২১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:০৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৫, ২০১৬
হাবিব সরোয়ার আজাদ, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পতিতালয়ে আটকে রেখে এতিম কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, যুব সমাজ ও স্থানীয় এলাকাবাসী সহ কয়েক শতাধিক লোক সংঘবদ্ধ হয়ে বাণিজ্যিক কেন্দ্র বাদাঘাটের গার্লস স্কুল সড়কের সামনে নির্জন হাওরে দেয়ালঘেরা তিন কক্ষের জসীম ও তার স্ত্রী বিলকিসের সেই পতিতালয় অবশেষে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। জসীমের এক মেয়ে ও তাদের পরিবারের লোকজন বুধবার দুপুরে আলোচিত সেই বাড়িতে থাকা মালামাল সরিয়ে নিয়ে গেছে। এর আগে মঙ্গলবার রাতে বাড়ির অধিকাংশ মালামাল ও আসবাবপত্র নিয়ে তাদের এক ছেলে ও দু’ মেয়েকে কুনাট গ্রামের বাসিন্দা নানা নিজে এসে তার বাড়িতে নিয়ে যান।
উল্লেখ্য, উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের একটি গ্রামের পিতৃহীন ও মানসিক ভারসাম্যহীন মায়ের কাছে থাকা ১২ বছরের কিশোরীকে ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার কুনাট গ্রামের মৃত আলা উদ্দিনের ছেলে চাচাত বোনের স্বামী আলমাস নতুন জামাকাপড় কিনে দেয়ার কথা বলে গালর্স স্কুলের সামনের হাওরে থাকা নির্জন পতিতালয়ে কুনাট গ্রামের প্রয়াত ইউপি সদস্য বরজু মিয়ার ছেলে জসীম উদ্দিন ও স্ত্রী বিলকিসের বাড়িতে নিয়ে যায়। কিশোরীর দেয়া বক্তব্য অনুযায়ী রাতে ভগ্নিপতি আলমাস সহ ওই নির্জন বাড়িতে পর পর দু’রাত কমপক্ষে ৬ জন তাকে গণধর্ষণ করে। ধর্ষণের ৪দিন পেরিয়ে গেলেও ওই কিশোরীকে চিকিৎসাসেবা ও আইন সহায়তা নিতে দিচ্ছিলনা ধর্ষণকারীরা। খবর পেয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে থানার ওসি মো. শহীদুল্লাহর নির্দেশে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার ও মূলহোতা লম্পট ভগ্নিপতি আলমকে গ্রেফতার করে। শুক্রবার সন্ধায় “এতিম শিশুকে পতিতালয়ে নিয়ে গণধর্ষণ” শিরোনামে এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশ হলে অসংখ্য পাঠক ধর্ষণকারীদের দ্রত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ ও তীর্যক মন্তব্য প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতেই অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে আলমাস, পতিতালয়ের পরিচালক জসীম উদ্দিন, স্ত্রী বিলকিস বেগম সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৫ জনকে আসামী করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর থেকেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার আগেই জসীম-বিলকিসকে রক্ষায় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও খদ্দের মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে আড়ালে থেকে তদবির ও হুমকি ধামকি প্রদান করে আসছেন।
মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই একেএম জালাল উদ্দিন বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গেলে এলাকার লোকজন জানায় এক থেকে দেড় শতাধিক লোক রাতের আঁধারে এসে পতিতালয়টি গুড়িয়ে দিয়ে গেলেও তারা কাউকেই চিনতে পারেনি।
এলাকার বাসিন্দা ও গার্লস স্কুলের সহকারি শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, রাতের ব্যাপার আর এমনিতেই ওই বাড়িতে দিবারাত্রী অসামাজিক কার্যকলাপ চলে আসছিলো, শুনেছি নেশা জাতীয় জিনিসও বিক্রি করা হতো, আমরা নিরীহ মানুষ ওই পরিবারের ভয়ে আমরা এমনিতেই রাতে ঘর থেকে বের হতে পারতাম না, কে বা কারা ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে আমরা তা দেখিনি।
জসীমের বড় মেয়ের নিকট এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সেও বলে কে বা কারা ঘরবাড়ি ভাংচুর করেছে আমরা জানিনা, আমি আমার ছোট বোন নানার বাড়িতে ছিলাম।
এদিকে সেই নির্জন হাওরের পতিতালয় গুড়িয়ে দেয়ার পর গার্লস স্কুলের আশে পাশের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী , শিক্ষার্থী সহ গোট এলাকায় বেশ কিছুটা স্বস্থি বিরাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে, জসীম-বিলকিস এক সময পৈতৃক বাড়ি কুনাট গ্রামে থেকে পতিতালয় চালাতে গিয়ে গ্রামবাসী তাদের গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করেন। এরপর নিজের মামার বাড়ি কুনাট-পাঠান সড়কের পাশে বাড়ি তৈরী করে পুরনো ধান্দা চালিয়ে যেতে থাকলে সেখান থেকেও তাদের দ্বিতীয় দফায় বিতাড়িত করা হয়। সর্বশেষ বাদাঘাটের গালর্স স্কুল সড়কের সামনে নির্জন হাওরে খুলে বসে পতিতালয়। ওই পতিতালয়য়ে বিলকিস নিজে, তার এক মেয়েকে ও বহিরাহগত রুপজীবীনিদের নিয়ে এসে গত কয়েক বছর ধরে নির্ব্রিগ্নে দেহ ব্যবসা ও নেশার হাট বসিয়েছিলো। এলাকার জনপ্রতিনিধি, থানা পুলিশকে বিষয়টি বারবার জানানো হলেও প্রভাবশালী মহল ও খদ্দেররাই বারবার আগলে রাখতেন জসীম-বিলকিসকে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর বুধবার পর্যন্ত ৬দিন পেরিয়ে গেলেও জসীম ও বিলকিস এখনো পুলিশের নিকট অধরাই রয়ে গেছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D