১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:১৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০১৬
ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়ার রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মানসিকভাবে সক্রিয় থাকলে এই রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন দু’জন জার্মান বিশেষজ্ঞ।
ইতিবাচক চিন্তা
বয়স বাড়বে, সমস্যা দেখা দেবে এই ভাবনা সকলের মাথায়ই থাকা উচিৎ। এ নিয়ে ভয় বা চিন্তার কিছু নেই। উদ্বেগহীন এবং হাসি-খুশিভাবে সময় কাটানো নিঃসন্দেহে যে কোনো মানুষকে ডিমেনশিয়া রোগ থেকে দূরে রাখতে সহায়তা করতে পারে।
তাছাড়া মাঝে মাঝে ক্রসওয়ার্ড, পাজল বা শব্দের ধাঁধার মতো খেলাও খেলা যেতে পারে মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে। এই পরামর্শগুলো দিয়েছেন ডিমেনশিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. টোবিয়াস হার্টমান এবং ডা.মাথিয়াস লিন্ডেনাউ।
মানসিক চাপ দূরে রাখুন
শুধুমাত্র স্ট্রেসের কারণে কখনো ডিমেনশিয়া হয় না। তবে মানসিক চাপ ডিমেনশিয়া বা ভুলে যাওয়া রোগকে ত্বরান্বিত করতে পারে। তাই মানসিক চাপকে কখনো হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। মানসিক চাপ কমাতে যে কোনো ধরণের মেডিটেশন বা ইয়োগা করা উচিৎ।
পানি শরীরকে সচল রাখে
পানির অভাব হলে শরীরে অস্বস্তিভাব দেখা দেয়৷ তাই যথেষ্ট পানি পান করতে হবে। এক্ষেত্রে ‘প্লেন’ পানি, গ্রিন টি বা সবুজ চা এবং বিভিন্ন ফল বা সবজির চা পান করাই শ্রেয়, তবে অবশ্যই চিনি ছাড়া।
বলা বাহুল্য, বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের পানির পিপাসা কমে যায়, তাই সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
ভালো চিকিৎসা
শরীরের কোনো সমস্যা থাকার কারণে যদি কোনো ওষুধ খেতে হয়, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। জেনে নিন সে ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মস্তিষ্কে কোনো রকম নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে কিনা। সেরকম হলে এক্ষেত্রে বিকল্প ওষুধের কথা ভাবতে হবে।
শারীরিক চেকআপ
রক্তচাপ এবং ডায়েবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য নিয়মিত চেকআপ করতে হবে। আর অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ও হাঁটা-চলা করে শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে।
বন্ধুত্বের যত্ন নিন
ডা.মাথিয়াস লিন্ডেনাউ বলেন, ‘বন্ধুরা কথা বলার সময় তাদের হাসি, বিরক্তিবোধ, গলার আওয়াজ বা সন্তুষ্টভাবের দিকে ভালো করে লক্ষ্য রাখুন। দেখবেন এতে আপনার ব্রেন বা মস্তিষ্ক বেশ সক্রিয় হয়ে উঠবে। বিশেষ করে খেয়াল করবেন, বিজ্ঞান এবং পরিবেশ বিষয়ক আলোচনা করার সময়। এসব বিষয় মস্তিষ্ক ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারলে তা পরের আলোচনায় অন্যদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেয়ায় মধ্য দিয়ে মস্তিষ্কের বড় ধরনের ট্রেনিং হয়।’
দায়িত্বপূর্ণ কাজের মূল্য
যে ব্যক্তি কর্মক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখে, অর্থাৎ বিভিন্ন কাজের পরিকল্পনা বা কৌশল নির্ধারণ ইত্যাদি করে, তাদের বুড়ো বয়সে আলৎসহাইমার বা স্মৃতিভ্রম হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। এই তথ্য জানা গেছে জার্মানির লাইপসিগ বিশ্ববিদ্যালয়ের করা এক গবেষণা থেকে।
কলা খান, আলৎসহাইমাকে দূরে রাখুন
কলায় যে উপাদান রয়েছে তা কোষের ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে। এই তথ্যটি উঠে এসেছে দক্ষিণ কোরিয়ার গিয়ংসাং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণার থেকে।
জানা গেছে, কলা আলৎসহাইমারের মতো যে কোনো স্নায়ুর রোগকে প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে৷ তবে কলা খেতে হবে একদম তাজা অবস্থায়, নরম কলা নয় কিন্তু!
নিয়মিত ব্যায়াম করে রোগকে দূরে রাখুন
ক্যানাডায় করা এক গবেষণা থেকে জানা গেছে ব্যায়াম শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্ককেও সুস্থ ও সচল রাখে। যারা কোনোদিন ব্যায়াম করেননি তাদের তুলনায়, যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেছেন বা করেন তাদের শরীরের রক্তসঞ্চালন এবং মস্তিষ্ক অনেক বেশি সচল থাকে।
শুধু তাই নয়, খেলাধুলা করা বাচ্চরাও পরীক্ষায় ফলাফল ভালো করে। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করলে আলৎসহাইমারের মতো রোগ কম হয়।
সচেতনতার কিছু উপায়
মানুষের মস্তিষ্কই যদি সুস্থ না থাকে, তাহলে আর সুস্থ থাকার মূল্য কী? বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে যে, তথ্য-প্রযুক্তির যুগ হলেও মাঝে মাঝে হাতে লিখুন। কড়া ওষুধপত্র সেবন থেকে দূরে থাকুন। কেমব্রিজের গবেষকরা এমন বিভিন্ন অনুশীলনের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি বাড়ানো বা ধরে রাখা সম্ভব বলে জানিয়েছেন।
তাছাড়া সুস্থ মস্তিষ্কের জন্য আখরোট, সামুদ্রিক মাছ, গ্রিন টি, টমেটো ইত্যাদি খাওয়া-দাওয়ার ভূমিকা তো রয়েছেই।
নিয়মে খানিকটা ব্যতিক্রম
‘মানুষ অভ্যাসের দাস’ অর্থাৎ মানুষ রুটিনমাফিক কাজ করতেই পছন্দ করে। সকালে দাঁত ব্রাশ করা, গোসল, নাস্তা এই কাজগুলো একই নিয়মে করে থাকে। এতে ভাবা বা চিন্তার কোনো প্রয়োজন হয়না।
তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই কাজগুলো প্রতিদিন একই নিয়মে না করে মাঝে মাঝে একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে করুন। তাহলে কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন ছাড়াই ব্রেনের ট্রেনিং হয়ে যাবে।
সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকুন
সামাজিক অনুষ্ঠান, বন্ধুবান্ধব বা পারিবারিক আলোচনায় শুধু চুপচাপ বসে না থেকে সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশ নেয়ার পরামর্শ দেন আলৎসহাইমার বিশেষজ্ঞ। তাছাড়া যে কোনো ধরনের স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করার পরামর্শও দেন।
ডিমেনশিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. টোবিয়াস হার্টমান জানান, সাহায্য করার মনোভাব মানুষকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখে এবং সেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ করা ও জানার সুযোগ থাকে।
ডয়চে ভেলে অবলম্বনে
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D