৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:২১ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৬
বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিশ্ববাসীর সমর্থন চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসীরা সমূলে উৎখাত হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ভোরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণটি বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করে।
সাম্প্রতিক গুলশান হামলার বিষয়টি জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ভয়ঙ্কর ঘটনা বাংলাদেশের জনগণের মনে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে আমরা এই নতুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি।’
এই হামলা দেশীয় উগ্রপন্থিদের দ্বারা সংঘটি বলে উল্লেক করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, দেশীয় উগ্রপন্থিদের ওই হামলার পর জনগণকে সচেতন করতে সরকারের গৃহীত কর্মসূচি এবং তাতে সাড়া পেয়ে তিনি আশাবাদী, বাংলাদেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসীরা সমূলে উৎখাত হবে।
‘আমি সন্ত্রাসী এবং উগ্রবাদীদের অর্থ ও অস্ত্র-শস্ত্রের জোগান বন্ধ এবং তাদের প্রতি নৈতিক এবং বৈষয়িক সমর্থন না দেওয়ার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়কে আহ্বান জানাচ্ছি,’ বলেন শেখ হাসিনা।
সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চ্যালেঞ্জগুলো এখন কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ না থেকে বিশ্বের সব স্থানেই ছড়িয়ে পড়ছে। কোনো দেশই আপাতদৃষ্টিতে নিরাপদ নয়, কোনো ব্যক্তিই সন্ত্রাসীদের লক্ষ্যবস্তুর বাইরে নয়।
তিনি বলেন, আমেরিকা থেকে ইউরোপ, আফ্রিকা থেকে এশিয়ায় অগুনতি নিরীহ মানুষ সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে।
সন্ত্রাসীদের সমূলে উৎখাতের সংকল্পে বিশ্ববাসীর ঐক্যবদ্ধ থাকার উপর জোর দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের মূল কারণগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। একইসঙ্গে এদের পরামর্শদাতা, মূল পরিকল্পনাকারী, মদদদাতা, পৃষ্ঠপোষক, অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী এবং প্রশিক্ষকদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এক যুগ আগে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও সহিংস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তার সরকারের ‘জিরো টলারেন্স নীতি’র বিষয়টি বিশ্বনেতাদের কাছে আবারো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে যেসব সন্ত্রাসী গ্রুপের উদ্ভব হয়েছে, তাদের নিষ্ক্রিয় করা, তাদের নিয়মিত অর্থ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা এবং বাংলাদেশের ভূখ- থেকে আঞ্চলিক সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম নির্মূল করার ক্ষেত্রে আমাদের সরকার সফল হয়েছে।’
সংঘাত বন্ধ করে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় সব দেশকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, ‘এখনো আমাদের এই বিশ্ব উত্তেজনা এবং ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে মুক্ত নয়। বেশ কিছু স্থানে সহিংস-সংঘাতের উন্মত্ততা অব্যাহত রয়েছে। অকারণে অগণিত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে।’
এই প্রসঙ্গে আবেগঘন কণ্ঠে গত বছর সিরিয়ার শিশু আইলান কুর্দির সাগরে ডুবে মারা যাওয়া এবং সম্প্রতি আরেক শিশু ওমরানের আহত হওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, কী অপরাধ ছিল সাগরে ডুবে যাওয়া সিরিয়ার ৩-বছর বয়সী নিষ্পাপ শিশু আইলান কুর্দির? কী দোষ করেছিল ৫-বছরের শিশু ওমরান, যে আলেপ্পো শহরে নিজ বাড়িতে বসে বিমান হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে? একজন মা হিসেবে আমার পক্ষে এ সকল নিষ্ঠুরতা সহ্য করা কঠিন। বিশ্ব বিবেককে কি এসব ঘটনা নাড়া দেবে না?’
দুদিন আগে জাতিসংঘে অভিবাসী ও শরণার্থী বিষয়ক সম্মেলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, এই সম্মেলনের ফলাফল বর্তমান সময়ে অভিবাসনের ধারণা এবং বাস্তবতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করতে সাহায্য করবে।’
শান্তির পক্ষে বাংলাদেশের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকায় ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা কেন্দ্র’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত সহিংসতার কবল থেকে বেরিয়ে আসা দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ করে দিবে।’
মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া পুনরায় চালু ও ভ্রাতৃপ্রতিম ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বৈরিতা নিরসনে সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাগুলোকে সঠিক দিকে পরিচালিত করার উপর জোর দেন তিনি।
নির্বিচারে হত্যার ক্ষেত্রে দায়বদ্ধতা ও বিচার নিশ্চিত করতে জাতীয় বিচারিক প্রক্রিয়ার ভূমিকাকে গুরুত্ব দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের চলমান বিচারের কথাও বলেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য স্থানীয় অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা বিগত কয়েক দশকের বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি।’
বিশ্ব এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে মন্তব্য করে এ থেকে উত্তরণের আশাবাদও ঝরে বাংলাদেশের সরকার প্রধানের কণ্ঠে।
তিনি বলেন, অনেক সৃজনশীল এবং প্রায়োগিক সমাধান এখন আমাদের নাগালের মধ্যে। প্রযুক্তি, নব্য চিন্তাধারা এবং বৈশ্বিক নাগরিকদের বিস্ময়কর ক্ষমতা আমাদের একটি ‘নতুন সাহসী বিশ্ব’ সম্পর্কে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D