শিশুর টনসিল হলে করণীয়…

প্রকাশিত: ১১:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০১৬

আপনার ছোট্ট সোনামনির যে গলা ব্যথা শুরু হয়েছে, দেখা দিয়েছে টনসিলের সমস্যা। সে কোনো খাবার মুখে তুলতে পারছে না, বার বার কান্না করছে।
বিশেষ করে শীতে এ শিশুদের মধ্যে এ সমস্যাটা বেশি দেখা যায়। গলায় ব্যথা হলে কথা বলা, খাবার খাওয়া এমনকি পানিপানেও কষ্ট হয়।

এবার আসুন তাহলে যেনে নেই শিশুদের টনসিল হলে কি করতে হবে!

টনসিল ও এডিনয়েড এক ধরনের লসিকাগ্রন্থি, যা আমাদের গলার ভেতরে শ্বাস ও খাদ্যনালীর মুখে অবস্থিত। শ্বাস ও পরিপাকতন্ত্রের প্রবেশপথে প্রহরী হিসেবে টনসিল ও এডিনয়েড কাজ করে।

এরা খাদ্য ও বায়ুবাহিত ক্ষতিকারক পদার্থ ও রোগজীবাণু ধ্বংস করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এ সময়েই শিশুরা টনসিল ও এডিনয়েডের প্রদাহে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। এডিনয়েড সাধারণত বয়ঃসন্ধিক্ষণে ছোট হয়ে যায় এবং পরবর্তী সময়ে বিলীন হয়ে যায়।

শিশুরা সাধারণত টনসিল ও এডিনয়েডের প্রদাহ ছাড়াও টনসিলের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিসহ জটিল রোগেও আক্রান্ত হয়।

চিকিৎসকের মতে, শিশুর দুর্বল স্বাস্থ্য, অপুষ্টি, এলার্জি জনিত অসুখ কারণে টনসিল প্রদাহ বাড়তে পারে। দাঁত, নাক ও সাইনাসের প্রদাহ এবং ঠাণ্ডার কারণে এ রোগ দেখা দেয়।

ভাইরাস ও বিভিন্ন ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও শ্বাসতন্ত্রের উপরিভাগের বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় অবহেলা এ রোগের কারণ। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এ রোগ শিশুদের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে।

লক্ষণ

* এ রোগে শিশুরা সাধারণত কিছু খেতে চায় না।

* গলায় তীব্র ব্যথা এবং ঢোক গিলতে কষ্ট হয়।

* শরীরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পায়।

* জ্বরের সঙ্গে অনেক সময় কাঁপুনি, খিচুনি, মাথাব্যথা ও সারা শরীরে ব্যথাও থাকে।

* গলার উপরিভাগের লসিকাগ্রন্থি ফুলে যায় ও ব্যথা থাকে। সর্দি থাকা, নাক বন্ধ থাকা, নাকের নিঃসরণ, মুখে দুর্গন্ধ, খাওয়া-দাওয়ায় অরুচি এবং গলার উপরিভাগের লসিকাগ্রন্থি সব সময় ফুলে থাকে।

* শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রতিবন্ধকতা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে তাদের শ্বাস ও হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন রোগ হতে পারে। যেমন- পালমোনারি হাইপারটেনশন, হৃদরোগ এবং হঠাৎ হৃদযন্ত্রে ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়ে ঘুমের মধ্যে মৃত্যুও ঘটার আশংকা থাকে।

চিকিৎসা

এ রোগ দেখা দিলে সবার আগে ঠাণ্ডা খাওয়া পরিহার করতে হবে। দাঁত ও মুখের সঠিক পরিচর্যা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস, হালকা শরীরচর্চা করতে হবে।

দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ ও প্রতিবন্ধকতা জনিত সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে। সমস্যা গুরুতর হলে টনসিল ও এডিনয়েড অপারেশনের মাধ্যমে ফেলে দেয়াই ভালো।

শিশু বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা।