বিয়ানীবাজারে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০১৮

বিয়ানীবাজারে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর আকস্মিক বন্যায় সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় প্রায় ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা, কুশিয়ারা ও সোনাই নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুশিয়ারা নদীর বাঁধ পাঁচ জায়গায় ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। জেলা শহর সিলেটের সাথে বিয়ানীবাজারসহ পূর্বাঞ্চলের চারটি উপজেলার যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজি আরিফুর রহমান জানান, কুশিয়ারার শেওলা পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার এবং আমলসীদ পয়েন্টে ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাওয়ায় প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দা পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ৯ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও উপজেলার কোথাও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়নি বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হিরণ মাহমুদ।

আর কৃষি কর্মকর্তা পরেশ চন্দ্র দাস জানান, এবার বিয়ানীবাজারে ২ হাজার ৩২৭ হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪০ হেক্টর জমির ফসল বন্যায় ডুবে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমাণ হবে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা।

সরেজমিন দেখা যায়, বন্যার কারণে সিলেট-বিয়ানীবাজার-চন্দরপুর সড়কে ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার দুবাগ বাজার, মেওয়া পয়েন্ট ও কাকরদিয়া এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। এছাড়া ফুলমলিক, কাদিমলিক, চন্দগ্রাম, রামদা, তাজপুর, আবঙ্গি, টেকইকোণা, শ্রীধরা, কিয়াছারা, গড়রবন্দ, ছোটদেশ, মালারগ্রাম, আঙ্গারজুর, শেওলা, পীরেরচক, মাটিজুরা, চান্দলা, বিবিরাই, বাহাদুরপুর, আলীপুর, মাটিকাটা ও খশির কৈবন্দ গ্রামে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বন্যা দুর্গত এলাকায় ১৫ মেট্রিক টন চাল এবং ৩০০ প্যাকেট খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সেই সাথে পৌর এলাকার শ্রীধরায় তাৎক্ষণিকভাবে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।

এদিকে, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। মঙ্গলবার দুপুরে সুরমা ও কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সাথে কথা বলেন। এসময় স্থানীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি বলেন সরকার ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের পাশে রয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য ত্রানের কোন অভাব হবে না। পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী মওজুদ রয়েছে। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশব্যাপী বন্যাপিড়ীত মানুষের জন্য কাজ করছে সরকার। জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে বন্যাপিড়ীত মানুষ ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার তালিকা করার জন্য শিক্ষামন্ত্রী নির্দেশ দেন। কোন অনিয়ম হলে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও সতর্ক করে দেন। শিক্ষামন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তা, আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট