লামাপাড়া প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফয়সল, সম্পাদক শহিদ

প্রকাশিত: ৯:০২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৭, ২০২৫

লামাপাড়া প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফয়সল, সম্পাদক শহিদ

এম এ মতিন, গোয়াইনঘাটঃ স্বদেশের উপকারে নাই যার মন, কে বলে মানুষ তারে? পশু সেইজন’—স্কুলজীবনে বাংলা দ্বিতীয় পত্রে সম্ভবত আমাদের সবাইকেই বাক্যটির ভাবসম্প্রসারণ করতে হয়েছে। তারপর আছে, ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি’, ‘নানান দেশের নানান ভাষা, বিনে স্বদেশি ভাষা পুরে কি আশা?’ আছে সংস্কৃত শ্লোক: ‘জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী’, অর্থাৎ জননী ও জন্মভূমি স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। পাঠ্যপুস্তক এভাবেই আমাদের দেশপ্রেমের শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।

দেশের বাইরে আসার পর দেশপ্রেম বেড়ে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ আছে। প্রথমত, একটি উন্নত দেশের তুলনায় নিজের দেশ যে কতটা পিছিয়ে আছে, তার লক্ষণগুলো পরিষ্কার ফুটে ওঠে। ভাঙা রাস্তার ধুলাবালু, সর্বত্র ছড়ানো-ছিটানো ময়লা, বাতাসের ধোঁয়া, পরিবহনের জীর্ণ দশা, দখল হয়ে যাওয়া নদীপাড়, বর্জ্য পদার্থে ভরা নদীর জল—এ রকম ভৌত পরিবেশ ছাড়াও আরও মনে পড়ে অফিসে, আদালতে, বিদ্যালয়ে, হাসপাতালে ঘুষ ও দুর্নীতির কথা। উন্নত দেশটির সবকিছুর প্রতি যখন তীব্র আকর্ষণ সৃষ্টি হয়, তখন মনে হয়, ‘আহা! আমার দেশটাও যদি এ রকম হতো!’ আমাদের দেশে আমাদের চারপাশে অনেক গরিব মানুষের বসবাস, আত্মীয়স্বজনের মধ্যেও অনেকে গরিব থাকেন। তাঁদের জন্যও মনটা খুব কাঁদে। এ জন্যই মানুষ শিকড়ের টান সহজে ছিন্ন করতে পারে না।

আবার ‘বি আ রোমান হোয়েন ইউ আর ইন রোম’, অর্থাৎ তোমার বসবাস যখন রোমে, তোমারও উচিত একজন রোমান হয়ে ওঠা। কথাটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ। যে দেশে আমার অবস্থান, সেই দেশের আইন, জাতীয় চেতনা, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত—এমনকি সমাজের রীতিনীতি, প্রথা, মূল্যবোধ ধারণ করা দরকার, কিন্তু স্বদেশ-চেতনা ও জন্মভূমির প্রতি ভালোবাসা বিসর্জন দিয়ে নয়। এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য: ‘আমি দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে ভালোবাসি।’ বস্তুত, ভারতীয় উপমহাদেশে রবীন্দ্রনাথের মতো, আন্তর্জাতিকতাবাদের কথা, প্রাচ্য-প্রতীচ্যের সেতুবন্ধের ও জ্ঞান-বিজ্ঞান আদান-প্রদানের কথা এমন উচ্চ কণ্ঠে আর কেউ বলেননি। দেশ- সমাজের উন্নয়নের স্বার্থে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী লামাপাড়া প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদ। ২০২০ সালে প্রতিষ্টিত লামাপাড়া প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদ সমাজিক সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। সংগঠনটি প্রতিষ্টালগ্ন থেকে অসহায় শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, কলমসহ পড়াশোনার খরচ বহন করে আসছে। পাশাপাশি অসহায় মানুষের চিকিৎসা সেবায়ও সংগঠনের অবদান কম নয়।

গত ৩ জানুয়ারী দ্বি-বার্ষিক কমিটি গঠনের লক্ষে লামাপাড়া প্রবাসী সমাজ কল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা মন্ডলীরা ভার্চুয়ালি এক মিটিং এ যুক্ত হন। ভার্চুয়ালি মিটিংয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেসব উপদেষ্টারা অংশগ্রহণ করেন তাদের মধ্যে দুবাই থেকে নুর উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিলাল উদ্দিন, দুবাই থেকে মানিক মিয়া, রুফন মিয়া, জইন উদ্দিন, কুয়েত থেকে তাজ উদ্দিন, সৌদি আরব থেকে ফারুক আহমদ, ময়বুল মিয়া, ওমান থেকে মকবুল আলী, সৌদি আরব থেকে কুতুব উদ্দিন প্রমুখ।

উপদেষ্টা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে সৌদি আরব প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়সল আহমদকে সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দুবাই প্রবাসী শহিদ আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে দ্বি-বার্ষিক কমিটি ঘোষণা করেন।

কমিটির অন্যান্য দায়িত্বশীলরা হলেন স্পেন প্রবাসী ফারুক আহমদ সহ-সভাপতি, দুবাই প্রবাসী ফেরুজ মিয়া সহসভাপতি, হারুন মিয়া সহভাপতি, খাইরুজ্জামান- সহ-সাধারন সম্পাদক, আলী হোসেন-লন্ডন, ছায়েফ আহমদ- কুয়েত, লুকেছ আহমদ- দুবাই জাকির আহমদ – সৌদি আরব, সাংগঠনিক সম্পাদক, পিয়ার উদ্দিন – দুবাই সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, আলী আহমদ (২) – কাতার, জুনেদ আহমদ – দুবাই প্রচার সম্পাদক, পাভেল আহমদ – কাতার, সহ-প্রচার সম্পাদক, জসীম উদ্দিন – সৌদি আরব ধর্ম সম্পাদক, হাঃ রাসেল আহমদ – সৌদি আরব সহ-ধর্ম সম্পাদক, ফখরুল আহমদ-লন্ডন শ্রম ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, বাচ্চু মিয়া- ওমান সহ- শ্রম ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক, নূর হোসেন-সৌদি আরব আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, আফজল হোসেন-সৌদি আরব সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, রুবেল আহমদ-সৌদি আরব অর্থ সম্পাধক, আরমিন – মালয়েশিয়া সহ-অর্থ সম্পাদক, তারেক আহমদ – সৌদি আরব ক্রীড়া সম্পাদক, হোসেহ আহমদ (ফকির) – কাতার সহ-ক্রীড়া সম্পাদক, বদরুল আহমদ – সৌদি আরব ও কমিটিতে আরো ৬৭ জন প্রবাসীকে কার্যকরী সদস্য করা হয়েছে।