৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:৪৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৫, ২০২৪
সালেহ আহমদ (স’লিপক) : বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ী শ্রীমঙ্গল উপজেলার প্রথম শ্রেণীর সেবাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান পৌরসভার মেয়র-কাউন্সিলরদের পৃথক সময়ে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
বৃহত্তর সিলেটের সবচেয়ে সুনাম অর্জিত পৌরসভাগুলোর অন্যতম চায়ের রাজধানী খ্যাত পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল পৌরসভা। এ পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণের পর এলোমেলোভাবে নাগরিকরা ঘুরছে বিভিন্ন কাউন্সিলর ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের বারান্দায়।
যে সেবা নাগরিকরা একসময় দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পেয়ে যেতো, আজ তা ঘুরতে ঘুরতে সপ্তাহ থেকে সপ্তাহ পার হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন!
চাহিদাভিত্তিক প্রয়োজনীয় সময়ে সেবা না পেয়ে কেউ কেউ অসহায়ের মত পৌর কমপ্লেক্স থেকে পৌরসভার সাবেক মেয়র, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরদের অফিস, বাসা-বাড়ি ও দোকানপাটে পর্যন্ত ধর্না দিচ্ছেন সেবা পেতে। সেবা প্রত্যাশীদের অনেকেই ক্যামেরার সামনে পরিচয় দিয়ে কথা বলতে ভীতসন্ত্রস্ত। কেউ কেউ দাবি করছে ক্যামেরার সামনে মুখ খুললে আর কখনো সেবা পাওয়ার সম্ভাবনাই নেই!
অনেক সেবাপ্রার্থীরা সাবেক মেয়র ও কাউন্সিলরদের বাসা-বাড়ি এবং প্রতিষ্ঠানের দিকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমন সেবা প্রত্যাশীদের সাথে কথা বললে তারা অনেকেই ভাগ্যের দোষ দিচ্ছেন। আবার অনেকেই সেবা না পেয়ে বিভিন্ন ধরনের খেদোক্তিও করতে ছাড়েননি।
দেশে শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রবাসের পাসপোর্ট এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কাজকর্ম সম্পাদন করার উদ্দেশ্যে নানা ধরনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করতে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিকত্বের সনদসহ অন্যান্য নাগরিক সেবা অতি জরুরী যা সরকারিভাবে সরকারি কর্মকর্তাদের অজানা নয়। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সেবা সময়মতো না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্টরা। যা অনুসন্ধান সূত্রে ভুক্তভোগীদের থেকে জানা গেছে।
সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। এরমধ্যে শহরের প্রাণিসম্পদ সেক্টরের এক ঔষধ ব্যবসায়ী বলেন, আমি একটি ট্রেড লাইসেন্স করতে গিয়ে প্রথমে ফাইলপত্র জমা দেওয়ার ১৫ দিন পরেও আমার কাজ হয়নি বরং আমার ফাইল হাঁরিয়ে গেছে। পরে নতুন করে ফাইল তৈরি করে দিয়ে আজও আমার কাঙ্খিত কাগজপত্র পাইনি। এতে করে সাধারণ কার্যক্রমের বিঘ্নতা ঘটছে।
খুবই কষ্টকর। ফলে কোন কোন ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লেগে যায়।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কাজী আব্দুল করিম, ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মীর এম এ সালাম, ১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলকাস মিয়া, ২নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল জব্বার আজাদ, সাবেক কাউন্সিলর ৩নং ওয়ার্ডের হানিফ মিয়ার সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তাদের সবার বক্তব্যের মূল যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে, লোকজন আগের মত সেবা নিতে পারছে না বলে তারা আমাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন, আমরা দিতে পারছি না। অপরদিকে যাদের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের নিজস্ব দপ্তর রয়েছে সব মিলিয়ে একজন সেবাগ্রহীতা যথাসময়ে সেবা না পাওয়ায় আমাদের দোকানপাট, বাসা এমনকি রাস্তাঘাটেও আমাদেরকে সাহায্য করতে বলেন। আমরা যতটুকু পারি করার চেষ্টা করি। প্রয়োজনবোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদেরকেও আমরা সহযোগিতা করে যাচ্ছি। তারপরেও প্রতিদিন সেবা প্রত্যাশীরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন দ্রুত সেবা নেওয়ার জন্য, কিন্তু তা হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কর্মকর্তা আবু তালেব এর সাথে কথা বললে, তিনি বলেন- “রাষ্ট্র কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে যে দায়িত্ব প্রদান করেন আমরা সে দায়িত্ব পালন করতে বদ্ধপরিকর। বর্তমানে পৌরসভার কার্যক্রম সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আমাকে সামলাতে হচ্ছে। একদিকে আমার নিজের দপ্তর অন্যদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিদপ্তরগুলো আমাদেরকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খেয়াল রাখতে হচ্ছে। ফলে মাঠ পর্যায়ে মেয়র-কাউন্সিলররা যেভাবে কাজ করেছে সেভাবেই আমাদের জন্য কাজ করাটা কিছুটা সময় সাপেক্ষ। কারণ আমাদের মাঠ পর্যায়ের অনেকের সাথে সরাসরি পরিচয় নেই। একজন লোককে শনাক্ত করতে হলে আমাদেরকে অন্যের দ্বারস্থ হতে হয়। ডকুমেন্টারি তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। কোন প্রকার গ্যাপ রেখে আমরা কাজ করতে পারিনা। যেমন উত্তরাধিকারী সার্টিফিকেট কাউন্সিলররা যেভাবে একজন লোকের পরিচয় জানে আমরা সেটা জানি না। আমাদেরকে এটা নিশ্চিত করতে হয়। প্রয়োজনে সাবেক কাউন্সিলরদের বা পৌরসভার স্টাফদের সহযোগিতা নিতে হয়। তাছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যা তো রয়েছেই। কে কোথা থেকে এসে নাগরিকত্ব সনদ নিচ্ছে এ বিষয়গুলো আমাদেরকে আমাদের দপ্তরে নিশ্চিত করতে হয় যে, সে স্থানীয় কিনা? উত্তরাধিকারী সনদপত্রগুলোতে কারো কোন অধিকার নষ্ট যাতে না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হয়, ইত্যাদি অনেক কারণেই আমাদেরকে বুঝেশুনে নিশ্চিত হয়ে কাজ করার ফলে কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে আপনারা যতটুকু বিলম্বের কথা বলছেন ততটা হচ্ছে না। যদি এমন কোন অভিযোগ কোন নাগরিকের থেকে থাকে তাহলে সেটা আমাদেরকে জানাবেন।”
EDITOR & PUBLISHER :
DR. ARIF AHMED MOMTAZ RIFA
MOBILE : 01715110022
PHONE : 0821 716229
Office : Central Market (1st floor),
Bandar Bazar (Court Point),
Sylhet – 3100, Bangladesh.
E-mail : sylhetsangbad24@gmail.com
Hello : 01710-809595
Design and developed by M-W-D