রাজধানীর বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে রবিবার থেকে অভিযান শুরু

প্রকাশিত: ১:৪৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০১৯

রাজধানীর বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে রবিবার থেকে অভিযান শুরু

রাজধানীর বহুতল ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে রবিবার থেকে অভিযান শুরু হবে এবং এ অভিযান চলবে ১৫ দিন।

শনিবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম।

এর আগে শুক্রবার অগ্নিকাণ্ডের শিকার রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারটি মূল নকশায় ১৮ তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমোদন থাকলেও পরে বিধিবহির্ভূতভাবে ২২ তলা পর্যন্ত ওঠায় বলে অভিযোগ করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম।

শুক্রবার সকালে এফ আর টাওয়ারের সামনে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ‘এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় জড়িতরা যত শক্তিশালী আর অর্থবিত্তের মালিকই হোন না কেন, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা হবে, শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। কেউ রেহাই পাবেন না।’

এফ আর টাওয়ারের নকশা ও নির্মাণ প্রসঙ্গে রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছি, এই ভবনটির ১৮ তলা একটি ইমারত নির্মাণের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৬ সালে। ২০০৫ সালে এসে একটা কপি দাখিল করা হয় যে, এটা ২৩ তলা হয়েছে। সেটাকে সন্দেহ হওয়ার কারণে তদন্ত করা হয়। তদন্তে দেখা যায়, যে কপিটি তাঁরা দাখিল করেছেন, এর সমর্থনে রাজউকের রেকর্ড রেজিস্টারে কোথাও কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই।’

‘ফলে তদন্ত রিপোর্টে ধরে নেওয়া হয়, যে রিপোর্টটি তারা (এফ আর টাওয়ার কর্তৃপক্ষ) দাখিল করেছে, এই নকশাটা সঠিক নয়, এবং মূল অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে এখানে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে,’ বলেন রেজাউল করিম।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ্যে প্রকাশ করব। আমি একজন আইনজীবী ছিলাম। আমার কাছে মনে হয়েছে, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি গাফিলতির কারণে একটি হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি যত প্রভাবশালী হন; বিত্তে, ক্ষমতায় বা অন্য কোনো পদ-পদবিতে, তিনি যেই হন না কেন, আমি এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আছি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাজউকের পক্ষ থেকেও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্বল্প সময়ে এসব কমিটি নিজেদের প্রতিবেদন দাখিল করবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘(ভবনের নিয়মবহির্ভূত নির্মাণকালে) সে সময় রাজউকের যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন ও যাঁরা কর্মকর্তা ছিলেন, আমরা চেষ্টা করছি তাঁদের অনুসন্ধান করে খুঁজে বের করতে। আমাদের তদন্ত কমিটির জুরিসডিকশন (এখতিয়ার) হচ্ছে, এই প্ল্যানটা অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে কি না।’

‘দ্বিতীয়ত, বৈধভাবে যে প্ল্যান দেওয়া হয়েছে, নির্মাণের সময় তার ব্যত্যয় হয়েছে কি না। হয়ে থাকলে এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত। ডেভেলপার, মালিক এমনকি আমাদের সংস্থার কেউ যদি জড়িত থাকে তার সম্পর্কে রিপোর্ট হবে। পরে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, যিনি যেই হন না কেন, যত শক্তিশালী কেউ হোক না কেন, এই জাতীয় মর্মান্তিক ঘটনা যে নরপিশাচরা টাকার লোভে ঘটায়, তাদের সর্বোচ্চ আইনি আওতায় এনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে,’ বলেন গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট