বালাগঞ্জে মাঠজুড়ে হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

প্রকাশিত: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২৫

বালাগঞ্জে মাঠজুড়ে হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। লাভের আশায় কৃষকের মুখে এখনই হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, তেল জাতীয় ফসল সরিষার চাষ পদ্ধতি সহজ ও কম খরচে অল্প সময়ে খুবই লাভজনক। কার্তিক-অগ্রাহায়ণ মাসে দুয়েকটি চাষ বা বিনা চাষেই জমিতে ছিটিয়ে সরিষা বীজ বপন করা হয়। বপনের মাত্র ৭৫ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় নদনদী ও হাওর বিধৌত এলাকা হিসাবে পরিচিত বালাগঞ্জ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। গ্রামের বাড়িগুলো সরিষা স্বর্গবাড়িতে পরিণত হয়েছে। হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সেই সঙ্গে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। শীতের শিশির সিক্ত সরিষা ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। হলুদ মাঠের নয়নাভিরাম দৃশ্যে মুগ্ধ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ।

ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় তেল উৎপাদনকারী এই ফসল বর্তমানে চাহিদা ও লাভজনক ফসলে পরিণত হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে সরিষা চাষে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বাম্পার ফলন হবে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে সরিষার আবাদ দেখা গেছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুল থেকে মধু আহরণে ভিড় করছে মৌমাছি। গাছগুলো বেশ তরতাজা, যা ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলার কলুমপুর গ্রামের কৃষক আংগুর মিয়া জানান, এবার তিনি আরো কয়েকজন মিলে একসাথে ৩০ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। এখন পর্যন্ত ক্ষেতে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি। বরং সুন্দর আর স্বাস্থ্যবান বীজের দেখা পাওয়া যাচ্ছে। এতে ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হতে পারব। তিনি আরো বলেন অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার ভালো ফুল ও কলি আসছে। আশা করি ভালো ফলন হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কৃষিবিদ নুরুজ্জামান জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবারও উপজেলায় সরিষা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে সরকারের পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উপসহকারী জুয়েল আহমদ জানান, তার দায়িত্বপ্রাপ্ত পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে এবার কৃষকদের মাধ্যমে ১০০ একর জমিতে সরিষ চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিকুর রহমান জানান, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ১৫৯ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। এজন্য সরকারীভাবে ও ব্যাক্তিগতভাবে ৬৭০ জন কৃষক সরিষা ফলাচ্ছেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষকদের বিনামূল্যে সার ও বীজ দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবং উপজেলার ভোজ্যতেলের চাহিদা পূরণ করে কৃষকরা বিক্রি করে সাবলম্বী হতে পারবেন।


 

সর্বমোট পাঠক


বাংলাভাষায় পুর্নাঙ্গ ভ্রমণের ওয়েবসাইট