গাজীপুর সিটির ৩০৪ কেন্দ্রের ফলাফল

প্রকাশিত: ১২:৩০ পূর্বাহ্ণ, জুন ২৭, ২০১৮

গাজীপুর সিটির ৩০৪ কেন্দ্রের ফলাফল

নৌকা ৩১১৪৫২, ধানের শীষ ১৪৫৯৩৭ ভোট

গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট গণনা চলছে। এর আগে সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এদিকে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করেছেন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট ৪২৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৩০৪ কেন্দ্রের ফলাফলে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৪৫৯৩৭ ভোট। আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩১১৪৫২ ভোট। এছাড়া অনিয়মের অভিযোগে নয়টি ভোটকেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে।

এই নির্বাচনে অন্তত ১০০টি ভোট কেন্দ্র আওয়ামী লীগ দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দীন সরকার। অপরদিকে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু ভোট হয়েছে বলে দাবি করেছেন।

পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, সব শেষ অনিয়মের অভিযোগে নয়টি ভোটকেন্দ্র স্থগিত করা হয়েছে। আর একটি কেন্দ্রে আধা ঘণ্টার জন্য ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছিল।

বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার বলেছেন, গাজীপুরবাসী ৮০ বছরের ইতিহাসে এমন ভোট ডাকাতি দেখেনি। নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ৪’শর অধিক কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতি হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্বরূপ উন্মোচন করার জন্যই বিএনপি নির্বাচন বয়কট করেনি বলে জানান হাসান সরকার।

তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কেন্দ্র দখল ও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে একচেটিয়াভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে গাজীপুরে। বিএনপির এজেন্টদের জোরপূর্বক কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারেনি। এমন ভোট ইতোপূর্বে গাজীপুরবাসী দেখেনি। এমন নির্বাচনের মাধ্যমে কমিশনকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এর আগে নির্বাচন চলাকালেই ভোট স্থগিতের দাবি করেছিলেন হাসান উদ্দিন সরকার।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৪২৫ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে প্রায় ৪০০ কেন্দ্র দখল করে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকেরা সিল মেরেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বেলা সোয়া চারটার দিকে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এর আগে দ্বিতীয় দফা সংবাদ সম্মেলন করে দুইশতাধিক ভোট কেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

এসময় রিজভী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তারা অবৈধ সরকারের নীল নকশা বাস্তবায়নে মূল কাণ্ডারি হয়ে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ৫৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যে একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে ৫৭টির মধ্যে ৫৬টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন ও সংরক্ষিত ১৯ নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন এবং একটি মেয়র পদের জন্য সাতজন প্রার্থী এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। ৩ পদে ৩৪৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থীরা হলেন-আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের মো. জাহাঙ্গীর আলম, ২০ দলীয় জোট ও বিএনপি মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মো. জালাল উদ্দিন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ আহমদ।

টঙ্গী ও গাজীপুর পৌরসভাসহ প্রায় ৩৩০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। ওই বছর ৬ জুলাই নির্দলীয় প্রতীকে হয় প্রথম নির্বাচন। ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিল।

১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন ভোটারের মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন; ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন নারী। নির্বাচনে একজন মেয়র, ৫৭ জন কাউন্সিলর এবং ১৯ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরকে নির্বাচিত করছেন ভোটাররা। ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের ২৭৬১টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ হয়। ছয়টি কেন্দ্রে (১৫৪, ১৫৫, ১৭৪, ১৭৫, ১৯১ ও ১৯২) ভোট হয় ইভিএমে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট