সংসদ নির্বাচন : সারাদেশের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে পৌঁছাতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৮

সংসদ নির্বাচন : সারাদেশের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে পৌঁছাতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী

৩০ শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল থেকে মাঠে নামছে সেনাবাহিনী। এরই মধ্যে নির্ধারিত সময় থেকে দায়িত্ব পালনের জন্য সারাদেশের অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোতে পৌঁছাতে শুরু করেছে সেনাবাহিনী।

এর আগে ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৯ দিন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।

সোমবার থেকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েন করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি সূত্রটি জানায়, ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। তারা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।

এর আগে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনেও তাদেরকে একইভাবে মোতায়েন করেছিল ইসি। যদিও ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।

ওই সময়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (আরপিও) তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় সশস্ত্র বাহিনী অন্তর্ভূক্ত ছিল। পরে তা বাতিল করা হয়।

এদিকে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন বহুল আলোচিত একটি বিষয়। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি তুলেছে। নির্বাচনের স্বচ্ছতার স্বার্থে নির্বাচন কমিশনও সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পরেই (২৪ ডিসেম্বর সকাল থেকে) সেনাবাহিনী মাঠে নামছে। ১ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা মাঠে থাকবে।

ভোটকেন্দ্র ও ভোটগ্রহণের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে এবং নির্বাচনী এলাকায় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে এই সময়ে তারা কাজ করবেন।

এখন সবার প্রশ্ন এই সশস্ত্র বাহিনী নির্বাচনে কিভাবে কাজ করবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ‘ইন্সট্রাকশন রিগার্ডিং ইন এইড টু দ্যা সিভিল পাওয়ার’ অনুযায়ী কাজ করবেন। মূলত তারা জেলা, উপজেলা ও মহানগর এলাকার সংযোগ স্থলে (নডাল পয়েন্ট) অবস্থান করবেন, প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

গত ১৯ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জারি করা এ সংক্রান্ত পরিপত্রে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মপরিধি নির্ধারণ করা হয়েছে। তাতে এ কথা বলা হয়েছে। এদিকে সশস্ত্র বাহিনীর জন্য এবার প্রায় ৫০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছে কমিশন।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলা থানায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে তারা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী/নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেবে।

অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে, তারা ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে। এক্ষেত্রে অন্য কোনো উপায়ে বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারেন। জরুরি পরিস্থিতিতে যদি কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে কমিশন অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, উপকূলবর্তী এলাকায় নৌবাহিনী প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। ঝুঁকির বিবেচনায় প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে কমবেশি করা যাবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বিবেচনায় প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা সদস্য সংরক্ষিত হিসেবে মোতায়েন থাকবে। বিমান বাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান জননিরপত্তা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীগুলোর অনুরোধে উড্ডয়নে সহায়তা দেবে।

যে ছয়টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে সেখানে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। তবে তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের অস্ত্র, গোলাবারুদ বহন করবেন না, কিন্তু বাহিনীর পোশাকে থাকবেন। ইভিএম কেন্দ্রে যেসব সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য থাকবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর নিকটতম টহলদল ও স্থানীয় ক্যাম্প রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট