দুই সপ্তাহেও হয়নি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি

প্রকাশিত: ৫:১৬ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০১৮

দুই সপ্তাহেও হয়নি ছাত্রলীগের নতুন কমিটি

বাংলাদেশ অন্যতম বৃহৎ ছাত্র-সংগঠন ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন পেরিয়ে দুই সপ্তাহ হতে চললেও ঘোষিত হয়নি নতুন কমিটি। নতুন নেতৃত্বের নাম শোনার অপেক্ষা করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

গত ১২ মে সম্মেলনের শেষ ও দ্বিতীয় পর্বে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘আগামী দু-এক দিনের মধ্যে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের নাম জানানো হবে।’ দুই দিনের বদলে দুই সপ্তাহ অতিক্রম করলেও নতুন নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করা হয়নি।

ছাত্রলীগকে সিন্ডিকেট ও অনুপ্রবেশ মুক্ত করতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট অনেকেই।

এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের পরবর্তী নেতৃত্ব বাছাই করতে দলটির একজন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এই অবস্থায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই সভাপতিমণ্ডলী সদস্য যুক্ত হওয়াতে অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হবে বলে জানা গেছে।

ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে এখন পর্যন্ত ১৭৯ জনের বৈধ প্রার্থিতা রয়েছে। বাকিরা বয়সের কারণে বাদ পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের সম্পর্কে সরকারের বিভিন্ন উইংয়ের মাধ্যমে খোঁজ খবরও নিয়েছেন। তাদের সঙ্গে আদালাভাবে কথা বলারও কথা রয়েছে। তবে সেটা কবে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

জানা গেছে, ৫ জুন আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের শেষ বাজেট। এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ব্যস্ত রয়েছেন। আবার সামনে নির্বাচন। তাই দ্রুত সময়ে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব যোগ্য হাতে তুলে দিতে ওই সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্মেলন শুরুর আগ থেকেই এবারের সম্মেলনকে ঘিরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এবং বিশেষ করে কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার আগ্রহ স্পষ্ট ছিল। ছাত্রলীগকে তথাকথিত সিন্ডিকেট প্রথা থেকে বের করে এনে নতুন করে সাজানোর ঘোষণাও ছিল। সে লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে চলে আসা সরাসরি ভোট প্রথা থেকে বের হয়ে এসে, এবার সমঝোতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয় আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। কিন্তু সাবেক ছাত্র নেতৃত্ব দুই ভাগে ভাগ হয়ে যাওয়ায় এখন পর্যন্ত কমিটি ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি।

ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, প্রার্থীদের তালিকা আমরা আমাদের অভিভাবক জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দিয়েছি। নতুন নেতৃত্ব যত দ্রুত সম্ভব আমাদের নেত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উপহার দেবেন। শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। নতুন নেতৃত্বের নির্বাচনে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মেনে নেবে ছাত্রলীগ।

ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের চাওয়া- ছাত্রলীগকে ‘সিন্ডিকেট’ মুক্ত করে ও জঞ্জাল ও অনুপ্রেবেশকারী মুক্ত করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক আখ্যায়িত করে তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। বর্তমানে ছাত্রলীগ নিয়ে অনেক কথা বলা হয়। সিন্ডিকেট ও অনুপ্রবেশকারী নিয়ে যে বিতর্ক এবার তার অবসান হবে।

ছাত্রলীগের আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন প্রসঙ্গে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে প্রার্থী অনেক। কমিটির শীর্ষ পদে যাতে অযাচিত কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে জন্য অধিকতর যাচাই-বাছাই চলছে। তড়িঘড়ি করে ছাত্রলীগের কমিটি করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী যথা সময়ে এ কমিটির ঘোষণা দেবেন।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে নামের যে তালিকা গেছে তাতে প্রার্থী অনেক, নারীদেরও নাম আছে। তবে সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে। যেহেতু প্রার্থী বেশি তাই যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এবারের ছাত্রলীগের একই সঙ্গে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা যারা থাকবেন তাদের নামসহ কমিটি প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।