শেখ হাসিনার উদ্বেগ, মায়ানমার সেনাপ্রধানের ‘নতুন চাল’

প্রকাশিত: ১২:২৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০১৭

শেখ হাসিনার উদ্বেগ, মায়ানমার সেনাপ্রধানের ‘নতুন চাল’

শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ নজিরবিহীন সঙ্কটের মুখোমুখি। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরার ব্যবস্থা না হলে সঙ্কট নিরসন সম্ভব নয়। অথচ রোহিঙ্গাদের ফেরানোর প্রশ্নে নতুন শর্ত আরোপ করেছেন মায়ানমারের সেনাপ্রধান।

বুধবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সাম্প্রতিক সেনা অভিযানের কারণে রোহিঙ্গাদের জীবনে যে বিপর্যয় নেমে এসেছে, তার কারণে বাংলাদেশ এখন নজিরবিহীন সঙ্কটের দ্বারপ্রান্তে। অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় বর্তমান পরিস্থিতি অনেক ভয়াবহ।এখনো প্রতিদিনই রোহিঙ্গারা মায়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশে আসছেন- এ তথ্য জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমস্যাটা তৈরি করেছে মায়ানমার কর্তৃপক্ষ, সমাধানও তাদেরই করতে হবে।’

মায়ানমার সেনাবাহিনীর নতুন শর্ত
রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে নৃশসংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের পর সম্প্রতি মায়ানমার সেনাবাহিনী এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, তাদের সেনারা হত্যা, ধর্ষণ নির্যাতন, ঘর-বাড়িতে আগুন দেয়ার মতো ঘটনা ঘটায়নি। এরপর রাখাইন রাজ্যে অভিযানের দায়িত্বে থাকা মেজর জেনারেল মাউং সোয়েকে বদলি করা হয়।

সব মিলিয়ে গত কয়েকদিন রোহিঙ্গা ইস্যুতে ঘুরেফিরেই খবরে এসেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার সে দেশের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘শুধু মায়ানমারের প্রকৃত জনগণ’ চাইলেই রোহিঙ্গারা ফিরতে পারে। নিজের ফেসবুক পেজে দেয়া ইংরেজিতে লেখা এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রাখাইনের স্থানীয় লোকজন, যারা মায়ানমারের প্রকৃত নাগরিক, তাদের ইচ্ছাকেই এখন প্রাধান্য দিতে হবে। শুধু রাখাইনের স্থানীয় আদি বাসিন্দারা যখন মেনে নেবেন, তখনই কেবল সব জনগণ খুশি হবে।’

গত ২৫ আগস্টের সেনা অভিযানের পর থেকে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ চায়, গত কয়েক দশক ধরে যারা গিয়েছেন এবং সম্প্রতি যারা নিপীড়ন, নির্যাতনের মুখে যেতে বাধ্য হয়েছেন, তাদের সবাইকেই মায়ানমার ফিরিয়ে নিক। কিন্তু মায়ানমার সেনাপ্রধান এ প্রসঙ্গে পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যতজনকে নেয়ার কথা বলছে, ততজনকে গ্রহণ করা অসম্ভব।’

রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে এইচআরডাব্লিউ এবং অ্যাঞ্জেলিনা জোলি
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) এক প্রতিবেদনে লিখেছে, মায়ানমারের সেনাবাহিনীর নৃশংসতার কারণে বাধ্য হয়ে দেশ ছেড়েছে রোহিঙ্গারা৷ ব্যাপক হত্যা, নির্যাতন এবং ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।

দিকে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক বিশেষ দূত, হলিউড সুপারস্টার অ্যাঞ্জেলিনা জোলি মায়ানমারের রোহিঙ্গা নারীদের ওপর যৌন সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট