১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১, ২০২৫
সিলেট ও সুনামগঞ্জে ৭ মাস যাবত বন্ধ রয়েছে ৫টি সীমান্ত হাট (বর্ডার হাট)। সীমান্ত হাটগুলোকে কেন্দ্র করে একসময় ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত থাকলেও এখন সেইসব স্থানে কেবল শুন শান নীরবতা। পাশাপাশি আর্থিক অভাব অনটনও উল্লেখযোগ্য। ৫ আগষ্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে সীমান্ত হাটগুলো একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়ে।
সিলেট জেলায় মোট ৩টি সীমান্ত হাট চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২৩ সালে। এর মধ্যে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে একটি, কানাইঘাট উপজেলার সনাতনপুঞ্জি এলাকায় এবং বিয়ানীবাজারের মুড়িয়ায় অপর সীমান্ত হাট চালু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ৬ মে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে প্রতিষ্টিত হয় জেলার প্রথম সীমান্ত হাট। যে হাট এখন বন্ধ রয়েছে। বাকী দুটি এখনও অধিগ্রহণ জটিলতায় আটকে আছে।
সীমান্তবর্তী এলাকার দুই দেশের জনগণের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সহজলভ্য করার মাধ্যমে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন সাধন করার জন্য দেশের সীমান্ত অঞ্চলগুলোতে বর্ডার হাট চালু করা হয়।
এদিকে সুনামগঞ্জ জেলায় সীমান্ত হাট রয়েছে চারটি। ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল সদর উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ডলুরা এলাকায় জেলার প্রথম সীমান্ত হাট চালু হয়। দ্বিতীয় সীমান্ত হাট চালু হয় ২০২৩ সালের ১২ মে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বোগলাবাজার ইউনিয়নের বাগানবাড়ি ও ভারতের রিংকু এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে। একই বছরে জেলার তাহিরপুর উপজেলায় উদ্বোধন হয় আরও দুটি সীমান্ত হাট। ২০২৩ সালের ২৪ মে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ ব্যবস্থাপনা সুনামগঞ্জের জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়ের গড় ও ভারতের পশ্চিম হিল সীমান্তে ‘সায়দাবাদ বর্ডার হাট’ নামে চালু হয় জেলার তৃতীয় সীমান্ত হাট ও দেশের ১৪তম বর্ডার হাট। একই বছরে জেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের শাহিদাবাদ ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের নালিকাটা নামক স্থানে আরও একটি বর্ডার হাট উদ্বোধন করা হয়। এ নিয়ে জেলায় রয়েছে মোট ৪টি বর্ডার হাট। হাটগুলোতে সকাল থেকে দু’দেশের মানুষের মধ্যে ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যেতো।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাটগুলো বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন হাটের কার্ডধারী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। স্ব স্ব উপজেলার সীমান্ত হাটটি অবিলম্বে চালু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে, তাহিরপুরের সীমান্ত হাটের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, উপজেলার শাহিদাবাদ-নলিকাটা সীমান্ত হাট গত আগস্টে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর থেকে বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে বর্ডার হাটের ব্যবসায়ীরা সবাই বেকার হয়ে পড়েছেন এবং তারা কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
একই অবস্থা উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের শাহিদাবাদ এবং ভারতের মেঘালয় ওয়েস্ট খাসি হিলসের ঘোমাঘাট সংলগ্ন নলিকাটা এলাকায় সীমান্তের জিরো লাইন ঘেঁষে শাহিদাবাদ-নলিকাটা বর্ডার হাটের। ক্রেতা-বিক্রেতা বিহীন হাট এলাকায় বিরাজ করছে শুন শান নীরবতা।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্যিক প্রসারের লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে বর্ডার হাট নির্মাণের একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ৭৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং প্রস্তের এই বর্ডার হাটের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া ও উভয় দিকে দুটি গেট রয়েছে। বর্ডার হাটের ৫ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে থাকা জনগণ এই হাটে পণ্য কেনাবেচা করতে পারেন। পাঁচ কিলোমিটারের বাইরের লোকজনকে হাটে প্রবেশ ও কেনাকাটা করতে বর্ডার হাট পরিচালনা কমিটির অনুমতি নিতে হয়। প্রতিটি হাট বসবে সপ্তাহের একদিন। হাটে নির্দিষ্ট কার্ডধারী ছাড়া অন্য কেউ কেনাকাটা করতে পারেন না। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে পর্যটক হিসেবে কেনাকাটা করার সুযোগ রয়েছে। হাটে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের জন্য ২৫টি করে দোকান বরাদ্দ এবং উভয় দেশের ৫৪০ জন করে কার্ডধারী ক্রেতা থাকবেন। কোনো ক্রেতা ২০০ মার্কিন ডলারের বেশি দামের পণ্য কেনাকাটা করতে পারেন না। এ ছাড়া ২০০ ডলার অর্থে এককভাবে কোনো পণ্য কেনা যেত না, পাঁচটি পণ্য কিনতে হতো।
শাহিদাবাদ-নলিকাটা বর্ডার হাটের কার্ডধারী ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছয় মাস ধরে বর্ডার হাট বন্ধ থাকার কারণে তারা পরিবার-পরিজন নিয়ে অসুবিধায় রয়েছেন। হাটটি দ্রুত চালু করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন জানান, হাটটি চালু থাকা অবস্থায় সীমান্তের ওপারের (ভারত) বাসিন্দাদের কাছে বাংলাদেশের প্লাস্টিক পণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছিল। প্রতি হাটবারে বাংলাদেশের অনেক কোম্পানির মালপত্র হাটে উপচে পড়ত। বিকেল ৪টা বাজার আগেই সব প্লাস্টিক পণ্য বিক্রি করে ফেলতেন ব্যবসায়ীরা।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও শাহিদাবাদ-নলিকাটা বর্ডার হাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. আবুল হাসেম জানান, এটি দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বিষয়। বর্ডার হাটটি কবে চালু হবে- এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই। হাটটি চালুর বিষয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
OFFICE : SHUVECHCHA-191
MIAH FAZIL CHIST R/A
AMBAKHANA WEST
SYLHET-3100
(Beside Miah Fazil Chist Jame Masjid & opposite to Rainbow Guest House).
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D