বাধ্য হয়েই দেশ ছেড়েছি : এসকে সিনহা

প্রকাশিত: ১০:৪৮ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০১৮

বাধ্য হয়েই দেশ ছেড়েছি : এসকে সিনহা

নিউইয়র্ক : হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যকার বিরাজমান আইনি সমস্যাগুলো সমাধানে প্রয়াসী হলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে অসমাপ্ত কাজ রেখে তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য কবে দেশে ফিরে যাচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান সাবেক এই প্রধান বিচারপতি। শনিবার নিউ ইয়র্কের কুইন্সে লোকনাথা সোসাইটি অব নিউ ইয়র্ক আয়োজিত পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি ভক্তদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।

হিন্দু আইনের সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেই ব্রিটিশ আমল থেকে হিন্দু আইনে নানা জটিলতা রয়েছে। বিচারপতি হওয়ার সুবাদে হিন্দু আইনে সংস্কার আনার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু মুসলিম বিচারপতিদের অসহযোগিতায় সেটি করা সম্ভব হয়নি। কারণ মুসলিমপ্রধান দেশ তারা চায় না ধর্মীয় আইনে হাত দিতে। অবশেষে আমাকে আমার অসমাপ্ত কাজ রেখেই বিদায় নিতে বাধ্য হতে হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় হিন্দুদের দুরবস্থার কথা তুলে ধরতে গিয়ে সিনহা বলেন, নেপাল পৃথিবীতে একমাত্র হিন্দু দেশ। কিন্তু সেখানেও এখন ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ বিরাজ করছে। সেখানে মুসলমানরা প্রভাব বিস্তার করছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে শরিয়া ল চলছে। কমিউনিস্ট সরকার হোক কিংবা মমতার সরকার হোক সেখানে একজন হিন্দু মারা গেলে তাকে পোড়ানো যাচ্ছে না।

দেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার এক মাসের মাথায় পদত্যাগ করলেও প্রকাশ্যে তেমন কোন কর্মসূচীতে আসেনি এই সাবেক প্রধান বিচারপতি। গত শনিবার হঠাৎই পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও মানবাধিকার কর্মী সিতাংশু গুহ ও কমিউনিটি নেতা নবেন্দু বাবু। দেশ ছাড়ার পর এই প্রথম কোনো জনসমাগমে তাকে বক্তব্য রাখতে দেখা গেছে। গেল প্রায় ৬ মাসের অধিক সময় ধরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে বসবাস করছেন।

এ সময় তিনি হিন্দুদের মধ্যকার অনৈক্য ও নিজ ধর্মের প্রতি বিরাগের কঠোর সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন, আমরা (হিন্দুরা) ঐক্যবদ্ধ নই। আমরা কারো নেতৃত্ব মানি না। এ ছাড়া নিজ ধর্মের প্রতি আমাদের ডেডিকেশন নেই। যার ফলে আমাদের সন্তানরা হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানে না। তিনি আরো বলেন, এই প্রবাসে নিউ জার্সিতে চারটি পরিত্যক্ত চার্চ কিনে মুসলমানরা সেখানে মসজিদ করেছে। এটি তাদের বিশ্বাস এবং ডেডিকেশনের কারণে হয়েছে। তাদের সন্তানরা শনি ও রোববার সেখানে কুরআন শিখছে। কিন্তু আমরা আমাদের সন্তানদের জন্য কিছুই করছি না। তিনি বিভাজন ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আহ্বান জানান।