহাদেশের এ রাজনৈতিক সূর্য অস্ত গিয়েছিল। মওলানা ভাসানীর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে উপমহাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে। মজলুম মানুষের পে বলিষ্ঠ কণ্ঠ স্তব্ধ হয়ে যায়। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে একের পর এক গোপন চুক্তির মাধ্যমে বর্তমানে দেশকে যেদিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তাতে জাতীয় স্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। গণমাধ্যমে দেয়া গতকাল বুধবার এক বাণীতে খালেদা জিয়া বলেন, আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রূহের মাগফিরাত কামনা করি। দেশবাসীকে প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মওলানা ভাসানী। : বেগম খালেদা জিয়া বলেন, মওলানা ভাসানী আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক প্রাতঃস্মরণীয় নাম। সাম্রাজ্যবাদ, ঔপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের প্রবাদ পুরুষ মওলানা ভাসানী ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে উপমহাদেশের নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের পে তিনি আপসহীন নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৫০ এর দশকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম সুর ধ্বনিত হয়েছিল তার : কন্ঠে। তিনি দেশবাসীকে প্রথম স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছলেন। : বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশমাতৃকার মুক্তির পথ প্রদর্শক ছিলেন তিনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, গণতান্ত্রিক আন্দোলন এবং কৃষক শ্রমিক মেহনতি জনতার ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রদীপ্ত এক আলোকবর্তিকা। তার অবস্থান ছিল শোষণের বিরুদ্ধে শোষিতের প।ে অধিকার আদায়ে তিনি এদেশের মানুষকে সাহস যুগিয়েছেন তার নির্ভীক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের দ্বারা। তার হুঙ্কারে কেঁপে উঠত অত্যাচারী শাসক ও শোষক গোষ্ঠীর মসনদ। জাতীয় ভয়াবহ দুর্দিনে তিনি জনগণের পাশে থাকতেন আস্থার অভিভাবক হিসেবে। বেগম খালেদা জিয়া বলেন, অসহায় মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়, গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সুরায় মওলানা ভাসানী আমাদের প্রেরণার উৎস। তার নিখাদ দেশপ্রেম, দেশ ও জাতির স্বার্থ রা এবং গণতন্ত্র ও মানবতার শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করবে। তার আদর্শকে সঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলেই আমরা আমাদের অভীষ্ট ল্েয পৌঁছতে সম হব। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এদেশে আবারো গণবিরোধী শক্তি গায়ের জোরে রাষ্ট্রমতা দখল করে গণতন্ত্রে স্বীকৃত মানুষের সকল স্বাধীনতাকে হরণ করে নিয়েছে। জনগণের মতামতকে অগ্রাহ্য করে একের পর এক গোপন চুক্তির মাধ্যমে বর্তমানে দেশকে যেদিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে তাতে জাতীয় স্বাধীনতা বিপন্ন হয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে আগ্রাসী শক্তির দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে। আমাদের ভূ-প্রাকৃতিক পরিবেশ, মাটি, মানুষ ও সংস্কৃতির ওপর চলছে প্রত্য ও পরো নিরবচ্ছিন্ন আগ্রাসন। তাই এই মুহূর্তে আধিপত্যবাদী শক্তি এবং তাদের এদেশীয় প্রতিভূদের রুখতে মওলানা ভাসানী প্রদর্শিত পথই আমাদের পাথেয়। আমরা সেই পথেই অপশক্তির অশুভ ইচ্ছাকে পরাস্ত করতে সম হব। : এদিকে ভিন্ন এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রূহের মাগফিরাত কামনা করি। মওলানা ভাসানী ছিলেন আফ্রো-এশিয়া, ল্যাটিন আমেরিকার নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের কন্ঠস্বর। তার কন্ঠে উচ্চারিত হতো বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের দাবি। তিনি ছিলেন মজলুমের বন্ধু, সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে, অত্যাচারী শাসক ও শোষক গোষ্ঠীর ত্রাস সৃষ্টিকারী উচ্চকিত কন্ঠ। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং গণতন্ত্র সুরায় মওলানা ভাসানী যুগ যুগ ধরে আমাদেরকে প্রেরণা জোগাবেন, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করবেন। আজকে এই দিনে আমি মওলানা ভাসানীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিবেদিত হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানাই। : ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে বিএনপির কর্মসূচি : আজ ১৭ নভেম্বর ভোরে উত্তরায় রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের সামনে জমায়েত এবং টাঙ্গাইলের সন্তোষের উদ্দেশে যাত্রা। সকাল ৯টায় আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারত, পুষ্পমাল্য অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ। সকাল ১০টায় টাঙ্গাইল জেলা বিএনপি ও মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির যৌথ উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা। বক্তব্য রাখবেন বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট