১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:৫০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০১৯
‘অসুস্থতার’ কারণে আদালতে হাজির হননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আজ সোমবার অভিযোগ গঠনের জন্য শুনানির দিন ধার্য ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সোমবার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকার ৩ নম্বর অস্থায়ী বিশেষ জজ আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালতে হাজির করার কথা ছিল। তাকে হাজির না করে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সহকারী সার্জন ড. মাহমুদুল হাসান স্বাক্ষরিত একটি কাস্টোডি পাঠায় কারা কর্তৃপক্ষ। এতে লেখা হয়েছে- শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারণে আজ খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজি করা হয়নি।
এ বিষয়ে দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, আজ অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। তিনি জেলখানায় আছেন। জেল কর্তৃপক্ষ তাকে হাজির করেনি। তার অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গঠন শুনানি হতে পারে।
অন্যদিকে খালেদার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, খালেদা জিয়া শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। এ কারণে তাকে আদালতে হাজির করেনি কারা কর্তৃপক্ষ। তার অনুপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের শুনানি হতে পারে না। এ ছাড়া আমরা মামলার প্রয়োজনীয় কাগজ এখনও পাইনি। তাই আমাদের একটি লম্বা সময় দেয়া হোক।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ সৈয়দ দিলজার হোসেনের আদালত আগামী ১৭ এপ্রিল অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এর আগে ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠ আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে ১টা ৫ মিনিটে তাকে আবারও কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি করেন। শুনানি শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুদক আইনের ৫(২) ধারায় দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ১০৯-এর আলোকে চার্জ গঠনের দাবি জানান তিনি।
এর আগে ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে হুইলচেয়ারে আদালতে হাজির করা হয়। ওই দিন খালেদা জিয়া আদালতে বসা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। বিচারকের উদ্দেশে বলেছিলেন- আমাকে সাজা দিতে চাইলে দিয়ে দেন, আমি আর এই আদালতে আসব না।
এরও আগে গত ১০ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারি করেছিলেন একই আদালত।
সবশেষ গত ১৩ মার্চ বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যাননি বিএনপি চেয়ারপারসন। এদিন রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকার ২ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক এএইচএম রুহুল ইমরানের আদালতে মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। ওই দিন আসামি খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির না করায় কাস্টোডি পাঠায় কারা কর্তৃপক্ষ। সিনিয়র জেল সুপার স্বাক্ষরিত কাস্টোডিতে লেখা হয়, ‘সংশ্লিষ্ট বন্দি বিজ্ঞ আদালতে যেতে অনিচ্ছুক।’ পরে আদালত মামলার শুনানির জন্য আগামী ৯ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।
জরুরি অবস্থা জারির সময় করা এ মামলার অভিযোগপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট করেছিলেন খালেদা জিয়া। রিটের কারণে প্রায় আট বছর নিম্নআদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
রিট খারিজ করে উচ্চআদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন পান খালেদা জিয়া।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মো. গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
আদালত সূত্র জানায়, দুদকের দেয়া চার্জশিটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মামলা বাতিল চেয়ে রিট আবেদন করেছিলেন খালেদা জিয়া। রিট আবেদনের কারণে প্রায় আট বছর নিম্নআদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
রিট খারিজ করে উচ্চআদালত ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে দুই মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। উচ্চআদালতের নির্দেশে ওই বছরের ৫ এপ্রিল আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন খালেদা জিয়া।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ গ্লোবাল অ্যাগ্রো ট্রেড কোম্পানিকে (গ্যাটকো) পাইয়ে দেয়া হয়েছে।
এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ২০০৮ সালের ১৩ মে তদন্ত শেষে দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদা খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। তাদের মধ্যে ছয় আসামি মারা গেছেন।
এ মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আবদুল মান্নান ভূঁইয়া, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, এমকে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম এবং খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মারা গেছেন। মামলাটিতে বর্তমান অভিযুক্তের সংখ্যা ২০ জন।
অন্য অভিযুক্তের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আকবর, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন এবং একেএম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌসচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) সাবেক সদস্য একে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল অ্যাগ্রো ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব।
প্রসঙ্গত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৭ বছর দণ্ডিত হয়ে গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D