২৮শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:২৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১১, ২০১৭
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় এখনো কিছুই জানে না বলে জানিয়েছেন, আইনমন্ত্রী অনিসুল হক।
একমাসেরও বেশি সময় বিদেশে ছুটি কাটানোর পর শুক্রবার রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এমন খবরের ভিত্তিতে আইনমন্ত্রী একথা বলেন।
এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের খবর দিয়েছে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভি।
আইনমন্ত্রী বলেন, তিনি তার (প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা) ছুটির মেয়াদ বাড়াননি এখন থেকে তিনি অনুপস্থিত থাকবেন।
তবে তিনি কবে দেশে ফিরবেন কিংবা আদৌ দেশে ফিরবেন কি না এসব বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে রাতে আইনন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে জানতে চাওয়া হয়- ছুটির মেয়াদ শেষে প্রধান বিচারপতি দেশে না ফেরায় পরবর্তী করণীয় কি, এর জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে সংবিধানে যা লেখা আছে সে অনুযায়ী করণীয় ঠিক করা হবে।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার (এস কে সিনহা) ছুটি শুক্রবার শেষ হওয়ার প্রেক্ষাপটে শনিবার থেকে তিনি অনুপস্থিত হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী বলেন, সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ বলা আছে অনুপস্থিত থাকলে কি হবে। এখন সেই ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চলবে। তিনি বলেন, দায়িত্বরত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রধান বিচারপতির পদ শূন্য হলে বা অনুপস্থিতি, অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে প্রধান বিচারপতি তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলে রাষ্ট্রপতির কাছে সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হলে ক্ষেত্রমত অন্য কোনো ব্যক্তি অনুরূপ পদে যোগদান না করা পর্যন্ত কিংবা প্রধান বিচারপতি স্বীয় কার্যভার পুনরায় গ্রহণ না করা পর্যন্ত আপিল বিভাগের অন্যান্য বিচারকের মধ্যে যিনি কর্মে প্রবীণতম, তিনি অনুরূপ কার্যভার পালন করবেন।
এদিকে ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা শুক্রবার সিঙ্গাপুর থেকে কানাডা গেছেন বলে তার ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।
ওই সূত্রটি জানায়, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে গত সোমবার রাতে সিঙ্গাপুরে পৌঁছান। শুক্রবার সিঙ্গাপুর থেকে তিনি কানাডার উদ্দেশে রওনা হন। কানাডায় প্রধান বিচারপতির ছোট মেয়ে আশা সিনহা রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, প্রধান বিচারপতির ছুটির মেয়াদের শেষ দিন ছিল ১০ নভেম্বর। এর আগে কোনো কোনো গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়, প্রধান বিচারপতি ১৩ নভেম্বর দেশে ফিরছেন। এ জন্য প্রধান বিচারপতির প্রয়োজনীয় প্রটোকল প্রস্তুতের জন্য সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনকে বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেলের দপ্তর থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ওই দপ্তরের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে কিংবা তথ্য দিতে নারাজ।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ১৩ অক্টোবর রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। অস্ট্রেলিয়ায় তিনি বড় মেয়ে সূচনা সিনহার বাসায় ওঠেন।
এর আগে গত ২ অক্টোবর এক মাস ছুটির কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতি, যার মেয়াদ ছিল ১ নভেম্বর পর্যন্ত। ছুটিতে থাকা অবস্থায় প্রধান বিচারপতির ১৩ অক্টোবর বা কাছাকাছি সময়ে বিদেশে যাওয়ার এবং ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে থাকার ইচ্ছা পোষণের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করতে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। গত ১০ অক্টোবর বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে পাঠানো ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় ১২ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ হিসেবে শুক্রবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়।
তবে এর আগে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী বলেছিলেন প্রধান বিচারপতির যখন ইচ্ছা তখন দেশে ফিরে এজলাসে বসতে পারেন।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা চান সম্মানজনকভাবে দেশে ফিরে বিচারকাজ পরিচালনার জন্য এজলাসে বসতে এবং তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত ১১ অভিযোগের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে পারবেন।
কিন্তু আপিল বিভাগের বিচারপতিরা আগেই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসে বিচারকাজ পরিচালনায় অপারগতা প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়ায় ওই আশা পূরণের বিষয়টি অনেকটাই সুদূর পরাহত বলে আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলও বিষয়টি বারবার গণমাধ্যমকে বলে আসছিলেন।
গত সোমবার এক প্রতিক্রিয়ায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, আপিল বিভাগের বিচারপতিরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বসে বিচারকার্য করবেন না বলে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া এক বিবৃতিতে আগেই জানানো হয়েছে। এরপরও যদি উনি (প্রধান বিচারপতি) দায়িত্ব নিতে চান তবে তা অবমাননাকর বলেই মনে করি।
ইতোমধ্যে সরকার ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের সেই পুরো রায়ের রিভিউ আবেদনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন আইনমন্ত্রী।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের পর থেকে সরকারের শাসন বিভাগের সাথে বিচার বিভাগের টানা পোড়েন শুরু হয়। আইনজীবী সমিতির নেতারা এসময় অভিযোগ করে বলেছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D