১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৩৬ অপরাহ্ণ, জুন ৩০, ২০২৪
জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট পাস হয়েছে। আগামীকাল সোমবার থেকেই নতুন এই বাজেট কার্যকর হবে।
রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী সংসদে প্রস্তাবিত বাজেট পাসের জন্য নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৪ সংসদে উপস্থাপন করলে সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে কণ্ঠভোটে তা পাস করেন।
এর আগে অধিবেশনে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন।
মঞ্জুরি দাবিগুলোও সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়।
সংসদে মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে বিরোধীদলের ছয়জন সংসদ সদস্য মোট ২৫১টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় খাতে তিনটি মঞ্জুরি দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর স্বতন্ত্র ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো নাকচ হয়ে যায়।
ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করেন জাতীয় পার্টির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, স্বতন্ত্র সদস্য হামিদুল হক খন্দকার, পংকজ নাথ, আবুল কালাম ও নাসের শাহরিয়ার জাহেদী।
এরপর সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়ে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০২৪ পাসের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করেন।
এবারের বাজেটে বৈশ্বিক মহামারি করোনা (কভিড-১৯) পরবর্তী অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং চলমান যুদ্ধ ও সংঘাতের কারণে বৈশ্বিক মন্দা সফলভাবে মোকাবিলা করে চলমান উন্নয়ন বজায় রাখা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ স্লোগান সম্বলিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাজেট প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। চলতি সংসদের তৃতীয় অধিবেশনে উত্থাপিত প্রস্তাবিত এই বাজেটের ওপর গত কয়েক সপ্তাহে, প্রস্তাবিত বেশকিছু নীতি নিয়ে সংসদে আলোচনা-সমালোচনা হয়। তাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখার নীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হলেও তা বহাল রাখা হয়েছে।
এবারের বাজেটে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে চার লাখ ৬৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে ৬১ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত ১৫ হাজার কোটি টাকা, কর ব্যতিত প্রাপ্তি ৪৬ হাজার কোটি টাকা। সামগ্রিক বাজেট ঘাটতি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা দেখানো হয়েছে, যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ছিল জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ।
এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক ঋণ থেকে ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা আহরণ করা হবে। বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ঋণ পরিশোধ খাতে ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি রাখা হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, ব্যাংক বহির্ভূত উৎস থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আট হাজার কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাজেটে সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই লাখ ছয় হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ। এর মধ্যে মানবসম্পদ খাতে (শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৮৮ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা।
ভৌত অবকাঠামো খাতে দুই লাখ ১৬ হাজার ১১১ কোটি টাকা বা ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ; যার মধ্যে সার্বিক কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ৯৫ হাজার ২৮৩ কোটি; যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ৮০ হাজার ৪৯৮ কোটি এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ৩০ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা।
সাধারণ সেবা খাতে এক লাখ ৬৮ হাজার ৭০১ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ২১ দশমিক ১৭ শতাংশ।
সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি), বিভিন্ন শিল্পে আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি, রাষ্ট্রায়ত্ত, বাণিজ্যিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য ব্যয় বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮৩ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১০ দশমিক ৪৮ শতাংশ; সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ; নিট ঋণদান ও অন্যান্য ব্যয় খাতে ৮ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১ দশমিক ০৮ শতাংশ।
বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
এর আগে বাজেট প্রস্তাবে ওপর ১১ দিন আলোচনা শেষে শনিবার (২৯ জুন) সংসদে পাস হয়েছে জাতীয় অর্থবিল-২০২৪। এই বিল পাসের মাধ্যমে বাজেটের আর্থিক ও কর প্রস্তাব সংক্রান্ত বিধি-বিধান অনুমোদন করা হয়।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D