শতবর্ষী রশিদার বাড়ীতে ঈদ উপহার নিয়ে ইউএনও রুমাইয়া

প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২৪

শতবর্ষী রশিদার বাড়ীতে ঈদ উপহার নিয়ে ইউএনও রুমাইয়া

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের ভিত্রিখেল পূর্ব গ্রামের শতবর্ষী এক বৃদ্ধার ইচ্ছা পূরণে তার বাড়ীতে ঈদ উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হলেন জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া।

রশিদা বেগম পূর্ব ভিত্রিখেল গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর স্ত্রী। ৩ কন্যা সন্তানের বড় দুইজন মারা গেছে। এখন একমাত্র ছোট মেয়ে কুলসুমা বেগম বেঁচে আছে। বড় মেয়ের পরিবারের সাথে তিনি থাকেন।

জৈন্তাপুর উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা তিষাণ আক্তার জানান, গত মাসে তথ্যসেবা কেন্দ্র জৈন্তাপুর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে পূর্ব ভিত্রিখেল গ্রামের মহিলাদের নিয়ে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেদিনের বৈঠকে গ্রামের বিভিন্ন মহল্লা থেকে মহিলারা এসে উঠান বৈঠকে যোগ দেয়। কিছুক্ষণ পর তিনি লক্ষ্য করেন বৈঠকে লাঠি হাতে একজন বৃদ্ধাও অংশ গ্রহণ করে।

পরে তথ্যসেবা কর্মকর্তা তার মেয়ে কুলসুমা বেগমের নিকট জানতে পেরেছেন উঠান বৈঠকে ইউএনও মহোদয়কে দেখতে তার মা এসেছিলেন।

কুলসুমা বেগম জানান, উঠান বৈঠকের আগের দিন তার বড়বোনের বাড়ীতে গিয়ে মা রশিদা বেগমকে বলেন, আগামীকাল উপজেলার সবচেয়ে বড় অফিসার আমাদের বাড়ীতে আসবে। তিনি একজন মহিলা। সেটা শোনার পর তার মা মহিলা অফিসারকে দেখার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং অসুস্থ শরীল নিয়ে পরদিন ছোট মেয়ের বাড়ীতে উঠান বৈঠকে আসেন। কিন্তু সেই দিন উঠান বৈঠকে তথ্যসেবা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা তথ্যআপা তিষাণ আক্তার বলেন, ইউএনও মহোদয়ের বৈঠকে আসার কোন সিডিউল ছিলো না। কিন্তু তারা ভেবে নিয়েছিলো স্যার হয়তো ওইদিন আসবেন। পরে বৈঠক শেষে উপজেলায় গিয়ে ইউএনও মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করলে তিনি রশিদা বেগমের বাড়ীতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

১৪ জুন শুক্রবার দূপুর ১২ টায় জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া শতবর্ষী রশিদা বেগমকে দেখতে তার বাড়ীতে যান। এ সময় তিনি আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে তার জন্য ঈদের পোষাক ও খাদ্য সামগ্রী উপহার হিসেবে নেন। এ সময় রশিদা বেগম ইউএনও’কে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন এবং বার বার মাথায় হাত বুলাতে থাকেন।

পরে রশিদা বেগম বলেন, আজ আমি খুব খুশি হয়েছি। আমার মেয়ে কুলসুমা বলেছিলো আমাকে দেখতে তিনি আসবেন। তাই আমি অপেক্ষায় ছিলাম। এ সময় তিনি তার স্নাতক পড়ুয়া নাতনীর জন্য একটি চাকরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার সুপারিশ করেন।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালিক রুমাইয়া বলেন, আরও আগে আসার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু হঠাৎ করে বন্যাসহ সামগ্রিক ব্যস্ততার কারণে আসতে দেরী হয়েছে। তিনি জানান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রশিদা বেগমকে দেখতে রওয়ানা হয়েছিলেন। কিন্তু চতুল বাজারের কোরবানির পশুর হাঁট বসায় গাড়ী নিয়ে প্রবেশ করতে না পেরে ফিরে যান। তাই আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রশিদা বেগমের ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে দেখতে তার বাড়ীতে এসেছেন। তিনি আরো বলেন রশিদা বেগমের ইচ্ছা অনুযায়ী তার নাতনীর বিষয়টি তিনি বিবেচনা করবেন। সেই সাথে তার মেয়েকে স্বাবলম্বী ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতে একটি ক্ষুদ্র হাঁস মুরগীর খামার করে দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন রশিদা বেগমের পরিবারের সাথে আলাপ করে নিশ্চিত করা হয়েছে তার বয়স শতবর্ষ এর কাছাকাছি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলা তথ্যসেবা কর্মকর্তা তিষাণ আক্তার সহ রশিদা বেগমের পরিবারের সদস্যরা।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট