১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০১৬
আজ ২৩ আগস্ট ২০১৬ জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা শাখা ৪৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার থেকে এক মিছিলের আয়োজন করে যা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম স¤পাদক নাজমুল হোসেন এর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করে শাবি শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা সদস্য মোঃ কালাম,ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ সিলেট জেলা শাখার যুগ্ম স¤পাদক সাদেক মিয়া,শাবি শাখার সাবেক সভাপতি প্রদীপ দত্ত,জাতীয় ছাত্রদল সিলেট জেলা শাখার সাবেক সভাপতি শাহিন আলম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন,সাম্রাজ্যবাদ এবং সামন্তবাদ বিরোধী লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সৃষ্টি না হওয়ায় এদেশের জাতীয় মুক্তি আসেনি তাই জনগণের প্রকৃত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষা অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে।এদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসীন হয় সাম্রাজ্যবাদের পুতুল সরকার। তাই এমন সংকটের মুহুর্তে ১৯৭৩ সালের ২৩ আগস্ট জনগণের জাতীয় মুক্তি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের আকাক্সক্ষাকে মূল ¯ে¬াগান করে প্রতিষ্ঠিত হয় বিপ্লবী ধারার ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রদল। জাতীয় ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠার যে প্রেক্ষাপট আজকে বিশ্ব রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কোনো পরিবর্তন হয়নি বরং তা আরো ¯পষ্ট থেকে ¯পষ্ট হচ্ছে। আজ জাতীয় আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষন করলে দেখা যায় যে, বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে সাম্রাজ্যবাদী উপসর্গ হতে সৃষ্ট মহামন্দা যার পরিনতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবশ্যম্ভাবী পরিনতিতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের সাফল্য এবং আফ্রো-এশিয়া ও ল্যাতিন আমেরিকার মুক্তিকামী মানুষের গণজাগরনের ভয়ে ভীত হয়ে সাম্রাজ্যবাদ নয়া-উপনিবেশিক কৌশল গ্রহণ করে এবং ষড়যন্ত্র ও সংশোধনবাদী চক্রান্তের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি আপাতত সামাল দিতে পারলেও আজ পুঁজিবাদী সাধারন সংকটের অংশ হিসেবে ২০০৮ সালে সূচিত গভীরতম মন্দা থেকে পরিত্রান পেতে সাম্রাজ্যবাদীর উদ্দীপক কর্মসূচী,কৃচ্ছতা সাধনের কর্মসূচী ইত্যাদি গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত ব্যার্থ হয়। পুঁজিবাদী চীনের প্রবৃদ্ধির শ্লথ গতি ও শেয়ার বাজার ধস বৈশ্বিক সংকটকে আরো গভীর করছে। আজ সাম্রাজ্যবাদ মন্দা থেকে বের হওয়ার প্রচেষ্টা হিসেবে বাজার ও প্রভাব বলয় পুনর্বণ্টনের লক্ষ্যে আগ্রাসী যুদ্ধের পথে অগ্রসর হচ্ছে। পুঁজিবাদের অসম বিকাশের নিয়ম অনুযায়ী পুঁজি ও শক্তির অনুপাত পরিবর্তিত হয়ে চলায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও স¤পর্কে পরিবর্তন ঘটছে। বাজার ও প্রভাব বলয় নিয়ে আন্ত:সাম্রাজ্যবাদী দ্ব›দ্ব তীব্রতর হয়ে মুদ্রাযুদ্ধ, বাণিজ্য যুদ্ধ, আঞ্চলিক যুদ্ধ ইত্যাদির ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিপদ সামনে আসছে। ইউক্রেনের পর সিরিয়াকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সাথে আমেরিকা তথা ন্যাটো জোটের দ্ব›দ্ব-সংঘাত তীব্রতর হয়ে আঞ্চলিক যুদ্ধ এমনকী বিশ্বযুদ্ধের বিপদ আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পরিস্থিতে বিশ্বব্যাপী কার্যকর তিন মৌলিক দ্ব›দ্ব তীব্র হয়ে পুঁজিবাদী,সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে শ্রম ও পুঁজির দ্ব›দ্ব তীব্রতর হয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম, ধর্মঘট বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিপীড়িত জাতি ও জনগনের সাথে সাম্রাজ্যবাদের দ্ব›দ্ব তীব্র