২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২:০৪ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৯
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২০ বছরের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাটুরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি করেছেন মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার। সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে দুই রাত আটকিয়ে রেখে ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও জোর করে ইয়াবা সেবনে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগে উঠে এসেছে। রোববার নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ধর্ষণের শিকার তরুনীর খালা আশুলিয়া থানার কাইছাবাড়ী এলাকার রহিমা বেগম জানান, উপ পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেন আশুলিয়া থানায় কর্মরত থাকার সময় তার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার নিয়ে জমি ক্রয় করেন। কথা ছিল জমি বিক্রির লাভ তাকে দেয়া হবে। সেই হিসাবে তিনি সেকেন্দার হোসেনের কাছে প্রায় তিন লাখ টাকা পাবেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে ঘুরাতে থাকেন। সাটুরিয়া থানায় পোস্টিং নিয়ে আসার পরও সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
গত বুধবার বিকালে প্রতিবেশী ভাগ্নিকে নিয়ে সাটুরিয়া থানায় আসেন। এরপর সেকেন্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা দেবেন বলে তাদেরকে সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে নিয়ে যান। সন্ধ্যার পর সাটুরিয়া থানার এএসআই মাজহারুল ইসলামকে ডাকবাংলোতে নিয়ে যান সেকেন্দার।
সেখানে দুই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আর কোনো দিন টাকার জন্য আসলে অসুবিধা হবে। এরপর ডাকবাংলোর একটি কক্ষে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ইয়াবা সেবন করে ও তার সঙ্গে আসা ওই তরুণীকে জোর করে ইয়াবা সেবন করান। দুই পুলিশ কর্মকর্তা ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। পরদিন বৃহস্পতিবার সাটুরিয়া ওসি খবর পেয়ে ডাকবাংলোতে গিয়ে ঘটনা জানতে চান। কিন্তু ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার ভয়ে সেসময় তারা ওসিকে ধর্ষণের বিষয়টি বলেননি। শুধুমাত্র সেকেন্দারের কাছে টাকা পাবেন বলে জানিয়েছিলেন। ওই সময় সেকেন্দার ওসিকে জানান, বিকালে তিনি টাকা দিয়ে দেবেন। সেকেন্দারের কথা মতো ডাকবাংলোতে অবস্থান করেন তারা। কিন্তু বিকালে টাকা না দিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকতে বলে। কথা মতো সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকার পর দুই পুলিশ কর্মকর্তা এসে আবারও ইয়াবা সেবন করে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। শুক্রবার সকালে সেকেন্দার তাদের ৫ হাজার টাকা দিয়ে সাটুরিয়া থেকে চলে যেতে বলেন।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী জানান, পুলিশের কাছে পাওনা টাকা আনতে প্রতিবেশী খালার সঙ্গে সাটুরিয়ায় যান তিনি। সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে তাকে ও তার প্রতিবেশী খালাকে দুই রাত আটকিয়ে রাখে। রাতে ডাকবাংলোতে সাটুরিয়া থানার পুলিশ সেকেন্দার ও মাজহারুল ইয়াবা সেবন করেন। তাকেও অস্ত্রের মুখে ইয়াবা সেবনে বাধ্য করে। এরপর তাকে দুই পুলিশ কর্মকর্তা ধর্ষণ করে।
এভাবে আটকিয়ে রেখে তাকে দুই রাতে ও দিনে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। এ সময় ওই পুলিশ কর্মকর্তারা হুমকি দেন, ধর্ষণের কথা কাউকে বললে মেরে লাশ গুম করে দেবে। শুক্রবার ছাড়া পাওয়া পর তিনি খালার সঙ্গে বাড়ি চলে যান। বিষয়টি আশুলিয়া ও সাভারের পরিচিত সাংবাদিকদের জানান। পরে রোববার মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযুক্ত উপ পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রহিমা বেগম তার কাছে পাওনা টাকা জন্য সাটুরিয়া এসেছিলেন। রহিমাকে কিছু টাকাও তিনি দিয়েছেন। পুলিশ লাইনে তাকে কেন প্রত্যাহার করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কি কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে তা তিনি জানেন না। এক তরুণীকে আটকিয়ে রেখে ধর্ষণ ও ইয়াবা সেবন প্রসঙ্গে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়।
সাটুরিয়া অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুর ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সাটুরিয়া ডাকবাংলোতে পাওনা টাকা নিয়ে ওই নারীর সঙ্গে উপ পুলিশ পরিদর্শক সেকেন্দার হোসেনের উচ্চবাচ্য কথা বলতে দেখা গেছে। বিষয়টি সেকেন্দারকে দ্রুত মিটিয়ে ফেলার কথা বলা হয়েছিল। ওই সময় অভিযোগকারী তরুণীকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে কোন অভিযোগ দেয়নি কেউ। শনিবার রাতে পুলিশ সুপার অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাটুরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্তি করেছেন। পরে জানা গেছে এক তরুণী দুই পুলিশের বিরুদ্ধে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ করেছে পুলিশ সুপারের কাছে।
এ ব্যাপারের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম জানান, রাতেই মৌখিক অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাটুরিয়া থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তথ্যসূত্রঃ মানবজমিন
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D