‘মসজিদ বন্ধ করতে পারবে, কিন্তু নামাজ বন্ধ করতে পারবে না’

প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০১৬

ইতালির রোম থেকে : ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত ‘কোলোসসিয়াম’ হলো বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্যের একটি। ভ্রমণপ্রিয় মানুষের কাছে মূল আকর্ষণ এ স্থাপনাটিই।

ঐতিহাসিক এ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপত্যচিত্র ও প্রাচীন নিদর্শন শিল্পটির নির্মাণ কাজ ৭০ খ্রিস্টাব্দে শুরু করেন তৎকালিন রোমান সম্রাট। আর এর কাজ শেষ হয় ৮০ খ্রিস্টাব্দের শেষের দিকে।

সময়ের পথ পরিক্রমায় স্থাপনাটি রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। বর্তমানে মূল অবকাঠামোর আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত মিউজিয়ামটি সুলভ মূল্যে টিকেটে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

কোলোসসিয়ামের আরেক নাম ‘দ্য ট্যাম্পেল অফ দ্য পিস’ যদিও তখনকার রাজা বাদশাগণ আনন্দ উল্লাসসহ পৈশাচিক, বর্বর ও মানবতা বর্জিত অনেক কাজে এটি ব্যবহার করেছেন।

স্টেডিয়াম সাদৃশ্য গোলাকার আকৃতির, ছাদহীন, সুরক্ষিত ও দৃষ্টিনন্দন দুর্গের এ স্থাপনাটির অভ্যন্তরে ৮০ হাজার দর্শকের ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারি রয়েছে।

এখানে প্রতিবছর বিশ্বের নানা প্রান্তের প্রায় ৪২ লাখ পর্যটক ভিড় জমায়।

বাংলাদেশি মুসলিম কমিউনিটি অব রোম ইতালি, এমন একটি জনবহুল, জনগুরুত্বপূর্ণ, লাখো পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত হয় ব্যস্ততম এ পয়েন্ট।

সপ্তমাশ্চর্যের জায়গাটিতে অষ্টমাশ্চর্যের মত কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির মুসলিম জনতা।

সম্প্রতি ভিন্ন ভিন্ন কারণ দেখিয়ে রোমস্থ বেশ কটি মসজিদ, ইতালীর সরকার কর্তৃক বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদ খোলা আকাশের নীচে শান্তিপূর্ণ জুম্মার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে প্রকাশ করে সেখানকার মুসলিমরা।

অব্যাহত প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কোলোসসিয়াম চত্বরে আগামী ২১ অক্টোবর জুম্মার নামাজের আয়োজন করেছে তারা।

পুলিশ, ক্যারাবিনিয়েরি, পুলিশ মিউনিশিপিওসহ নিরাপত্তা বিধানে নিয়োজিত হাজার হাজার যৌথবাহিনীর উপস্থিতিতে লাখো পর্যটকের সামনে তারা জুম্মার নামাজ আদায় করবেন।

আবহমান কাল ধরে বিশ্ব দরবারে দাওয়াত পৌঁছানোর শ্রেষ্ঠ উপলক্ষ হতে পারে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।

ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমার ইবনুল খাত্তাব (রা:) শাসন আমলে দখলকৃত, রোমান সাম্রাজ্যের অংশ বিশেষ স্থানে নামাজের দাওয়াত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর প্রায় ৮০০ বছরের ইতিহাসে রোম শহরের ‘অলি-গলিতে’ এমন নামাজের ব্যবস্থা বাস্তবিকই একটি নতুন ‘মাইল ফলক’।

এমন অভূতপূর্ব নামাজের দৃশ্য লাখো অমুসলিম পর্যটকের মাঝেও কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি এরই মধ্যে ‘টক অব দ্য সিটি’ হিসেবে পরিণত হয়েছে।

আশা করা হচ্ছে প্রশাসন বন্ধ মসজিদ খুলে দেবে। সেই সাথে এও বলা হচ্ছে যে, খুলে না দেয়া পর্যন্ত এমন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

‘মসজিদ বন্ধ করতে পারবে, কিন্তু নামাজ বন্ধ করতে পারবে না’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্দোলন চালিয়ে চাচ্ছেন তারা।