বেগম জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে : অলি

প্রকাশিত: ১১:১৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০১৮

বেগম জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে : অলি

‘বেগম জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’ বলে মন্তব্য করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

মঙ্গলবার রাজধানীতে এলডিপির ঢাকা মহানগর (উত্তর) কমিটির সম্মেলনে এসব কথা বলেন কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। অলি আহমদ বলেন, ‘দেশে এখন নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশে খুন-গুম ও দুর্নীতি বেড়ে গেছে উল্লেখ করে অলি বলেন, ‘দেশে উন্নয়ন হলেও মানুষ শান্তিতে নেই। সরকার অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করলেও জনগণের মন জয় করতে পারেনি।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে অলি আহমদ বলেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য আমরাও কাজ করছি।’

তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি বিএনপি ২০ দলীয় ঐক্যজোটের নেতাদের সাথে নিয়ে বেগম জিয়ার মুক্তির জন্য কাজ করবেন। আমরা প্রস্তুত আছি।’

প্রসঙ্গত, অলি আহমদ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে চট্টগ্রামের ষোলশহরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে ছিলেন। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পর নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্নেল পদে উন্নীত হয়ে অবসর নেন। পরে রাজনীতিতে যোগ দেন।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কর্নেল অলি আহমদ বিএনপিতে যোগ দেন। ওই বছরের মার্চে চট্টগ্রাম-১৩ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া) আসনের উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে জেনারেল জিয়ার মন্ত্রিসভায় নিয়োগ পান প্রতিমন্ত্রী হিসেবে। এরপরে একই আসন থেকে আরও চার দফায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন অলি আহমদ। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠদের একজন কর্নেল অলি।

১৯৮৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে দলের সঙ্গে মতভেদ সৃষ্টি হলে ২০০৬ সালের ২৬ অক্টোবর অলি আহমদ বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীকে নিয়ে গঠন করেন বিকল্পধারা। পরে ওখান থেকে বেরিয়ে এলডিপি গঠন করেন তিনি। সেই থেকে নিজের প্রতিষ্ঠিত দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মাঝে ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নবম সংসদ নির্বাচনে এলডিপি থেকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য হন অলি আহমদ। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করে। অলি আহমদকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি করা হলেও ২০১২ সালে সেখান থেকে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়।

এলডিপির সারা দেশে খুব বেশি জনসমর্থন না থাকলেও অলি আহমদের এলাকা চট্টগ্রাম বিভাগে দলের কিছুটা প্রভাব আছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই এলাকা থেকেই নিজেদের বেশির ভাগ প্রার্থী দাঁড় করানোর চিন্তা আছে বলে জানা গেছে।

তবে মাঝে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল অলি আহমদ বিএনপিতে ফিরে যাচ্ছেন। পরে সেই গুঞ্জন তিথিয়ে আসে। কর্নেল অলির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেন না। আপাতত তার বিএনপিতে ফেরার সম্ভাবনা কম বলে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট