ঢাকায় ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ট্রান ডাই কোয়াং

প্রকাশিত: ৪:৪১ অপরাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০১৮

ঢাকায় ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ট্রান ডাই কোয়াং

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট ট্রান ডাই কোয়াং তিনদিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাকে হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানিয়েছেন।

রবিবার বিকেলে চারটার দিকে তাকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করে। এর আগে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রাজধানী ঢাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলোকে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পতাকা দিয়ে মনোরমভাবে সাজানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রবিবার বিকালে বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সফরকালে তিনি জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

এছাড়া রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের সফরকালে ভোজের আয়োজন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সফরকালে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে মেশিন ম্যানুফ্যাকচারিং ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতাসহ চারটি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫ বছর উদযাপন উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট ট্রান ডাই কোয়াংয়ের এ সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। ২০০৪ সালের পর এটাই ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। সফরকালে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সার্বিক দিক বিশেষ করে বিজনেস ফোরাম ও সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের পরিবেশনা থাকার কথা রয়েছে।

যে দেশের উপনিবেশ ছিল ভিয়েতনাম
১৮৬০ সালে ইন্দোচায়না দখল করার পর থেকে ভিয়েতনাম দখল করার চেষ্টা চালাতে থাকে ফ্রান্স৷ এজন্য তাদের ৩০ বছর অপেক্ষা করতে হয়৷ ফ্রান্সের শাসন আমলে ১৯০০ সালের কাছাকাছি সময়ে ভিয়েতনাম উত্তরে টঙ্কিন, মধ্যাঞ্চলে আন্নাম ও দক্ষিণে কোচিন চায়না নামে তিন ভাগে ভেঙে যায়৷

এরপর আবার ধীরে ধীরে ভিয়েতনামিরা সংগঠিত হতে থাকে৷ ১৯২৯ সালে ভিয়েতনামে বেশ কিছু মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী পার্টির উদ্ভব হয়৷ পরের বছরই তারা হো চি মিঙের নেতৃত্বে ইন্দোচায়না কমিউনিস্ট পার্টি নামে একত্রিত হয়৷

পরবর্তীকালে দলটি তিন ভাগে ভেঙে আলাদা আলাদাভাবে লাওস, কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে৷ ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত দলটি ভিয়েতনামে শ্রমিক পার্টি নামে পরিচিত হলেও পরবর্তীকালে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ভিয়েতনাম (সিপিভি) নাম ধারণ করে৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভিয়েতনামি কমিউনিস্টরা জাপানিদের প্রতিরোধ করতে মিত্রশক্তিকে সহযোগিতা করে৷ ১৯৪১ সালে হো চি মিং ভিয়েত মিং বা স্বাধীনতা লীগ প্রতিষ্ঠা করেন৷ লক্ষ্য করুন ভিয়েতনাম ও ভিয়েত মিঙের অর্থ আলাদা৷

বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর দেশটিতে ভিয়েত মিং ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে৷ তাদের একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনী ছিল৷ ১৯৪৫ সালের আগস্টে ভিয়েতনামে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়৷ এর দুই সপ্তাহ পর হ্যানয় দখলকারী বিদ্রোহীরা ভিয়েতনামের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে৷ পাশাপাশি তারা ভিয়েতনামকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে৷ রাজা বাও দাই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন৷

তাকে নতুন শাসন ব্যবস্থার উপদেষ্টার পদ গ্রহণের প্রস্তাব দেয়া হয়৷ ১৯৪৬ সালের মার্চে ভিয়েতনাম সরকারকে ফ্রান্স স্বীকৃতি দেয় এবং ফরাসি ইউনিয়নের অধীনে ভিয়েতনামকে মুক্ত দেশ হিসেবে মেনে নেয়৷ আর জুনে ফ্রান্স সাবেক রাজা বাও দাইকে রাষ্ট্রের প্রধান ঘোষণা করে৷

ভিয়েত মিং তখন গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে৷ দীর্ঘ নয় বছর যুদ্ধ করার পর ১৯৫৪ সালে দিয়েন বিয়েন ফু সামরিক ঘাঁটিতে ফরাসি বাহিনীকে পরাজিত করে ভিয়েত মিং চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয়৷

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট