ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

প্রকাশিত: ৯:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৫

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ

Manual3 Ad Code

ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি শিকদার মাহমুদ রাজী ও বিচারপতি রাজিউদ্দীন আহমেদের দ্বৈত বেঞ্চ শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

পাশাপাশি নরসিংদী ডিসি অফিসের এলএ (ভূমি অধিগ্রহণ) শাখার লাগামহীন দুর্নীতি তদন্তে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন উচ্চ আদালত। এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে এ বিষয়ে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শিশির মনির।

Manual8 Ad Code

জানা যায়, নরসিংদীর স্থানীয় বাসিন্দা মাহাবুবুর রহমান গত ১৯ অক্টোবর ‘জমি অধিগ্রহণের ৮ কোটি টাকা পেতে ঘুস ১ কোটি, ডিসি অফিসের ঘুসের ফাঁদে মারা যান সাহাবুদ্দিন’ শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদন করেন। ১৮ ডিসেম্বর এই রিটের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

জানতে চাইলে সিনিয়র আইনজীবী শিশির মনির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উন্নয়নমূলক কাজ চলমান। অথচ টানা চার বছরেও জমি অধিগ্রহণই শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটি ঝুলে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে শিশির মনির বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হবে। আমরা চাই নতুন বাংলাদেশ হবে দুর্নীতিমুক্ত। দেশটাকে সবার বাসযোগ্য করতে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করতে হবে।

রিটকারী মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমদ যুগান্তরে প্রকাশিত অভিযোগ অনুসন্ধানে গত ১৯ অক্টোবরই তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কিন্তু তদন্ত কমিটিতে যে কর্মকর্তাকে প্রধান করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ আছে অনেক। ভূমি মন্ত্রণালয় গঠিত এই তদন্ত কমিটির মাধ্যমে জমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্তের আলোর মুখ দেখা যাবে না।

তথ‍্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঢাকার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. আফজাল হোসেনকে কমিটির আহ্বায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (অধিগ্রহণ-১) মুহাম্মদ আব্দুল লতিফকে সদস্যসচিব এবং একই মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সাইফুল ইসলামকে সদস্য করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ইতোমধ্যে এই কমিটি দুইবার সময় নিয়েছে।

সাত জেলায় অধিগ্রহণের যত জমি
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০২১ সালে সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদনের পর ভূমি অধিগ্রহণের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। ঢাকা-সিলেট অংশে সাত জেলায় মোট ৮ একর ৩০ শতক জমি অধিগ্রহণের আওতায় ৬৬টির মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১১টি এলএ কেসের দখল হস্তান্তর হয়েছে। চার বছরে এই প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ১৫ শতাংশ।

Manual7 Ad Code

নারায়ণগঞ্জ জেলার ৪টি এলএ কেসের ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব ২০২১ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে দাখিল করা হয়। এ পর্যন্ত ২টি কেসের দখল হস্তান্তর হয়েছে। নরসিংদী জেলায় ৯টি ভূমি অধিগ্রহণ প্রস্তাব পাঠানো হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুলাইয়ে। এ জেলায় ৩টি এলএ কেসের দখল হস্তান্তর হয়েছে। ৫টিই ঝুলে আছে। কিশোরগঞ্জ জেলায় ১টি এলএ প্রস্তাব ২০২২ সালের জানুয়ারিতে দাখিল করা হলেও কোনো অগ্রগতি নেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তিনটি প্রস্তাবের ২টির দখল হস্তান্তর হয়েছে।

Manual6 Ad Code

মৌলভীবাজারে দুই প্রস্তাবের দুটিই হস্তান্তর করা হয়েছে। হবিগঞ্জ জেলায় ৩০টি এলএ প্রস্তাব পাঠানো হয় ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত। এ পর্যন্ত মাত্র দুটি এলএ কেসের দখল হস্তান্তর হয়েছে। সিলেটে ঢাকা-সিলেট অংশে ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭টি এলএ প্রস্তাব দাখিল করা হলেও এ পর্যন্ত কোনো জমির দখল হস্তান্তর হয়নি। এমনকি কোনো প্রাক্কলনও পাওয়া যায়নি।

Manual5 Ad Code


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code