মৌলভীবাজারে সন্ত্রাস-নাশকতা ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত: ১২:২৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৯, ২০১৬

সিরাজুল ইসলাম মাসুক : বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহর মৌলভীবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে গত ২৭শে অক্টোবর জনমিলন কেন্দ্রে মাযহাব অনুসরণের অপরিহার্যতা, সন্ত্রাস-নাশকতা ও জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে করণীয় শীর্ষক এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা শামসুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এম.এ আলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ ইউনুস আলী ও শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মাসুকের যৌথ পরিচালনায় পৃথকভাবে সমাবেশের উদ্বোধন করেন মাওলানা শিহাবুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী, ও মাওলানা কমরুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, আল ইসলাহর স্থায়ী কমিটিরি সদস্য প্রিন্সিপাল আব্দুল কাইউম সিদ্দিকী, আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, দারুন্নাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা বদরুজ্জামান রিয়াদ। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মৌলভীবাজার জেলা আল ইসলাহর সহসভাপতি মুহাদ্দিস মুহিবুর রহমান, মাওলানা মকবুল হোসেন খান, মাওলানা শফিকুর রহমান, মৌলভীবাজার শহর আল ইসলাহর সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, কুলাউড়া আল ইসলাহর সভাপতি মাওলানা আব্দুল জব্বার, আল ইসলাহ নেতা শামসুল ইসলাম, তালামীযের মৌলভীবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এম এ জলিল. মৌলভীবাজার সদর উপজেলা বিএনপির সেক্রেটারী মো. ফখরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিয আলাউর রহমান টিপু, কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা কাজী ফজলুল হক খান শাহেদ, তালামীযের জেলা সভাপতি ওজিউর রহমান আসাদ, আল ইসলাহ নেতা হাফিয শিহাবুদ্দীন, হাফিয বজলুর রহমান, মাওলানা শফিকুল আলম সুহেল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ.। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনজুমানে আল ইসলাহর কেন্দ্রীয় সভাপতি আল্লামা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেন, লা-মাযহাবিরা ইসলামকে বদলাবার চেষ্টা করছে। তারা ইসলামের হুকুম আহকামকে মডার্ন ও ডিজিটালাইজড করতে উঠে পড়ে লেগেছে। ইমাম হোসাইন (রা.) এর দামন্দ ছেড়ে ইয়াজিদের দামন্দ ধরেছে। হযরত শাহ জালাল (র.) সহ ৩৬০ আউলিয়াকে তারা ৩৬০ দেবতা বলছে। তাদের আকিদা নবী কবরে পচে গলে গেছেন। কিবলার দিকে পা দিয়ে ঘুমানো জায়েজ বলে তারা ফতোয়া দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ইয়াজিদ এমনই জালিম শাসক ছিল যে, মদিনায় সৈন্য প্রেরণ করে তিনদিনের জন্য সকল অপকর্মকে হালাল ঘোষণা করে দিয়েছিল। মসজিদে নববীতে খচ্চর বেধে এর পবিত্রতা নষ্ট করেছে। মদিনার ১২ হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। আজ যারা ইমাম হোসাইন (রা.) কে দোষী সাব্যস্থ করে ইয়াজিদকে অনুসরণ করছে। তারা ইয়াজিদের সেনাবাহিনী । দুই অধিবেশনে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত সমাবেশের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন আল্লামা মুফতি গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফুলতলী। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন আহলে হাদিস ও লা-মাযহাবিরা অত্যন্ত কূট-কৌশলী। তারা বড় পীর দস্তগীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী (র.) এর লিখিত গুনিয়াতুত তালেবীন গ্রন্থ পরিবর্তন করেছে। নাসির উদ্দিন আলবানী ইমাম বুখারী (র.) এর বুখারী শরীফকে নিজের মতো করে সংকলন করে নাম দিয়েছে মুখতাছার বুখারী। সালাফিরা মসজিদে টুপি ছাড়া নামাজ আদায় করে। অথচ তাদের ইমাম নাসির আল বানী বলেছেন, খালি মাথায় টুপি পড়লে নামাজ হবে না। এটা ব্রিটিশদের সংস্কৃতি। তিনি পড়াশুনার উপর জোর দিয়ে বলেন, মাযহাবের পক্ষে বিপক্ষে বইগুলো পড়তে হবে। মাদরাসার শিক্ষকরা ছাত্রদের সাথে মিশতে হবে। পড়াশুনার প্রতি তাদের উৎসাহিত করতে হবে। ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুধু ফেইসবুক নিয়ে বসে থাকলে হবে না আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আকিদা-বিশ্বাসের কিতাবাদি অধ্যয়ন করতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা সরকার মুহাম্মদ কাফিলুদ্দীন সালেহী বলেন, যুগে যুগে বাতিলরা ফেরকাবাজী করেছে। কাদরিয়া, মুরজিয়া, রাফেজী, খারেজী, মুতাযিলারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের বিরোধীতা করেছে। বর্তমানে ওহাবী, মওদুদী, সালাফিরা একইভাবে তাদের পঁচা-গলা মতবাদ প্রচার করে ফেতনা ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, সালাফিরা বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ঈমান বিধ্বংসী গাঁজাখোরী কথাবার্তা বলছে, তাদের আকিদা হচ্ছে রাধা-রামকে নবী বলা যাবে। প্রকৃতি ও আল্লাহর মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ব্রহ্মা, বিষ্ণুকে আল্লাহ বলা যাবে। আল্লাহ মানুষ হতে পারেন, তবে তিনি মানুষ হবেন না। নবীজী দুনিয়াতে থাকলে টেলিভিশন টকশো করতেন। আজান হচ্ছে মুসলমানদের জাতীয় সংগীত। গীতা, মহাভারত, শ্রী ভগবত, রামায়ন পড়া মুস্তাহাব। তিনি এসব বদ আকীদা দারীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সোচ্চার হতে বলেন। গ্রামে-গঞ্জে, মসজিদের মিম্বরে সঠিক আকিদাকারীদেরকে এসব বদ আকীদাদারীদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সচেতন করতে উদ্দোগ গ্রহন করার আহবান জানান।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট