৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৬
সৌদি আরবের মক্কায় ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে মসজিদে নামিরায় পবিত্র হজ সম্পন্ন হয়েছে। ধবধবে সাদা ইহরাম কাপড় পরা প্রায় ১৫ লাখ মুসল্লি সেখানে জোহর ও আসরের নামাজ এক আজানে দুই ইকামতে আদায় করেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে আসা এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হাজি হজে অংশ নেন। পবিত্র অনুভব আর ঐশী আবেগে উদ্ভাসিত লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে আরাফাতের সব প্রান্তর ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
জাবালে রহমতে কেবল মানুষ আর মানুষ। ইসলামের ইতিহাসে হজ পালনে শুভ্র বসনে, অভিন্ন আর অবস্থানে অগণিত নারী-পুরুষের কণ্ঠে সেই ধ্বনি ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়াননিমাতা লাকা ওয়ালমুলক, লা শারিকা লাকা’।
সৌদি আরবের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় আরাফাত ময়দানে নামিরা মসজিদে হাজিদের উদ্দেশে পবিত্র হজের খুতবা দেন সৌদি সরকারের নবনিযুক্ত হজ আরাফাত নামিরা মসজিদ ও গ্র্যান্ড মসজিদের ইমাম মুফতি সালিহ বিন হুমাইদ।
প্রায় ঘণ্টাব্যাপী প্রদত্ত খুতবার পরই স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় জোহরের সময় একই সঙ্গে জোহর ও আসরের কসর সালাতে ইমামতি করেন তিনি। এটাই হজের নিয়ম। সূর্যাস্ত পর্যন্ত লাখো লাখো হাজির সময় কাটবে দোয়া, মোনাজাত ও মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে ফরিয়াদ করে।
সূর্যাস্তের পরপরই হাজিরা আরাফাত থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা হবেন। রাতে মুজদালিফায় থাকবেন তাঁরা। পরের দিন সকালে হাজিরা মিনায় জামারতের শয়তানকে মারার জন্য তাঁরা পাথর সংগ্রহ করবেন। এখানে বড় শয়তানকে পাথর মেরে, কোরবানি করে মাথা মুণ্ডন করতে হবে। পরে কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন তাঁরা। পরে মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ সেখানে অবস্থান করবেন তাঁরা। সেখানে প্রতিদিন তিন শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন মুসলমানরা।
হজ উপলক্ষে এবার মক্কায় কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য ভাগ ভাগ করে মুসলমানদের সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ। গত বছর মিনায় পাথর নিক্ষেপের সময় পদদলিত হয়ে ৭১৭ জনের মৃত্যু হয়।
এ বছর হজ করতে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিতের জন্য ইলেকট্রনিক ব্রেসলেট সরবরাহ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি ব্রেসলেটে বারকোড রয়েছে এবং এটি অ্যাপসের মাধ্যমে স্মার্টফোনের সঙ্গে সংযুক্ত। এই ব্রেসলেটে হাজিদের ব্যক্তিগত এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য রয়েছে। এটি তাদের পরিচয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুবিধা দিচ্ছে।
মক্কায় দ্রুত ভিড় অপসারণ এবং যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হজ পালন করতে যাওয়া ব্যক্তিদের পথ চলা ও দিকনির্দেশনার জন্য সাড়ে চার হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হজের অনুমতি না থাকা কোনো ব্যক্তি যেন মক্কায় প্রবেশ করতে না পারে এ জন্য বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অবৈধ ব্যক্তিদের আটক করতে বাহিতা ও হাদা এলাকায় এক হাজার ২০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার অভিযানের জন্য ১৭ হাজার কর্মী মোতায়েন করেছে বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ। হজের পাঁচদিন মক্কা ও পবিত্র স্থানগুলো পরিষ্কারের জন্য ২৬ হাজার কর্মীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্বাস্থ্যসেবার জন্য মক্কায় পর্যাপ্ত জনবল, ওষুধ ও যন্ত্রপাতিসহ আটটি হাসপাতাল চালু আছে। এ ছাড়া মিনা, আরাফাতের ময়দান ও মুজদালিফায় ২৫টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
চলতি বছর মাতাফের (পবিত্র কাবার চারপাশে তাওয়াফের স্থান) স্থানও সম্প্রসারিত করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। মক্কার রক্ষাণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার ঘণ্টায় ৩০ হাজার মানুষ একসঙ্গে তাওয়াফ করতে পারবে। এর আগে এখানে ১৯ হাজার ব্যক্তি একসঙ্গে তাওয়াফ করতে পারত।
সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ আরো জানিয়েছে, এবার মাতাফ ও হারামের দ্বিতীয় তলায় প্রতি ঘণ্টায় এক লাখ সাত হাজার হাজির স্থান সংকুলান হবে। আর আরাফাহ ও মুজদালিফায় হাজিদের পিপাসা নিবারণের জন্য ১৫ লাখ গ্যালন জমজমের পানি প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D