২রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:৪৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশের রাজনীতি, রাজনৈতিক অঙ্গনে অশুভ শক্তির পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। বিএনপিসহ তাদের সাম্প্রদায়িক দোসররা আন্দোলনের নামে নাশকতার ছক আঁকছে। সহিংসতার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এটাই আমাদের কাছে মেসেজ আছে।’
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে দলের সহযোগী সংগঠনের এক সভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সভাটা কবে হবে, এটি তো এখনও ঠিক হয়নি। বিএনপি জোর করে ২৯ তারিখে করবে? কেন এই জেদাজেদি? অনুমোদন ছাড়া আপনি সভা করবেন, এত লাফালাফি কেন?
তিনি বলেন, ১০ বছরে ১০ মিনিটও রাস্তায় নামতে পারেনি বিএনপি। এখন আপনি হঠাৎ করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে খুশি করে ব্যর্থতা ঢাকার জন্য লাফালাফি করছেন। এত লাফালাফির পরিণাম শুভ হবে না। হুমকি-ধমকি দিয়ে আন্দোলন করবেন, আমরা ঘরে বসে ডুগডুগি বাজাব, তা হবে না।
১৪-দলীয় জোটের ২৯ তারিখের নাগরিকসভা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১৪ দল পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে- নিজেরা বসেছে। এখন তারা মহানগর নাট্যমঞ্চে আরও একটু বড়পরিসরে নেতাকর্মীদের সমাবেশ করবে, এটি বিএনপির সঙ্গে কোনো পাল্টাপাল্টি নয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো উদ্বেগ নেই, তবে সতর্কতা আছে। আমরা সতর্ক আছি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের রাজনীতির অঙ্গনে অশুভ শক্তির পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপিসহ তাদের সাম্প্রদায়িক দোসররা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আন্দোলনের নামে নাশকতা ও সহিংসতার ছক আঁটছে।
‘সহিংসতার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। এটিই আমাদের মেসেজ, ইনফরমেশন। তারা যেভাবে হাঁকডাক হুমকি-ধমকি শুরু করেছে, সেভাবে দেশে অস্থিতিশীল সৃষ্টির পাঁয়তারা হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।’
তিনি বলেন, তারা আজকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলছে। কিছু দিন আগে আইআরআইয়ের গবেষণার ফলে দেখা গেছে- আমাদের দলীয় সভাপতির জনপ্রিয়তা ৬৬ শতাংশ ও দলের জনপ্রিয়তা ৬৪ শতাংশ।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দেশের ৬৬ শতাংশ মানুষ যে দল এবং নেত্রীকে সমর্থন করেন। জনতার এই সিংহভাগকে বাদ দিয়ে কিভাবে জাতীয় ঐক্য? এটি তো আসলে জাতীয় ঐক্য নয়, এটি আসলে জাতীয়তাবাদী সাম্প্রদায়িক ঐক্য। জনতা নয়, নেতায়-নেতায় ঐক্য। ‘২০ দলের সঙ্গে ১০ দলের ঐক্য এখনও নড়বড়ে। কারণ বিএনপি তাদের মূল পার্টনার সাম্প্রদায়িক জামায়াতকে ছাড়া এক পাও এগোতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেই অবস্থায় যুক্তফ্রন্ট এ প্রক্রিয়ায় শর্ত দিয়েছে যে, জামায়াত যদি বিএনপির সঙ্গে আন্দোলনে থাকে, তা হলে যে ঐক্য করে সরকার পতনের আন্দোলন সূচনা করতে পারবে না। এই পাঁচ মিশালী জগাখিচুড়ি ঐক্যের কোনো ভবিষ্যৎ আছে বলে আমরা মনে করি না।
‘দেশের জনগণের বেশিরভাগ অংশই ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে যে, আগামী নির্বাচনে উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। আগামী নির্বাচনে তারা আবারও নৌকায় ভোট দিতে চাই,’ বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি জানান, আমরা সরকারি দল, আমাদের ভরা কলসি, ভরা কলসি নড়ে না। যাদের শূন্য কলসি, তারাই ফাঁকা আওয়াজ করে। আমাদের উত্তেজিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা কারও উসকানির ফাঁদে পা দেব না।
‘দেশের মানুষ খুশি নির্বাচন হবে। পরিবেশটা শান্তিপূর্ণ থাকবে- এটিই আমরা চাই। আমরা নির্বাচনের জন্য সুশৃঙ্খলভাবে সংগঠিত হচ্ছি। দেশের অর্ধেক অংশে আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময়ে কেন আমরা সংঘাত করব, আমরা তো ক্ষমতায় আছি। আমরা পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি করব না।’ তিনি বলেন, বিএনপি সমাবেশ ডেকেছে, এখন আমাদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নেই। আমাদের নেত্রী পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন- আমাদের কর্মসূচি আমরা দেব। কারও কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আমরা দেব না। তারা সভা করবে আমরা পাল্টা করব দেশের মানুষকে আতঙ্কে রেখে এ ধরনের রাজনীতি আমাদের প্রয়োজন নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে হবে। সারা দেশের নেতাকর্মীরা সতর্ক অবস্থায় থাকবে এটিই আমাদের নির্দেশ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, আন্দোলনের নামে সভাসমাবেশে যদি নৈরাজ্য, নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়, তা হলে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করব। আর সহিংসতা ও নাশকতার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যথাযথ জবাব দেবে। আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুত আছি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হলে আমরা রাজনৈতিকভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মোকাবেলা করব। আর সহিংসতা ও নাশকতার দিকে যদি বিএনপি তার দোসরদের পা বাড়ায় তা হলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে জনগণ।’
তিনি বলেন, ১ অক্টোবর থেকে সপ্তাহব্যাপী রাজধানীসহ দেশব্যাপী গণসংযোগ করব। আমরা ভোটারদের কাছে যাব, বাড়িতে বাড়িতে যাব- গণসংযোগ করব। আমরা রাস্তায় অবরোধ করে মানুষের জন্য দুর্ভোগ হবে এমন কোনো সভাসমাবেশ করব না।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘আর রাস্তা অবরোধ/বন্ধ করে কাউকে সভাসমাবেশ করতে দেয়া হবে না। আমরা নিজেরাই নিয়ম মেনে চলছি। অন্য কেউ নিয়মভঙ্গ করে রাস্তায় প্রেসক্লাবের সামনে, পল্টনের রাস্তায় সভাসমাবেশ করবে, সেটি অ্যালাউ করা হবে না। জনগণের দুর্ভোগ কিছুতেই হতে দেব না।’
বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, উপদফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম কৃক, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আখতার, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার প্রমুখ। এর আগে সকালে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন ওবায়দুল কাদের।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D