‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দিন’

প্রকাশিত: ২:৩৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০১৮

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার ঘোষণা দিয়ে সরকারের জনপ্রিয়তার প্রমাণ করবেন বলে আশা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এ কথা বলেন। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সালমান ওমর রুবেলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মওদুদ বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রীকে গণসংবর্ধনা দেয়া হবে। সরকারি খরচে বিশাল আয়োজন সম্পন্ন করা হচ্ছে, তাতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদেরকেও একইভাবে সমাবেশ করতে দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে অনেক লোক হবে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হবে তিনি এবং তার দল অনেক জনপ্রিয়। আমরা আশা করব, এই জনপ্রিয়তা প্রমাণের জন্য আজকের গণসংবর্ধনা থেকে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।

মওদুদ বলেন, ‘আমরা চাই, আজকে প্রধানমন্ত্রী, তার এত জনপ্রিয়তা, এই দলের এত জনপ্রিয়তা, এই সরকারের এত জনপ্রিয়তা। সুতরাং তিনি ঘোষণা দেবেন আজকে যে, আগামী নির্বাচন হবে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ, একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। তাহলেই হবে এই বিরাট জনসভার স্বার্থকতা। আমরা সব কিছু ভুলে যাব। তার সুযোগ সুবিধা নেওয়া, বিরাট জনসভা করা, আমরা সব কিছু ভুলে যাব।’

বিএনপি নেতা আরো বলেন, সম্পূর্ণ সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়ে আওয়ামী লীগ সংবর্ধনা সমাবেশে আয়োজন করেছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলে বিএনপিকেও একই ভাবে সভা সমাবেশের অনুমতি দিতে হবে।

মওদুদ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে থাকা স্বর্ণ অনিয়মের যে রিপোর্ট গোয়েন্দা সংস্থা দিয়েছে এর দায় সরকার প্রধানকেই নিতে হবে। এ ব্যাপারে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গর্ভনরের পদত্যাগ করতে হবে।

কোটা সংস্কার নিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, চাকরির ক্ষেত্রে মেধা মূল্যায়নের জন্য কোটা সংস্কার করা যাবে না, আদালতের এমন রায় নেই।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ততা নেই এমন দাবি করে মওদুদ বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর যেই নির্যাতন করা হচ্ছে, শুধু শিক্ষার্থী নয় শিক্ষকদের উপরেও সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের কর্মীরা যেই অমানবিক আচরণ শুরু করেছে আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এর মধ্যে দিয়ে একটা জিনিসই প্রমাণ করে এই সরকার একটি অসহনশীল সরকার। এই সরকার কোনও ধরণের সমালোচনা বরদাস্ত করতে পারে না। এই কোটা আন্দোলনের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দল জড়িত না। কোনও রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনও জড়িত না। এটা সম্পূর্ণ ভাবে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত একটি আন্দোলন। সরকার যতই চেষ্টা করুক এটাকে ঠেকাতে পারবেনা। কারণ এই লাখ লাখ শিক্ষার্থীর আশা আকাঙ্খা হলো মেধার ভিত্তিতে চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া। তাদের পিতামাতা এতো কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েও তারা চাকরি পায়না কোটার কারণে।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কোথাও বলা নেই যে কোটা সংস্কার করা যাবে না এমন দাবি করে মওদুদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত ১১ এপ্রিল সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন কোটা বাতিল করে দিলাম। এখন আবার তিনি বলছেন কোটা পদ্ধতি থাকতে হবে। উনি সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বলছেন রায়ের বিরুদ্ধে যাওয়া যাবে না। কিন্তু আমি আপনাদের বলতে চাই প্রধানমন্ত্রীকে সঠিকভাবে জানানো হয় নাই যে সুপ্রিম কোর্টের এমন কোনও রায় নাই। যেখানে বলা আছে কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা যাবে না। এই ধরণের কোনও রায় যদি দেখাতে বলা হয় পারবেন না তারা। এই রায়ের অজুহাত দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী যেই ওয়াদা দিয়েছিলেন তার থেকে সরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রীকে ভুল বুঝানো হয়েছে, এমন কোনও রায় নেই।

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট