১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১:১০ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০১৮
আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। মুক্তিযুদ্ধকালে পুরো সময়জুড়েই পাকিস্তান হানাদার ও বদরবাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়েছিলেন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা। দেশকে মেধাশূন্য করে দিতে পরিকল্পিতভাবে তালিকা করে চালানো হয়েছিল এই হত্যাযজ্ঞ। মুক্তিযুদ্ধে যোগদান, মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশের কথা বলতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়েছিল এসব সূর্যসন্তানদের যাদের বাণী ধারণ করে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পাওয়া যায়।
কিন্তু, মুক্তিযুদ্ধের ৪৭ বছর পর কোথায় আজকের বুদ্ধিজীবী সমাজ? রাষ্ট্রের যেকোনও সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে কার বাণী কানে বাজবে তরুণদের? বর্তমান সময়ের বুদ্ধিজীবী ও তরুণদের প্রতিনিধিদের কেউ কেউ বলছেন, আমাদের দেশে দীর্ঘ সময় ধরে সুকৌশলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান গুলোকে ধ্বংস করে দেওয়ার কারণে নির্মোহভাবে বিশ্লেষণ করা মানুষ অবশিষ্ট থাকেননি। তাদের মতে, দলীয় লেজুরবৃত্তির প্রবণতা এবং কিছু সুবিধা পাওয়ার আশায় এমন এক প্রজন্ম দাঁড় হয়েছে যাদের কাছে আমরা সেই স্বাধীন চিন্তা পাই না।
শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন, বুদ্ধিজীবী সবসময়ই বিদ্যমান ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে বদল ঘটাতে চায়। যখন যারা ক্ষমতাশালী তাদের সাথে থাকলে সুবিধা পাওয়া যায় বটে, তাকে কোনোভাবেই বুদ্ধিজীবী বলা যায় না। যখন যে সরকার আসবেন তাদের অনুসারী কিছু বিজ্ঞজনকে বুদ্ধিজীবী বলা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা বিদ্যমান ব্যবস্থাকে চ্যলেঞ্জ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের আপনি বিদ্বান বলতে পারেন, তারা বুদ্ধিজীবী নন, বুদ্ধিজীবীর দায় থাকে, সমাজের মানুষের প্রতি। তিনি আরও বলেন,১৯৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছেন তারা সামরিক শাসক চালিত রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করেননি।
যে যাকে পছন্দ করে সেই তার কাছে বুদ্ধিজীবী বলে উল্লেখ করে অধ্যাপক এমাজউদ্দিন বলেন, বাণী শুনতে চাই তাদেরই ব্যক্তি যাকে পছন্দ করে। কিন্তু তার ওপর নির্ভর করে তো বুদ্ধিবৃত্তি চর্চা হয় না। কিন্তু এখন এটিই কোনও দলীয় বুদ্ধিজীবীর রেওয়াজ দাঁড়িয়ে গেছে। কোনদিনই একজন বুদ্ধিজীবী সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হননি, এটি সম্ভব না। যার যার আদর্শের লোক তাকে বেছে নেবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারপর কিছু কিছু বিষয়ে দলের বাইরে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়, বুদ্ধিজীবীকে সেই ডিলেমাটা কাটাতে পারতে হবে।
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট আরিফ জেবতিক মনে করেন আমাদের দেশে দীর্ঘ সময় ধরে সুকৌশলে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে নির্মোহ বিশ্লেষণ ও দিক নির্দেশনা দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল, যেগুলো জনমত প্রভাবিত করতে পারতো, রাজনৈতিক কূটচালের মাধ্যমে তাদেরকে ধ্বংস করে সেখানে দলীয় লোকজন বসানো হয়েছে। একাত্তর সালের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, পরবর্তীতে হয়তো শারিরীকভাবে এতো বুদ্ধিজীবী একসঙ্গে হত্যা করা হয়নি, কিন্তু মানসিকভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যার রেশ এই স্বাধীন বাংলাদেশেও রয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, যার ফলে স্বাধীন, সাহসী, স্বতন্ত্র স্বরগুলো চাপা পড়ে গেছে। পুরো সিস্টেম এমনভাবে ঢেলে সাজানো হয়েছে যেখানে দলীয় সংকীর্ণ মনোভাবাপন্ন লোকজনকে প্রমোট করা হয়েছে। মিডিয়ায় এদেরকে বড় বুদ্ধিজীবী হিসেবে দেখানো হয়েছে, বিভিন্ন পুরস্কার, বিভিন্ন সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনার দায়িত্বে এদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে। জাতির সামনে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছে যে এরা বুদ্ধিজীবী। অন্যান্য সম্ভাবনাগুলোকে ভয় দেখিয়ে অথবা কৌশলে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা হয়েছে। জাতি শ্রদ্ধা ভরে শুনবে এমন কণ্ঠস্বর এই দেশে নেই, কারণ যাদের সেই সম্ভাবনা ছিল তাদেরকে বিকশিত হতে দেয়নি এই জাতির সিস্টেম।
আজ বুদ্ধিজীবী দিবস
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিনয় এবং শ্রদ্ধায় জাতি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করবে। ১৯৭১ সালের এ দিনে বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে স্তূপ করে লাশ ফেলে রাখা হয়েছিল ঢাকার কয়েকটি এলাকায়। তাদের হত্যা করেই ক্ষান্ত দেয়নি দখলদার পাকহানাদার বাহিনী ও তার দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস। তাদের মৃতদেহকে বিকৃত করে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল। চূড়ান্ত বিজয়ের ঠিক দুইদিন আগে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এরপর ১৬ ডিসেম্বর জেনারেল নিয়াজির নেতৃত্বাধীন বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীন দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D