ইতালি যাওয়ার পথে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু

প্রকাশিত: ৮:০৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪

ইতালি যাওয়ার পথে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু

অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় লিবিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। তাদের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারে। দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে গ্রামের বাড়িতে চলছে মাতম। কান্নায় ভেঙে পড়ছে স্বজনরা।

এ ঘটনায় দালালের কঠোর শাস্তি দাবি করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

একসঙ্গে দুই সন্তানের মৃত্যু, কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না মা মায়া বেগম। আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ।

দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরে বাড়িতে ছুটে আসছে পাড়া-প্রতিবেশীও। কোনো সান্ত্বনাই থামাতে পারছে না স্বজনদের কান্না। এ ছাড়া ইতালি যাওয়ার পথে ডাসার উপজেলার চার গ্রামের আরো ৭-৮ যুবক চার মাস ধরে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।

স্বজনরা জানায়, মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরহাদ মাতুব্বর সহজে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেন।

এতে ধার দেনা করে ৩০ লাখ টাকা দালালের হাতে তুলে দেয় স্বজনরা। একদিকে স্বজন হারানোর শোক, অন্যদিকে ঋণের টাকা পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দুই ভাইয়ের পরিবার। এ ঘটনায় জড়িত দালালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে স্বজন ও এলাকাবাসী।

ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত ফরহাদ মাতুব্বর। ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এদিকে নিহত মিলনের পরিবারের মা-বাবা স্ত্রী ও তিন বছরের এক ছেলে রয়েছে। আর আল আমিনের সংসারে স্ত্রী ও এক বছরের এক ছেলে রয়েছে।

ছেলে হারা মা মায়া বেগম বলেন, ‘ফরহাদ চেয়ারম্যান প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নেন। তখন বলেছিলেন, সুন্দরভাবে আমার দুই ছেলেকে ইতালি পাঠাবেন। কিন্তু এভাবে আমার দুই ছেলের মৃত্যু হবে, এটা মেনে নিতে পারছি না। এই ঘটনার বিচার চাই। আর ধারদেনা পরিশোধে সরকারের সহযোগিতা চাই।’

মিলন ও আল আমিনের খালা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘একসঙ্গে দুই ভাইয়ের মৃত্যু, এটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল ওই দুই ভাই। দালাল ফরহাদ মাতুব্বর এই ঘটনার জন্য দায়ী, এর বিচার চাই।’

ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ইতালি যাওয়ার পথে দুই ভাইয়ের মৃত্যুর খবরটি জানতে পেরেছি। নিহতের পরিবার থেকে এখনো কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ আসলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাশ জানান, মিলন ও আল আমিনের পরিবার থেকে এখনো বিষয়টি প্রশাসনকে জানায়নি। তবে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ ছাড়া মানবপাচারের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট