‘ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্যের ডাকে ব্যাপক সাড়া, এটাকে এগিয়ে নিতে হবে’

প্রকাশিত: ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০১৮

‘ক্রান্তিলগ্নে জাতীয় ঐক্যের ডাকে ব্যাপক সাড়া, এটাকে এগিয়ে নিতে হবে’

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘১০ জানুয়ারি বিমানে করে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে স্বাধীন দেশে ফিরছি। বিমান থেকেই দেখছি চারপাশে লাখ লাখ মানুষের মাথা। এ আনন্দের মধ্যেও বঙ্গবন্ধু চিন্তামগ্ন ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কাছে চিন্তার কারণ জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, নয় মাসে দেশ স্বাধীন হবে, কেউ চিন্তা করেনি। এটা জাতীয় ঐক্যের অর্জন।’

ড. কামাল বলেন, এতোদিনেও স্বাধীনতার সব স্বপ্ন পূরণ হয়নি। স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের একমাত্র উপায় হচ্ছে জাতীয় ঐক্য। তাই জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে আমাদের জাতীয় ঐক্যের ডাকে মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলতে শুরু করেছে। এটাকে আমাদের এগিয়ে নিতে হবে।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের (ভাষা মতিন) চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে নাগরিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল এ কথা বলেন। বাংলাদেশ গণসংস্কৃতি দল-বাগসদ এ সভার আয়োজন করে।

সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সই করা দেশের প্রথম সংবিধান জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে, সেই দলিলটি আপনারা নতুন করে দেখুন।

আলোচনা শেষে প্রধান অতিথিসহ অন্য অতিথিরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজক সংগঠনের একটি পোস্টার উন্মোচন করেন। আলোচনা সভার ঘোষক আলোচকদের বারবার ভাষা মতিনের স্মৃতিচারণে আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখতে বলেন। তবে আলোচকেরা ঘুরে ফিরে রাজনীতি নিয়েই বক্তব্য দেন।

আলোচনায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে বর্তমানে ক্রান্তিকাল চলছে। দেশ গণতন্ত্রহারা, বাকশালীদের বাক্সে বন্দী। গুম, খুন, ব্যাংক লুট, হেন কাজ নেই যা দেশে হচ্ছে না। গায়েবি মামলা দিয়ে নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার আবার নির্বাচনের নাটক করে ক্ষমতায় আসতে চায়, বাকশালকে চিরস্থায়ী করতে চায়। তবে সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলে, জনগণ ভোট দিতে পারলে, ভোটযুদ্ধে তারা স্থান পাবে না।

খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, রাজনৈতিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে ড. কামাল হোসেন যেভাবে অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন, ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন জীবিত থাকলে তিনিও ভূমিকা রাখতেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে বর্তমান সরকার সবার মুখে তালা লাগাতে চাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আর এ ধরনের আইন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছের মানুষেরাই কুবুদ্ধি দিচ্ছে। এই কাছের মানুষেরাই প্রধানমন্ত্রীর ভালো কোনো কাজ বাস্তবায়িত হতে দেবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ৭৫-এর মতো ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য সাবধান হতে বলেন। গোয়েন্দা বাহিনীর ওপর প্রধানমন্ত্রীকে বেশি নির্ভরশীল না হয়ে নিজের বিবেক ও চিন্তা দিয়ে সামনে অগ্রসর হওয়ারও পরামর্শ দেন।

ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ আমানও বলেন, দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন এবং মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। ড. কামাল হোসেনদের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্য ক্ষমতায় আসবে এবং স্বৈরশাসকের বিদায়ের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিনের স্ত্রী গুলবদন নেসা ভাষা মতিনদের মতো মানুষদের প্রতি বছর স্মরণ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে রাষ্ট্রভাষার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার আহ্বান জানান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাগসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শামস আল-মামুন। তিনি বলেন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় দলে দলে মানুষ যোগ দিচ্ছে। বাগসদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা জাতীয় ঐক্যের জন্য যেকোনো কাজ করতে প্রস্তুত আছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট