বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া ও খালেদা জড়িত : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১:০০ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০১৮

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়া ও খালেদা জড়িত : প্রধানমন্ত্রী

Manual3 Ad Code

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার স্ত্রী খালেদা জিয়া জড়িত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক স্মরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের তদন্তের জন্য আমি ১৯৮০ সালে লন্ডনে যেয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড তদন্তে একটি কমিশন গঠন করি স্যার ম্যাকব্রাইট এবং স্যার টমাস উইলিয়ামকে দিয়ে। তারা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময়ও বাংলাদেশে এসেছিলেন তদন্ত করতে। অথচ জিয়াউর রহমার তাদেরকে বাংলাদেশে আসার ভিসা দেয়নি। এই হত্যার তদন্তে জিয়াউর রহমান বাধা দিয়েছিল কেন? যদি সে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জড়িত নাই থাকে তাহলে সে বাধা দিবে কেন? জিয়া সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল। আর জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনী, তাকে সংসদে বসিয়েছিল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী (খালেদা জিয়া)।’

Manual4 Ad Code

‘তার অর্থ কী দাড়াচ্ছে? জিয়া একাই নয়, তার স্ত্রীও এই হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল এতে কোনো সন্দেহ নাই। খুনীরা খুনিই হয়। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ বারবার আমার ওপর আঘাত হেনেছে। কাজেই এদের হাতে ক্ষমতা গেলে দেশের মানুষ কী উন্নয়ন পাবে? কী ন্যায়বিচার পাবে?’

স্কুল শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের উস্কানিদাতাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শিশুদের আন্দোলনে উস্কানি দিয়েছিল, যারা শিশুদের নিয়ে খেলতে চেয়েছিল, শিশুদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। তারা আর যাই হোক বাংলাদেশের জনগণের ভবিষ্যতকে অন্ধকারে ঠেলে দিতে চায়। আলোর পথের যাত্রাকে বাধাগ্রস্থ করতে চায়।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি এসময় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, ‘কিছু কিছু পত্রিকায় দেখবেন, যেন আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা কমানোই যেন তাদের একমাত্র কর্তব্য। কারণ, যখন বাংলাদেশে অসাংবিধানিক সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন তাদের খুব কদর বাড়ে। এরা সুযোগসন্ধানী। এদের কারণে বাংলাদেশের মানুষকে বারবার বিপদে পড়তে হয়েছে। অধিকারহারা হতে হয়েছে। এরাই ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে। এরা এখনো তাদের পূর্ব প্রভুদের ভুলতে পারে না। পাকিস্তানীদের পা চেটে খাবে এটাই তাদের চরিত্র।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের যখন উন্নতি হয়েছে, তখন এই শ্রেণীর মানুষের মন খুব খারাপ। বাংলাদেশের মানুষের ভালো তাদের ভালো লাগছে না। কাজেই এরা জাতির শত্রু। এরা দেশের শত্রু।’

‘খুনীদের রাজত্ব এদেশে আর আসবে না। আসতে দেওয়া হবে না’, জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে আজকের দিনে এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা। আজকে আমরা ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি। দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ আমরা করবো।’

Manual8 Ad Code

সাম্প্রতিক নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী ও জাতির পিতার খুনীরা বাংলাদেশ উঠে দাঁড়াক এটা চায় না। তারা যে এটা চায় না, তার দৃষ্টান্ত এখনও আপনারা দেখতে পান। বাস দুর্ঘটনায় দুজন শিক্ষার্থী মারা গেছে। সাথে সাথে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’

এই আন্দোলনে উস্কানির বিষয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহার করে তারা উস্কানি দিয়ে দিয়ে এই ছেলেমেয়েদের মিথ্যা কথা বলে বলে দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তাদের উদ্দেশ্য কী?’

প্রধানমন্ত্রী এ সময় নাম উল্লেখ না নলে দৃকের পরিচালক আলোচিত্রী শহীদুল আলমের বিষয়ে বলেন, ‘অনেক নামী, দামী, জ্ঞানী, অনেক বড় আঁতেল, অনেক ইন্টেলেকচুয়াল, কিন্তু তাদের রক্তের সূত্রটা কোথায়। বাংলাদেশের বিরোধী খান এ সবুরের বোনের ছেলে। ওই ধরনের যারা পাকিস্তানী চিন্তা চেতনায় বিশ্বাসী, তাদেরই বংশধর থেকে শুরু করে অনেকেই এর মধ্যে জড়িত। আবার তাদের ধরলে দেখি জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে খুব হৈ চৈ।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘শিশুদের উস্কানি দিয়ে যারা দেশকে অস্বাভাবিক করতে চান, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য। কেউ যদি মনে করেন খুব নামীদামী লেখক, সাংবাদিক বলেই তাদের অপরাধ আর অপরাধ না। তাদের অপরাধ সব মুছে যাবে। আমাদের সরকারের সময় তথ্য প্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই কেউ কেউ এদের সমর্থনে লিখে যাচ্ছেন। কিন্তু যে অন্যায় তারা করতে যাচ্ছিল, দেশটাকে কোন দিকে নিতে যাচ্ছিল, সেটা কী তারা উপলব্ধি করেন? তারা অনেক জ্ঞানী, জনপ্রিয় হতে পারেন কিন্তু তাদের মধ্যে কি একটুও দায়িত্ববোধ থাকবে না।’

Manual2 Ad Code

‘যারা শিশুদেরকে ব্যবহার করে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে চায় তাদেরকে কী বাহবা দিতে হবে? আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সেটাই কি অন্যায় হয়ে যাবে? দেশকে রক্ষা করা দেশের মানুষকে রক্ষা করা এটাই তো আমার কর্তব্য।’

আজকের সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

Manual8 Ad Code

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন-বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, আইন সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম, কার্যনির্বাহী সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও আনোয়ার হোসেন।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code