হওয়ায় এশিয়া আফ্রিকা ও ল্যাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে শ্রমিক, কৃষক, জনগণের সংগ্রাম কোথাও কোথাও সশস্ত্র রূপে অগ্রসর হয়ে চলেছে। পুঁজিবাদী সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোতে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের এবং নয়া-উপনিবেশিক আধা-সামন্ততান্ত্রিক দেশগুলোতে জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবের সম্ভাবনা বেড়ে চলেছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির অংশ ও অধীন হিসেবে জাতীয় পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যায় যে রণ-নীতিগত গুরুত্বপূর্ণ এলাকা বাংলাদেশ সহ এতদাঞ্চলকে নিয়ে আন্তসাম্রাজ্যবাদী দ্ব›দ্ব আরো সামনে এসে পড়েছে। একক পরাশক্তি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার প্রভাব ধরে রাখার জন্য চাপ প্রয়োগের কৌশল হিসেবে জঙ্গিবাদ ইস্যুকে সামনে আনছে। প্রতিদ্ব›দ্বী সাম্রাজ্যবাদও বসে নেই। যেজন্য নানা ধরনের অস্থিরতা বেড়ে চলেছে। সাম্রাজ্যবাদের সেবাদাস আমাদের দালাল সরকারগুলো সাম্রাজ্যবাদী এই সংকটকে আড়াল করে কখনো বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদের নামে, কখনো সংসদীয় গণতন্ত্রে নামে, কখনো প্রেসিডেন্সিয়াল গণতন্ত্রের নামে, কখনো সামরিক তন্ত্রের নামে জনগণের স¤পদ তুলে দিচ্ছে সাম্রাজ্যবাদের হাতে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ গতি, গণবিরোধী স্বাস্থ্যনীতি ও শিক্ষানীতি প্রনয়ন, শ্রমিকদের জন্য অন্যায্য মজুরি কাঠামো, শিল্প পুলিশ, কৃষি ব্যবস্থা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র, ভারতকে ট্রানজিট প্রদান, সাম্রাজ্যবাদের সাথে দেশবিরোধী বিভিন্ন গোপন চুক্তি, তেল, গ্যাস, কয়লা, বিদ্যুৎ সহ খনিজ ও জ্বালানি স¤পদ সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে তুলে দিতে কয়লা নীতি, মডেল পিএসসি ও জ্বালানি নিরাপত্তা বিল পাস করেছে। বন্দর ও গভীর সমুদ্র বন্দর সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে তুলে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।
সর্বক্ষেত্রে ঢালাও দূর্নীতি ও লুটপাট গুম, খুন ও ক্রসফায়ার, শ্রমিক হত্যা ও নির্যাতন, পাহাড়ি সহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও বিভিন্ন ধর্মীয় স¤প্রদায়ের উপর দমন-নিপীড়ন, নারী ও শিশু হত্যা, শিক্ষক হত্যা, যুবসমাজকে ধ্বংসের জন্য অপসংস্কৃতি ও সর্বগ্রাসী নেশা ও পর্নগ্রাফি ছড়িয়ে দিয়ে দেশ ও সমাজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়েছে। শাসক শ্রেণির এ সকল শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে থেমে নেই জনগণের আন্দোলন। শিল্পাঞ্চলে মজুরি বৃদ্ধি ও শ্রমিকহত্যা-নির্যাতন বিরোধী ধারাবাহিক শ্রমিক বিক্ষোভ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বর্ধিত ফি ও প্রশাসনের অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গড়ে উঠছে ছাত্র আন্দোলন। বিকশিত হচ্ছে জাতীয় স¤পদ রক্ষার আন্দোলন। ক্ষুদ্র জাতিসত্তার উপর দমন নিপীড়ন ও সাম্রাজ্যবাদীদের স্বার্থে ভুমি দখলের বিরুদ্ধেও চলছে গণপ্রতিরোধ। আন্তঃসাম্রাজ্যবাদী দ্ব›দ্ব তীব্র হওয়ায় সাম্রাজ্যাবাদের মুখোশ জনগণের সামনে উন্মোচিত হচ্ছে। তাই শাসক শ্রেণির ভ‚য়া স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বিপরীতে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের শর্ত তৈরী হচ্ছে। শিক্ষার আন্দোলন জাতীয় সমস্যারই অংশ। তাই রাষ্ট্র ব্যাবস্থার মৌলিক পরিবর্তন ব্যতিরেকে শিক্ষাসংকট দূর করা সম্ভব নয়। প্রচলিত রাষ্ট্রব্যবস্থা শ্রমিক,কৃষক ও জনতার স্বার্থবিরোধী। তাই এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় আপামর জনতার শিক্ষার দাবী বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই সকল সংকট দূরীভুত করতে শ্রমিক কৃষক মেহেনতি জনতার সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সফল করে তুলতে হবে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D