ছেলের প্রাণ বাঁচাতে বৃদ্ধ বাবার কিডনি দান

প্রকাশিত: ৯:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২৫

ছেলের প্রাণ বাঁচাতে বৃদ্ধ বাবার কিডনি দান

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে এক অসাধারণ নজির স্থাপন করেছেন তাহির মিয়া নামে এক বাবা। ছেলের জীবন বাঁচাতে নিজের কিডনি দান করেছেন তিনি। হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এই ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং উপজেলার নয়াপাথাড়িয়া গ্রামে। তাহির মিয়ার ছেলে অনিক।

গত বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে অনিকের শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। অনিকের দুলাভাই মুসাউল আলম জানান, হবিগঞ্জ শহরের শ্যামলী এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অনিক ‘জে কে এন্ড এইচ কে হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে’ পড়াশোনা করত। তবে প্রায়ই অসুস্থ থাকায় নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন তার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারও বুঝতে পারেনি তার অসুস্থতার প্রকৃত কারণ, কারণ অনিক নিজেও কিছু বলত না।

প্রায় সাত মাস আগে অনিক হঠাৎ প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত হলে তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, তার কিডনিতে গুরুতর সমস্যা রয়েছে এবং দ্রুত তাকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরে অনিককে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানায়, অনিকের দুটি কিডনিই বিকল হয়ে গেছে। কিডনি প্রতিস্থাপনই একমাত্র উপায়।

এ অবস্থায় পরিবার বিপাকে পড়ে যায়। সৌদি আরবে থাকা ভাই ইকবাল মাহমুদ ও ফ্রান্সে থাকা ভাই আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ লিমন অর্থনৈতিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসেন। তবে সবচেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করেন বাবা তাহির মিয়া। ছেলের প্রাণ বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দান করতে সম্মত হন তিনি।

কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ডা. হারুনুর রশীদের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচারটি সফলভাবে সম্পন্ন করেন পিজি হাসপাতালের কিডনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক খুরশেদ আলম।

তাহির মিয়ার এই ত্যাগকে সাদরে গ্রহণ করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ ও সুশীল সমাজ। তাঁরা বলছেন, বাবার এমন আত্মত্যাগ বর্তমান সমাজে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি শুধু একটি কিডনি দান নয়, বরং ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ ও পারিবারিক বন্ধনের এক অনুপম নিদর্শন।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট