৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৮:০১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৪
বীমা পরিকল্পটির (পলিসি) নাম এখন ‘মেয়াদি সুবিধাযুক্ত পেনশন বিমা’। এত দিন এ পলিসি পরিচিত ছিল ‘বঙ্গবন্ধু সর্বজনীন পেনশন বিমা’ নামে। একমাত্র রাষ্ট্রীয় জীবনবীমা প্রতিষ্ঠান জীবন বীমা করপোরেশনের পলিসি এটি। ব্যবসায়ী ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের জন্য এটি চালু করা হয়।
পরিবারের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি মেয়াদ শেষে যাঁরা মাসিক পেনশন পেতে আগ্রহী, তাঁদের জন্যই এ পলিসি চালু করা হয়েছিল। পলিসিটির বড় সুবিধা হচ্ছে, কেউ চাইলে মেয়াদ শেষে এককালীন শতভাগ বা ৫০ শতাংশ টাকাও তুলে নিতে পারেন। বঙ্গবন্ধু সর্বজনীন পেনশন বীমায় যেসব সুবিধা ছিল, সেগুলো নতুন নামের পলিসিতেও বহাল রেখেছে জীবন বীমা করপোরেশন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পলিসিটির নাম বদলে ফেলা হয়।
জানতে চাইলে জীবন বীমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মুহিবুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, তিনি নতুন এসেছেন। তবে নামের পরিবর্তন হলেও পলিসিটির আওতায় গ্রাহকদের জন্য সুযোগ-সুবিধা আগের মতোই রাখা আছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব অনুযায়ী দেশে ১৭ কোটি মানুষ আছেন। এর মধ্যে ২০ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১১ কোটি। বিবিএসের তথ্যই বলছে, দেশে দ্রুতগতিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এসব কথা উল্লেখ করে জীবন বীমা করপোরেশন বলছে, বয়স্ক মানুষের অবসরজীবন নিরুদ্বেগ, সচ্ছল ও শান্তিময় করার জন্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী তথা ‘মুজিব বর্ষ’ পালন উপলক্ষে চালু করা হয় ‘বঙ্গবন্ধু পেনশন বিমা পলিসি (লাভসহ)।
২০ থেকে ৬০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা মেয়াদি সুবিধাযুক্ত এই পেনশন বিমা পলিসি কিনতে পারেন। এর প্রিমিয়াম পরিশোধ করা যাবে দুইভাবে—বছরে দুবার (ষাণ্মাসিক পদ্ধতি) অথবা বার্ষিক পদ্ধতিতে। বীমার মেয়াদ সর্বনিম্ন ৫ বছর ও সর্বোচ্চ ৬৫ বছর। অর্থাৎ পেনশন পাওয়ার শুরুর বয়স ৫৫ থেকে ৬৫ বছর। এ পলিসিতে বীমার অঙ্ক সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা। সর্বোচ্চ বীমার অঙ্ক নির্দিষ্ট করে বলা নেই। এটা হবে গ্রাহকের সামর্থ্য অনুযায়ী।
বীমা গ্রাহকের ইচ্ছা অনুযায়ী ১০, ১৫ বা ২০ বছর মেয়াদ পর্যন্ত গ্যারান্টিযুক্ত (নিশ্চয়তাযুক্ত) পেনশন নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। পেনশন কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত তারিখের আগে বীমা গ্রাহক মারা গেলে পূর্ণ বীমা অঙ্ক বোনাসসহ পাবেন তাঁর নমিনি। আর পেনশন দেওয়া শুরুর পর বীমা গ্রাহক মারা গেলে নমিনি পেনশন পাবেন বাকি মেয়াদের জন্য।
মেয়াদি সুবিধাযুক্ত পেনশন বীমার মরণোত্তর দাবির টাকা সম্পূর্ণ আয়করমুক্ত। এ বীমার সঙ্গে অতিরিক্ত সুবিধার বিমাও (সাপ্লিমেন্টারি বেনিফিট) নেওয়া যাবে। প্রিমিয়ামের ওপরও আয়কর রেয়াতের সুযোগ রয়েছে।
একটি উদাহরণ ও অনেক প্রশ্নের জবাব
মেয়াদি সুবিধাযুক্ত পেনশন বীমা চালু হওয়ার পর অর্থাৎ বীমা চলাকালে যেকোনো সময় গ্রাহকের অকালমৃত্যু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে পূর্ণ বীমা অঙ্ক ও চালু মেয়াদের অর্জিত বোনাসসহ পাবেন ওই গ্রাহকের নমিনি। মেয়াদ শেষে বোনাসসহ মেয়াদোত্তীর্ণ দাবি এককালীন ১০০ শতাংশ তোলা যাবে। এর বিকল্প সুযোগও আছে। কেউ দাবির ১০০ শতাংশ অর্থ তুলে নিতে না চাইলে মেয়াদ শেষে ৫০ শতাংশও নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বাকি টাকা মাসিক ভিত্তিতে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বীমা গ্রাহকের ইচ্ছা অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদ অর্থাৎ ১০, ১৫ বা ২০ বছর মেয়াদে পেনশন নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
জীবন বীমা করপোরেশন বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছে। যেমন ৩৫ বছর বয়সী কেউ যদি তাঁর ৫৫ বছর বয়স পূর্তির পর মাসিক পেনশন নিতে চান, সে ক্ষেত্রে তাঁর দেওয়া প্রিমিয়াম, প্রাপ্য বীমা অঙ্ক ও বোনাস, মাসিক পেনশন, মোট প্রাপ্তি এবং সুবিধা কেমন হবে, তার চিত্র উল্লেখ করা আছে। অর্থাৎ, বীমার অঙ্ক যদি ১০ লাখ টাকা হয়, তাহলে প্রতি হাজারে ৩৫ বছর বয়সী গ্রাহককে বীমার প্রিমিয়াম দিতে হবে ৪৯ দশমিক ৬৫ টাকা হারে। সে হিসাবে বার্ষিক প্রিমিয়াম দাঁড়াবে ৪৯ হাজার ৬৫০ টাকা। আর ৫৫ বছর পর্যন্ত তাঁর মোট জমা হবে ৯ লাখ ৯৩ হাজার টাকা।
এই পলিসির বিপরীতে একটি বোনাস হার তৈরি করে রেখেছে জীবন বীমা করপোরেশন। করপোরেশনের বিদ্যমান বোনাস হার অনুযায়ী বীমা অঙ্কের সঙ্গে বোনাস যোগ করে গ্রাহকের প্রাপ্য বীমা অঙ্ক ও সম্ভাব্য বোনাস দেবে। সে ক্ষেত্রে বীমা অঙ্ক ১০ লাখের সঙ্গে বোনাস যোগ হবে ১০ লাখ ৪০ হাজার এবং গ্রাহকের মোট প্রাপ্য দাঁড়াবে ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
যেভাবে মিলবে মাসিক পেনশন
বিমা অঙ্ক ও বোনাস মিলে ওই গ্রাহকের মোট প্রাপ্য দাঁড়াবে ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এখন প্রশ্ন হলো, তা থেকে পেনশন পাওয়া যাবে কীভাবে? এ প্রশ্নের জবাব দিতে তিন মেয়াদের জন্য তিন ধরনের পেনশনের হার ঠিক করেছে জীবন বীমা করপোরেশন। ১০ বছর মেয়াদে পেনশন হবে মাসে ২৩ হাজার ৩৮৬ টাকা, আর মোট মেয়াদে পেনশন দাঁড়াবে ২৮ লাখ ৬ হাজার ৩২০ টাকা।
এ ছাড়া ১৫ বছর মেয়াদে মাসিক পেনশন হবে ১৮ হাজার ৩৪ টাকা ও মোট মেয়াদে ৩২ লাখ ৪৬ হাজার ১২০ টাকা এবং ২০ বছর মেয়াদে মাসিক পেনশন ১৫ হাজার ৫০৪ টাকা এবং মোট মেয়াদে ৩৭ লাখ ২০ হাজার ৯৬০ টাকা।
জানতে চাইলে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য মো. গোলাম মোস্তফা জানান, জীবন বীমা করপোরেশনের এ পলিসি সম্পর্কে তিনি অবগত নন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D