টেমস নদীর পাড় থেকে কেউ কি সুতা টানে?

প্রকাশিত: ১২:১৪ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ৬, ২০১৮

টেমস নদীর পাড় থেকে কেউ কি সুতা টানে?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির একেকজন একেক সময় একেক কথা বলেন। বিএনপি কে চালায়? এক দলে এত কথা কেন? টেমস নদীর পাড় থেকে কেউ কি সুতা টানে?

বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমার সন্দেহ মাঝে-মধ্যে আওয়ামী লীগ কী সত্যি দেশ চালাচ্ছে? অ্যাজ এ পলিটিক্যাল আওয়ামী লীগ কী দেশ চালাচ্ছে? না হয় কে চালাচ্ছে?’ মির্জা ফখরুল ইসলামের এই প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ চালাচ্ছে বৈধ সরকার। এখানে কোন অজানা-নেপথ্য শক্তি আবিষ্কার করেছে, সেই শক্তিটা আমরা জানতে চাই। দেশ অস্থির-অশান্তি তৈরির কত পাঁয়তারা বিএনপি করবে? তিনি বলেন, এই দলটি (বিএনপি) কে চালাচ্ছে? এক দলে এত রূপ কেন? টেমস নদীর পাড় থেকে কেউ কি সুতা টানে?

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের তিনজন সাংসদকে দুদক তলব করেছে। এটাও কি সরকারের হস্তক্ষেপ? আওয়ামী লীগের এক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এসেছে। মন্ত্রী-সাংসদেরা দুদকের আওতায় এলে বিএনপি কেন অসুবিধা মনে করছে? তিনি আরও বলেন, বিএনপি দুর্নীতিবাজদের জায়গা দিতে সাত ধারা তুলে দিয়েছে। তবুও কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়ার আগ পর্যন্ত কাউকে দুর্নীতিবাজ বলা উচিত না। বিএনপি নেতাদের বিষয়ে অভিযোগ এসেছে, দুদক খতিয়ে দেখবে আসলে তাঁদের উদ্দেশ্য কী ছিল।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের আগে কেউ যেন অরাজকতা-অশান্তি তৈরি করতে না পারে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে। দেশে-বিদেশে বৈঠক করে চক্রান্ত করা হচ্ছে। অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় অগ্রসর হতে হবে। দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। দায়িত্বশীল পদে থেকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করা যাবে না।

এ সময় রংপুরের আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা রথিশ চন্দ্র ভৌমিকের বিষয়টি সামনে আনেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখানে প্রথমে অন্য কিছু ধারণা করা হয়েছিল। পরে জানা গেল ঘটনা অন্য। তাই এসব ঘটনা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট, কোনো বিষয়ে না জেনে মন্তব্য করা যাবে না।

আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির মতিবিনিময় সভায় নারীদের উপস্থিতি না দেখে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সব জায়গায় নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। অথচ এখানে কোনো নারী নেই। তখন উপকমিটির নেতারা বলেন, উপকমিটিতে নারীরা আছেন—তবে অনেকে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হতে পারেননি। তখন ওবায়দুল কাদের বলেন, নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। কারণ আগামী নির্বাচনে নারী ভোটার আর নতুন ভোটারেরা আওয়ামী লীগকে জেতাবে।

এ ছাড়া আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির কমিটি দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, কেউ যদি দলের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা হয়ে থাকেন, তিনি কোনো পদ নিতে পারবেন না। কেউ অন্য কোথাও কোনো পদধারী হলেও কমিটিতে জায়গা পাবেন না। কারণ একজন একাধিক পদ নিলে চলবে না। এ ছাড়া যারা মাদকাসক্ত, চিহ্নিত অপরাধী এবং যাদের বিরুদ্ধে দলের বিপক্ষে কাজ করার প্রমাণ আছে—এমন ব্যক্তিদের দলের কোনো জায়গায় পদ দেওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপকমিটির চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন এবং সদস্যসচিব হারুনুর রশিদসহ মতবিনিময় সভায় উপকমিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।