পোশাক সমাচার

প্রকাশিত: ১:০০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১

পোশাক সমাচার

Manual1 Ad Code

মোহাম্মদ সোহাগ আলী : আদিম যুগে পোশাক আবিষ্কারের পূর্বে মানুষ বন্যপ্রাণী ও কীট-পতঙ্গের আক্রমণ প্রতিরোধে, বৈরী আবহাওয়া থেকে আত্মরক্ষার তাগিদে গাছের বাকল, ঘাস, পশুর চামড়া ইত্যাদি দিয়ে নিজেদের শরীর ঢাকার চেষ্টা করত। সময়ের পরিক্রমায়, সংঘবদ্ধ জীবনযাপনের সাথে সাথে পোশাকটা হয়ে গেল সমাজ-সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। সভ্যতার ক্রম-বিকাশের সাথে সাথে সামাজিক পদমর্যাদা, পেশা, ব্যক্তিত্ব, সৌন্দর্য ইত্যাদি প্রকাশের মাধ্যম হয়ে গেল পোশাক। যদিও সমাজে সমাজে পোশাকের ধরণের তারতম্য পরিলক্ষিত হয় তবুও পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ পাওয়া যাবে না যার মধ্যে সহজাতভাবে লজ্জাস্থান আবৃত রাখার অনুভূতি কাজ করে না।
Manual1 Ad Code


এ অনুভূতি জন্মগতভাবে সবাই পেয়েছে সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে। তাইতো বহু দার্শনিক পোশাক পরিধানের কারণ হিসেবে ইতিহাসের সাথে ধর্মীয় নীতিবোধকে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। পৃথিবীর কিছু কিছু জায়গায় জনসম্মূখে সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে চলাফেরার নির্লজ্জ সংস্কৃতিও বিরাজমান। এটাকে ন্যূনতম বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন কোন মানুষ ‘সভ্য সমাজ’ বলে স্বীকার করে না । সাম্প্রতিক সময়ে ফ্যাশনের নামে পোশাক পরিধানে চলছে নির্লজ্জ উলঙ্গপনা ও বেহায়াপনা। সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির বাঁধভাঙা স্রোতে সবাই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের গেঞ্জি-জিন্স প্যান্ট ফ্যাশন, আঁটসাট ও কোমর পর্যন্ত কাটা ফ্রকের সাথে স্কিন-টাইট পাজামা; এককথায় দেহ প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতা আর অতি সাম্প্রতিক ছেলেদের হাফ প্যান্ট সংস্কৃতির প্রসার (মেয়েদের কথা বাদই দিলাম) এসব উলঙ্গপনা শুধু পাশ্চাত্যের বস্তাপঁচা অপসংস্কৃতির অংশ হতে পারে, কোনভাবেই তা মুসলিম সংস্কৃতির অংশ হতে পারে না। যেনা-ব্যাভিচার, ধর্ষণ, খুন ইত্যাদির পেছনে কিন্তু অশালীন ও উচ্ছৃঙ্খল পোশাকই বহুলাংশে দায়ী। আল্লাহ তা’লা আল-কোরআনে মুমিন নারীদের জিলবারের (ঢিলেঢালা পোশাক) কিয়দাংশ নিজেদের উপর ঝুলিয়ে নিতে বলেছেন। এতে তারা উৎপীড়িত হবে না বলেও উল্লেখ করেছেন। (সূরা আহযাব : ৫৯) ইসলাম সুনির্দিষ্ট কিছু পোশাককে সাপোর্ট না দিয়ে পোশাক পরিধানের সাধারণ কিছু নিয়মনীতি বেঁধে দিয়ে উন্নত আদর্শ ও উদারতার পরিচয় দিয়েছে।


সংক্ষেপে নিয়মনীতিগুলো হল ঃ ১। পুরুষের নাভী হতে হাঁটু আর নারীদের সমগ্র শরীর আবৃত রাখা। ২। নারী-পুরুষ একে অন্যের বেশ ধারণ করবে না। ৩। পুরুষদের স্বর্ণালঙ্কার ও রেশমী পোশাক না পরা। ৪। ময়লা কাপড় না পড়া। ৫। দেহাবয়ব প্রকাশ ঘটে এমন আঁটসাট বা পাতলা কাপড় না পরা ইত্যাদি। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে বলেছেন, “সর্বোত্তম পোশাক হলো তাকওয়ার পোশাক।” (সূরা আরাফ:২৬) পরিশেষে প্রত্যাশা একটাই, মুসলিম নরনারী বিজাতীয় ও অশালীন ফ্যাশন বাদ দিয়ে শালীন ও তাকওয়ার পোশাক পরিধান করবে এবং এতেই রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি।

Manual4 Ad Code


লেখক-ব্যাংকার, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, লালদিঘিরপার শাখা, সিলেট।


এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code