গোয়াইনঘাটে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২৩

গোয়াইনঘাটে শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

সিলেটে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে সিদ্দিক আহমদ (৩৫) নামে এক আসামির মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রোববার (৬ আগস্ট) সিলেটের সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত সিদ্দিক আহমদ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা আদর্শগ্রামের (ঢেউনগর) মৃত মনসব আলীর ছেলে।

রায়ের পাশাপাশি পেনাল কোডের ১৮৬০ এর ৩২৩ ধারায় আরও একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৭ দিনের কারাদণ্ড এবং ৩২৪ ধারায় ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, পরিবারিক কলহের জেরে ২০২১ সালের ১৩ মে রাতের প্রথম প্রহর ১টার দিকে শ্বশুরবাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার তোয়াকুল ইউনিয়নে বীরকূলি গ্রামে বসতঘরে স্ত্রী আলিমা বেগমকে ছুরিকাঘাত করে খুন করেন সিদ্দিক আহমদ। মেয়ের চিৎকার শুনে শাশুড়ি ফুলতেরা বেগম এগিয়ে গেলে তার কপালেও ছুরিকাঘাত করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন নিহতের বাবা নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।

বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, ঘটনার প্রায় ৬ বছর আগে তার মেয়ে আলিমা বেগমের সঙ্গে সিদ্দিক আহমদের বিয়ে হয়। তাদের মাহের (৪) নামে এক শিশু সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে আলিমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো সিদ্দিক আহমদ।

ঘটনার আগের দিন ২০২১ সালের ১২ মে সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্ত্রীকে নিতে শ্বশুরালয়ে আসেন সিদ্দিক আহমদ। রাত হয়ে গেলে তাকে থাকতে বলেন শ্বশুর-শাশুড়ি এবং পরদিন সকালে আলিমাকে তার বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। তাদের কথামতো থেকে রাত সাড়ে ১১টার দিকে খাওয়া দাওয়া শেষে সিদ্দিক ও আলিমা ঘুমাতে যান। রাত ১টার দিকে আলিমা চিৎকার দিয়ে বলে, আম্মা আমাকে বাঁচাও। চিৎকার শুনে ফুলতেরা বেগম দৌড়ে গিয়ে দেখতে পান তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে ছুরিকাঘাত করছে জামাতা সিদ্দিক। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও ছুরিকাহত হন। প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে তাৎক্ষণিক আলিমাকে হাসপাতালে নিতে না পারায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার উপ-পরিদর্শক খালেদ মিয়া ২০২১ সালের ২৯ জুলাই একমাত্র সিদ্দিক আহমদকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলাটি অত্র আদালতে বিচারের জন্য দায়রা ৫২৪/২২ মূলে রেকর্ড করা হয়। ২০২২ সালের ৮ জুন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর দীর্ঘ শুনানিতে ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন এবং আসামি পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রের নিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট জ্যোস্না ইসলাম।