এক সপ্তাহের জন্য দেশে এসে না ফেরার দেশে প্রবাসী সোহেল, স্ত্রী-মেয়ে হাসপাতালে

প্রকাশিত: ২:৪০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২৫

এক সপ্তাহের জন্য দেশে এসে না ফেরার দেশে প্রবাসী সোহেল, স্ত্রী-মেয়ে হাসপাতালে


এক সপ্তাহের জন্য দুবাই থেকে দেশে এসেছিলেন সোহেল ভূঁইয়া (৩৮)। আগামি ৬ ফেব্রুয়ারি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) প্রবাস থেকে ফেরার তিন দিনের মাথায় স্ত্রী, চার মেয়ে ও দুই শ্যালিকাসহ স্বজনদের নিয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারতে আসার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ওসমানীনগর উপজেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। একই দুর্ঘটনায় মারা গেছেন সোহেলের দুই শ্যালিকা ও এক ভাগনে। নিহত সোহেল ভূঁইয়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মোগড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।

নিহত বাকি তিনজন হলেন ঢাকার ডেমরা আশুলিয়া এলাকার সায়মা আক্তার ইতি (৩৫), তার ছেলে আয়ান (৬) ও বোন শামীমা ইয়াসমিন (৩৮)। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে মারা যান দুজন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও দুজন মারা যান।

নিহত সোহেলের ভায়রা ভাই আলম ভূঁইয়া জানান, গত শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দুবাই থেকে দেশে ফেরেন সোহেল ভূঁইয়া। ৬ ফেব্রুয়ারি ফের প্রবাস যাওয়ার কথা ছিল তার। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা থেকে স্ত্রী, চার শিশু মেয়ে ও স্বজনদের নিয়ে একটি প্রাইভেটকার ও একটি হাইয়েচ গাড়ি নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিলেন। রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রাইভেটকারটি সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার উনিশ মাইল এলাকায় পৌঁছালে সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া পাথরবোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা সবাই গুরুতর আহত হন।

স্থানীয়রা আহতদের ওসমানীনগরের প্যারাডাইস হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সায়মা আক্তার ও শিশু আয়ানকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত শামীমা ইয়াসমিন ও সোহেল ভূঁইয়াকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদেরও মৃত ঘোষণা করেন।

আলম ভূঁইয়া আরও জানান, সোহেলের চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে হাইয়েচ গাড়িতে ছিলেন। আর দুজন ছিলেন প্রাইভেটকারে। ওই গাড়িতে সোহেলের স্ত্রী-দুই মেয়ে, শ্যালিকা শামীমা ইয়াসমিন (৩৮), সায়মা আক্তার ইতি (৩৫), ইতির ছেলে আয়ান (৬) ও মেয়ে শিশু নুরে জান্নাত ছিলেন। দুর্ঘটনায় চারজন মারা গেছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সোহেলের স্ত্রী ও মেয়েসহ তিনজন।

সিলেটের শেরপুর হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলম বাদশা বলেন, নিহত মা-ছেলের মরদেহ ওসমানীনগরের একটি হাসপাতালে রয়েছে। বাকি দুজনের মরদেহ রয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। ঘটনাস্থল থেকে প্রাইভেটকার ও ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ট্রাকচালক পালিয়ে গেছেন।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, আহতদের মধ্যে একজন নারীর অবস্থা গুরুতর। আহত দুই শিশুর অবস্থাও গুরুতর ছিল। তবে তারা এখন শঙ্কামুক্ত।

মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত ছাড়া হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ বক্সের ইনচার্জ পলাশ দাশ।


 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট